ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

শেরপুরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি

মোঃ সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ২৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৩:২৪, ২৫ জুন ২০২৫

শেরপুরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি

ছবি: সংগৃহীত

একসময় শেরপুরের গ্রামীণ জীবনযাত্রার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিল গরুর গাড়ি। কৃষিপণ্য পরিবহন, কাঠ বা বাঁশ বহন, এমনকি মানুষের যাতায়াতেও এই বাহনের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে চাহিদা, বদলে গেছে পরিবহন মাধ্যম। এখন আর আগের মতো গরুর গাড়ির দেখা মেলে না। দ্রুতগতির যানবাহন, পাকা রাস্তা আর আধুনিক যন্ত্রপাতির ভিড়ে গরুর গাড়ি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

শ্রীবরদী উপজেলার বিলভরট গ্রামের কৃষক হুমায়ুন মিয়া বলেন, আমি এক সময় দুইটা গরুর গাড়ি চালাতাম। ধান-চাল বাজারে নিয়ে যেতাম। এখন তো ট্রলি, পিকআপ সবই আছে। গরু পোষা কষ্টকর, লাভও নেই। তাই বন্ধ করে দিয়েছি।

ঝিনাইগাতির আয়নাপুর গ্রামের ইউসুফ আলী জানান, এই গরুর গাড়ির ওপর ভর করেই চলত আমার সংসার। কিন্তু এখন আর কেউ গরুর গাড়ি ভাড়া নিতে চায় না। চালাতে কষ্ট, রাস্তাও ভালো না। গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি।

শ্রীবরদীর তেতুলিয়া গ্রামের মোঃ সজিব মিয়া বলেন, এই বাহন শুধু কাজের জিনিস ছিল না, এটা আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ ছিল। এখনকার ছেলেমেয়েরা গরুর গাড়ির নামই শোনেনি। এসব ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ জানান, গরুr গাড়ির ব্যবহার প্রায় শূন্য। যান্ত্রিক বাহনের প্রসার এবং গরু পোষার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এটি আর টিকে থাকছে না। তবে মেলায় বা প্রদর্শনীতে এসব সংরক্ষণ করা সম্ভব।

বর্তমানে শেরপুরে হাতে গোনা কয়েকটি গরুর গাড়িই টিকে আছে। তবে এগুলোও মূলত শখের বসে বা ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য রাখা হয়েছে। যান্ত্রিক জীবনের ছোঁয়ায় এক সময়ের প্রয়োজনীয় এই বাহনটি এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে যাচ্ছে।

রাকিব

×