স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক শিক্ষার্থীর জঙ্গীবাদে জড়িত থাকার তথ্য বেরিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে যৌথভাবে বৈঠকে বসছে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বৈঠক হবে। বৈঠকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও স্কলাসটিকাসহ কয়েকটি ইংরেজী মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হচ্ছে।
ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের মহাপরিচালকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে এসে তাকে সভার বিষয়ে অবহিত করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ছাড়াও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। সভার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও শিক্ষামন্ত্রী সন্ধ্যায় বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মিলেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা সফল করব। বর্তমানে দেশে ৯৫টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেরাও সাম্প্রতিক সময়ে বাড়ি পালিয়ে জঙ্গীবাদে ঝুঁকছে বলে তথ্য আসায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সরকার ও অভিভাবক মহলে। গত ১ জুলাই গুলশানের জঙ্গী হামলার পর সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করে আইএস। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হন। এই ছয়জনের মধ্যে চারজনই বিভিন্ন ব্যয়বহুল ইংরেজী মাধ্যমের স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। তাদের দুইজন ঢাকার নামী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিল, একজন ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর আগে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় যে আটজনের সাজার আদেশ হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজনই নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী ছিল। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে নিষিদ্ধ সংগঠনের হিযবুত তাহরীরের বইপত্র পায়। জঙ্গীবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও করা হয়। ইতোমধ্যেই কোন তরুণ বাড়ি পালিয়ে জঙ্গী দলে ভিড়েছে কি নাÑ তা জানতে পরিবারের কাছে তথ্য চেয়েছে সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বলা হয়েছে, কোন শিক্ষার্থী টানা দশ দিন অনুপস্থিত থাকলেই সে তথ্য সরকারকে জানাতে হবে।