
টানা কয়েকদিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো মধ্যপ্রাচ্য। পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের জবাবে তীব্র প্রতিশোধমূলক হামলায় জবাব দিয়েছে ইরান। এই উত্তেজনার মধ্যেই ইরান হুমকি দিয়েছে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার।
এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বিপুল হারে বেড়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক এড হির্স আল জাজিরাকে বলেন, “এই প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়। অর্থাৎ বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশই হরমুজ প্রণালী হয়ে যায়।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই অঞ্চল ঘিরে সহজ কোনো বিকল্প রুট নেই—বিশেষ করে সৌদি আরব, কুয়েত ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য।”
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, হরমুজ প্রণালী যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলার বা তারও বেশি হতে পারে। এর প্রভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বের প্রতিটি দেশে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোতে।
এড হির্স মনে করেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা হলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সরাসরি অজুহাত হতে পারে। তিনি বলেন, “তেল সরবরাহ বন্ধ মানে বিশ্বের অর্থনীতির ওপর সরাসরি আক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের ঝুঁকি খুবই বাস্তব।”
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির সংসদের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য এসমাইল কসারি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি শুধু ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নয়, বিশ্ব অর্থনীতি, তেল বাজার এবং ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সব কিছুকেই প্রভাবিত করবে।
মিমিয়া