গাফফার খান চৌধুরী ॥ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী হত্যায় তিন থেকে চার জন জড়িত। যাদের মধ্যে অন্তত তিনজন সরাসরি হত্যায় অংশ নিয়েছিল। হত্যার পর গাড়িতে করে বাড়ি থেকে ল্যাপটপ, বিশাল আকারের টেলিভিশনসহ অন্য মালামাল নিয়ে যায় ঘাতকরা। হত্যাকারীরা যাওয়ার আগে বাড়ির প্রতিটি বের হওয়ার দরজায় তালা লাগিয়ে যায়। তবে গৃহকর্মী আব্দুল আহাদ সরাসরি হত্যাকা-ে অংশ নিয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়। অবশ্য হত্যাকা-ের বিষয়টি তার আগ থেকেই জানা ছিল।
হত্যার সঙ্গে গুলশানে নিহত চৌধুরীর স্ত্রীর একটি ফ্ল্যাট নিয়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার যোগসূত্র থাকতে পারে। ফ্ল্যাটের সূত্রধরে মারামারি পর থেকেই মোবাইল ফোনে গৃহকর্মী আহাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক ছিল। নিচতলার ভাড়াটিয়াদের ব্যবহৃত সিসি ক্যামেরায় কোন ফুটেজ পাওয়া যায়নি। সার্বিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন ঘটনার সময় বাড়িতে থাকা নিহতের ছেলে ফুয়াদ চৌধুরী। আহাদ গ্রেফতার হলেই সব রহস্যের কিনারা হবে বলে মনে করেছেন নিহতের পরিবার ও তদন্ত সংস্থা কাফরুল থানা পুলিশ।
গত ৬ অক্টোবর কাফরুল থানাধীন মহাখালী ডিওএইচএসের ৪ নম্বর সড়কের ১৪৮ নম্বর বাড়িতে নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হন ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী (৭৭)। তিনি ১৯৯২ সালে অবসরে যান। চারতলা বাড়িটির দোতলায় বাকপ্রতিবন্ধী অবিবাহিত ছেলে ফুয়াদ চৌধুরীকে (৪০) নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। বছর ছয়েক আগে স্ত্রী আতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু হয়। বড় ছেলে নাবিদ চৌধুরী (৪৪) প্রায় এক দশক ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। বাড়িতে ঢোকার দুটি গেট। কোন গেটেই নিরাপত্তা প্রহরী ছিল না। গৃহকর্মী হিসেবে মামলার এজাহার নামীয় একমাত্র আসামি আহাদ (৩৫) ও গৃহপরিচারিকা রোজানা ছিল। ওয়াজি আহমেদের ছোট ভাই সামান্য দূরে থাকা মহাখালী ডিওএইচএসেরই ১৯ নম্বর সড়কের ২৬৮ নম্বর বাড়ির মালিক ভাই বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এজাজ চৌধুরী জানান, তাদের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানাধীন ফুলবাড়ি গ্রামে। আর হত্যা মামলার একমাত্র এজাহার নামীয় আসামি আহাদের বাড়িও একই জেলার বিশ্বনাথে। আব্দুল হক নামে একজন ওয়াজির বাড়িতে দশবছর ছিল। ওয়াজি তাকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেন। ওয়াজি যাওয়ার পর সে তার খালাত ভাই আহাদকে ওই বাড়িতে দিয়ে যায়। বেশ কিছু দিন কাজ করার পর চলে গিয়েছিল, আহাদ প্রায় দুই মাস ধরে আবার কাজে আসে।
হত্যাকা-টি পরিকল্পিত দাবি করে তিনি বলেন, হত্যাকা-ের পেছনে বিশেষ কোন রহস্য থাকতে পারে। সেই রহস্য আড়াল করতেই হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে চুরির নাটক সাজিয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: