ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

গবেষণা প্রতিবেদন

মায়ের দুধ শিশুর এলার্জি কমায়

প্রকাশিত: ২২:৩২, ৭ জানুয়ারি ২০২১

মায়ের দুধ শিশুর এলার্জি কমায়

মায়ের বুকের দুধ শিশুর এলার্জি সমস্যা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। যে সব খাবারের ফলে শিশুর শরীরে এলার্জি দেখা দেয় বা শরীরে এলার্জির পরিমাণে বেড়ে যায়, সে সব খাবারজনিত এলার্জি দূর করতে মায়ের দুধের বিকল্প নেই। মায়ের বুকের দুধ গরুর দুধের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্যকর। সুইডেনভিত্তিক নতুন একটি গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনির্ভাসিটির ফিংবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের চর্ম ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ড. পিটার লিও বলেন, ‘মায়েদের ডায়েট করার সঙ্গে এলার্জি ঝুঁকির কার্যকর প্রমাণ পাওয়া গেছে’। লিও গবেষণায় জড়িত না থাকলেও গবেষণাকর্মটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, যেটি আসলেই অনুপ্রেরণাদায়ক। গবেষণার প্রয়োজনে গবেষক দলটি বাচ্চা জন্মদানের পরপর এবং তার থেকে আরও চার মাস পর অন্তত পাঁচ শ’ সুইডিশ নারীর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। ওই সব নারীর প্রসূতিকালীন ৩৪ সপ্তাহ নিরীক্ষা করার পর দলটি শিশু শরীরে এলার্জিজনিত বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসে। গবেষকরা শিশুর এলার্জি পরীক্ষা করতে টিনজাত দুধ, গরুর দুধ ও মায়েদের বুকের দুধের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য খুঁজে পান। আর সেটি হলো টিনজাত দুধে এলার্জি বেশি হয় এবং মায়ের দুধ খাওয়ার পর শিশু শরীরে এলার্জি সমস্যা অনেকটাই কমে আসে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরশরীরে এলার্জি হয় মূলত দুধ ও ডিম থেকে। গবেষণাকর্মটির সহ-লেখক মিয়া স্ট্রাভিক বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বুকের দুধ গরুর দুধের চেয়ে এলার্জিও জন্য ভাল’। সুইডেনে গুটেনবার্গেও চালমিয়ার্স ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোরজির খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি গবেষক মিয়া আরও বলেন, ‘তবে আমরা দাবি করছি না যে, গরুর দুধের কারণে খাবারজনিত এলার্জি হয়’। এদিকে গবেষণাকর্মটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিশুশরীরে এলার্জিজনিত সমস্যার কারণ অনুসন্ধান করা। অন্যদিকে অন্য সহ-লেখক মালিন বর্মন বলেন, ‘এই গবেষণাকর্মটি পরবর্তী গবেষণায় সহায়তা করতে পারে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, মায়েদের ডায়েটে উচ্চমাত্রার চর্বিযুক্ত খাবার শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে’। নতুন এই গবেষণাটিতে দেখা গেছে, যে সব মা প্রচুর পরিমাণ ফলমূল খান, তাদের এক বছরের সন্তানদের চর্মরোগ (একজিমা) হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস (একজিমা) এমন একটি অবস্থা যা ত্বককে লালচে করে দেয়। এটি সাধারণত শিশুদের হয়ে থাকে। তবে যে কোন বয়সেই এই রোগ হতে পারে। এদিকে লিও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নতুন মায়েদের সতর্ক থাকা উচিত। ডেনভারের ন্যাশনাল জিউস হেলথ বিভাগের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ব্রুস লেন্সার বলেন, ‘তবে এটির পক্ষে কোন প্রমাণ নেই যে, মাতৃত্বকালীন ডায়েট শিশুর জন্য ক্ষতিকর।’ তিনি নবাগত মায়েদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আপনারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফলমূল, সবজি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি জাতীয় পুষ্টিকর ও ভাল খাবার রাখুন।’ তিনি আর বলেন, ‘মায়েদের উচিত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে ডায়েট করা।’ গবেষণাকর্মটি নিউট্রিয়েন্টসের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত হয়েছে। ডেইলি সায়েন্স অবলম্বনে।
×