ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউ ছাড়ার জন্য ব্রিটেনকে দুঃখ করতে হবে

প্রকাশিত: ০৩:২৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ইইউ ছাড়ার জন্য ব্রিটেনকে দুঃখ করতে হবে

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার গত বছরের ব্রেক্সিট ভোটের পর বুধবার এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে বলেছেন, ইউরোপের পালে বাতাস ফিরে এসেছে। ব্রেক্সিট ভোট বিষয়ে তিনি সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেন, ব্রিটেনকে দুঃখ করতে হবে। খবর এএফপির। জাঙ্কার বাৎসরিক স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে সুযোগের পরিসর ধরে রাখার জন্য এবং আগের যে কোন সময়ের চেয়ে সংস্থাকে আরও গভীরভাবে সংহত করতে এর সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিশীলতা ব্যবহারের জন্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান। ব্রিটেন যে ইউরোসেপটিক প্রবণতা বা ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার যে বিরোধী প্রবণতা থেকে ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। তিনি ভাষণে একমাত্র ইইউ প্রেসিডেন্টের সমর্থনে একটি বৃহত্তর ইউরোজোন ও পাসপোর্টমুক্ত শেনজেন অঞ্চলের এক চিত্র তুলে ধরেন। লুক্সেমবার্গের এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী এমন এক ইউরোপের চিত্রও তুলে ধরেন যা সমগ্র বিশ্বে নতুন বাণিজ্যের সূচনা করবে। যদিও তিনি ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের পর দেশটির সঙ্গে এ ধরনের কোন চুক্তি স্বাক্ষর সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেননি। স্ট্যাসবার্গে জাঙ্কার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বলেন, ইউরোপের পালে বাতাস ফিরে আসছে। তিনি মিশ্রিত ইংরেজী, ফরাসী ও জার্মান ভাষায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের এখন একটা সুযোগের পরিসর সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ সুযোগ পরিসর সব সময় উন্মুক্ত থাকবে না। আসুন, এ গতিশীলতাকে আমরা সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাই। আসুন, এ বাতাস আমাদের পালে ধরে রাখি। এ আশ্রয়স্থল ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায় নেয়ার একদিন পর ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ রুমানিয়ায় এক বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য অবশিষ্ট ২৭ দেশের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাঙ্কার তার ৮০ মিনিটের ভাষণ ঠিক শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘ব্রেক্সিট’ শব্দ ব্যবহার করেননি। ইউরোসেপটিকরা পার্লামেন্ট কক্ষে তাকে উপহাস করলে তিনি কেবল বলেন, আমরা ব্রেক্সিটে দুঃখ পাব এবং পেতে হবে আপনাদেরও। এ প্রবীণ রাজনীতিবিদ বলেন, আমরা সম্মুখে এগিয়ে যাব। কারণ, ব্রেক্সিট সবকিছু নয়, ব্রেক্সিটই ইউরোপের ভবিষ্যত নয়। ব্রিটিশ ইউরোসেপটিক নেতা নাইজেল ফ্যারেজ জাঙ্কারের প্রতি সাড়া দিয়ে বলেন, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে আমরা ইউউ ত্যাগ করছি। আপনি ব্রেক্সিট থেকে শিক্ষা নেননি কিছুই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের দফতর থেকে বলা হয়েছে, তিনি জাঙ্কারের ভাষণ দেখেননি। কিন্তু তিনি বলেন, ইইউ অবশ্য এর পরিকল্পনা নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে চাইছে এবং ব্রিটেন চাইছে এক সফলই ইউরোপও সমৃদ্ধ ইউরোপ। ইউরোপ ব্রেক্সিটে সীমিত থাকবে না বলে জাঙ্কার যে উক্তি করেছেন তা নিশ্চিতের জন্য তিনি সময় পাচ্ছেন দুই বছর। ৬২ বছর বয়স্ক জাঙ্কার ইইউয়ের এ ক্ষমতাধর নির্বাহী প্রধান থাকছেন আরও দুই বছর। জাঙ্কারের ভাষণটি ছিল আরও ব্যাপক ইইউ গঠনের আহ্বানে পূর্ণ। বিশেষ করে তার পরামর্শ রয়েছে যে, বুলগেরিয়া। রুমানিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার উচিত হবে শেষ পর্যন্ত শেনজেং জোনের পূর্ণ সদস্য লাভ করা। জাঙ্কার বলেন, ইউরোজোন বর্তমান ১৯ দেশের বাইরে ইতোমধ্যে সম্প্রসারিত হবে। এ সম্প্রসারণ ঘটবে ইইউয়ের চুক্তিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই চুক্তিগুলো বলা হয়েছে, দেশগুলোকে অবশ্য একটিমাত্র মুদ্রা ব্যবস্থায় যোগ দিতে হবে।
×