ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কিডনি রোগীরা যে ১২টি খাবার এড়িয়ে চলবেন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ১০ জুন ২০২৫

কিডনি রোগীরা যে ১২টি খাবার এড়িয়ে চলবেন

ছবি: সংগৃহীত

কিডনি আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্ত পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে শরীরের পানি ও খনিজের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে দেহে বিষাক্ত পদার্থ জমে যেতে পারে, যা নানা জটিল রোগের জন্ম দেয়। কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি, কারণ কিছু খাবার কিডনির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এবং রোগের অগ্রগতি দ্রুততর করে। নিচে এমন ১২টি খাবার উল্লেখ করা হলো, যেগুলো কিডনি রোগীরা এড়িয়ে চলবেন:

১. লবণ বা অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত খাবার
অতিরিক্ত লবণ কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে আরও দুর্বল করে তোলে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, চিপস বা হাই-সোডিয়াম স্যুপ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।

২. প্রোটিনসমৃদ্ধ লাল মাংস
যদিও প্রোটিন প্রয়োজন, তবে অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন (বিশেষ করে গরু বা খাসির মাংস) কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সীমিত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করাই নিরাপদ।

৩. দুগ্ধজাত খাবার
দুধ, দই, পনির—এইসব খাবারে পটাশিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণ বেশি থাকে। কিডনি দুর্বল হলে এসব খনিজ ঠিকমতো ছেঁকে বের করতে পারে না, ফলে রক্তে এদের মাত্রা বেড়ে গিয়ে বিপদ ডেকে আনে।

৪. কলা
যদিও কলা পুষ্টিকর, কিন্তু এতে পটাশিয়াম অনেক বেশি। কিডনি রোগীদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি, না হলে হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে।

৫. আলু ও মিষ্টি আলু
এই দুই ধরনের সবজিতে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম থাকে। অনেক সময় তা সেদ্ধ করে পানিটা ফেলে দিয়ে খেলেও পুরোপুরি নিরাপদ হয় না।

৬. টমেটো
টমেটোতে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, বিশেষ করে টমেটো সস, পেস্ট বা কেচাপ জাতীয় রূপে। যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এগুলো বিপজ্জনক হতে পারে।

৭. শুকনো ফল ও বাদামজাতীয় খাবার
ড্রাই ফ্রুটস যেমন খেজুর, কিশমিশ বা আখরোট, কাজুতে ফসফরাসের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। ফসফরাস কিডনির রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ শরীর থেকে তা বের করতে কিডনিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়।

৮. চকলেট
চকলেটও উচ্চমাত্রার ফসফরাস ও পটাশিয়ামযুক্ত। পাশাপাশি এতে ক্যাফেইনও থাকে, যা শরীর থেকে পানি বের করে দেয়, ফলে ডিহাইড্রেশন ও কিডনি ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

৯. গ্যাসযুক্ত কোমল পানীয় (সোডা)
এইসব পানীয়তে কৃত্রিম ফসফরাস, চিনিসহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে, যা কিডনির জন্য ভয়ংকর হতে পারে। কোল্ড ড্রিংকস কিডনির জটিলতা বাড়াতে পারে।

১০. ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
বার্গার, সসেজ, প্যাকেটজাত নুডলস, বা রেডি টু ইট খাবারে লবণ, ফ্যাট ও কেমিক্যাল সংরক্ষক থাকে, যা কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

১১. আচার বা অতিরিক্ত ঝাল ও টক খাবার
আচারে প্রচুর লবণ ও ভিনেগার থাকে। এগুলো দীর্ঘমেয়াদে কিডনি স্নায়ুতে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

১২. ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও স্যুপ
এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, কৃত্রিম ফ্লেভার, সংরক্ষক ও রাসায়নিক থাকে। এগুলো কিডনি রোগীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এমনকি রোগের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে।

কিডনি রোগীরা প্রচুর পানি খাবেন (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী), স্বল্প লবণযুক্ত ও পটাশিয়াম-ফসফরাস নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ করবেন এবং সর্বদা চিকিৎসকের ডায়েট চার্ট অনুযায়ী চলবেন। কোনো খাবার শুরু করার আগে বা বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ কিডনির অবস্থা অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় পার্থক্য থাকতে পারে।

মুমু ২

×