
ছবি: সংগৃহীত।
গত বছরের জুলাইয়ে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বেশ টালমাটাল। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সীমান্ত ইস্যুকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে নানা মতপার্থক্য ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। এমনকি এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনাটি ঘটে ৮ জুন, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে। এখানে কবিগুরুর সাহিত্যকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গাছারি বাড়িতে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতীয় মিডিয়াসহ রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
১২ জুন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণদীর জয়সওয়াল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “এটি শুধু একটি স্থাপনার ওপর হামলা নয়, বরং এটি রবীন্দ্রনাথের অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাবনার ওপর একটি পরিকল্পিত আঘাত। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, যেন দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”
এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে পাঠানো এক চিঠিতে লেখেন, “এই হামলা শুধু দুঃখজনক নয়, বরং গোটা বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর এক নির্মম আঘাত। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে যেভাবে তুলে ধরেছেন, তা কোনো জাতিই ভুলে যেতে পারে না। এমন হামলা তার উত্তরসূরিদের গায়ে চড়াও হওয়া বলেই মনে করি।”
মমতা আরও বলেন, “এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এমন জঘন্য ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিবাদ ও সচেতনতা তৈরি হওয়া প্রয়োজন।”
বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অবস্থানের জবাব না দিলেও, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে—তদন্ত চলছে, এবং দোষীদের সনাক্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলা সাহিত্যের প্রতীক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনায় এই হামলার ঘটনা শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নয়, সাংস্কৃতিক সম্পর্কেও চিড় ধরাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
নুসরাত