ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

সব সময় অভিনেতা হতে চেয়েছি : আফরান নিশো

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ৩১ মে ২০১৮

সব সময় অভিনেতা হতে চেয়েছি : আফরান নিশো

বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। চরিত্র নির্ভর অভিনয় করে ইতোমধ্যেই কোটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। নাটক নিয়ে সারা বছরই ব্যস্ততা তার। বহুমাত্রিক চরিত্রে দেখা যায় তাকে। বর্তমানে ভিন্ন কোন চরিত্র মানেই হচ্ছেন আফরান নিশো। একটা গল্পের চরিত্রকে কিভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে হয় তা আফরান নিশোর অভিনয় দেখলেই বোঝা যায়। আসন্ন ঈদের কাজ নিয়ে এই তুখোর অভিনেতা কথা বলেন আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। ঈদের কি কি কাজ শেষ করেছেন? জানতে চাইলে তিনি আনন্দকণ্ঠকে বলেন, ঈদের বেশ ব্যস্ততা। ঈদের সময় আগে পরিকল্পনা না করার কারণে কাজ অনেক পরে শুরু হয়। পরে দেখা যায় যে অনেক পছন্দের মানুষের কাজ করা যায় না। এরই মধ্যে শেষ করেছি আশফাক নিপুণের ‘লায়লা তুমি কি আমাকে মিস কর?’, সুমন আনোয়ারের ‘কমলার বনবাস’, ইমরুল রাফাতের ‘নীরবতা’, হাবিব শাকিলের ‘সিনেমা জীবন’, সাজ্জাদ সুমনের ‘দ্বৈরথ’ ও ‘ক্লাসলেস মোখলেস’, মেহেদী হাসান জনির ‘সহজ সরল ছেলেটি’, এবং ‘আমার একটা গল্প বলার ছিল’, রূপক বিন রউফ এর ‘রাজা রানী’ ও ‘একটি ক্ষুদ্র পুরাতন গল্প’, মোরসালিন শুভর ‘আগুন’, হিমেল আশরাফের ‘লিফট ম্যান’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘অনুভাবে’ ও ‘কি জানি কি হয়’, মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘বুকের বাম পাশে’। হাতে আরও বেশ কিছু কাজ রয়েছে। ‘দ্বৈরথ’ নাটকটি প্রসঙ্গে- মেজবাহ উদ্দিন সুমন রচিত ‘দ্বৈরথ’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন সাজ্জাদ সুমন। এতে আমার বিপরীতে দেখা যাবে মেহজাবিন চৌধুরীকে। ‘ঈদে বাড়ি ফেরার একটি গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। প্রচার চলতি ধারাবাহিক কী কী? অনেকগুলো তার মধ্যে রয়েছে হিমেল আশরাফের ‘এক লক্ষ লাইক’, ইমরাউল রাফাতের ‘সিনেম্যাটিক’, সাজ্জাদ সুমনের ‘ছলে বলে কৌশলে’, আরবি প্রিতমের ‘সেমি কর্পোরেট’ শীর্ষক ধারাবাহিক গুলো। ধারাবাহিকে কাজ করে কতটুকু সন্তুষ্টি পাচ্ছেন? ধারাবাহিক নাটকের ধারাবাহিকতা থাকে না। এটা একটি প্রধান সমস্যা। না থাকার কারণ? জানতে চাইলে আফরান নিশো আনন্দকণ্ঠকে বলেন, আসলে ধারাবাহিক নাটকে আমাদের এখানে যেটা হয় অনেকগুলো প্লট নিয়ে ধারাবাহিক নাটক হয় সেই ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন প্লটের দিকে গল্প চলে যায় বাজেটের কারণে। দেখা গেছে ডিরেক্টর নাটক বানানোর ছয় মাস পর প্রচার হচ্ছে অথবা অনেক সময় দেখা যায় যে শূটিং করার পর অনএয়ার টাইম পিছিয়ে যায়। প্রথম লট কাজ করার পর সেই ধারাবাহিকতা আর থাকে না। কন্টিনটির মিল থাকে না কমিটমেন্টের জায়গা থেকে। ধারাবাহিক নাটক যদি ঠিকভাবে করে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় গল্পের মিল থাকে। এক মাস কাজ হলে আরেক মাসে কাজ হয় না। আবার দুইমাস পর হচ্ছে। এ জন্য ধারাবাহিক নাটকের ধারাবাহিকতা থাকে না। বরাবরই ব্যতিক্রমী সব চরিত্রে অভিনয় করছেন, আগামী কাজগুলো থেকে কী প্রত্যাশা করছেন? এটা আমার একটা চেষ্টা থাকে সব সময়। স্বার্থপরের মতো চিন্তা বলা যায়। আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা। আমাকে বিভিন্ন চরিত্রে করতে হবে। একটা সময় বয়স হবে সে সময় তো কেন্দ্রিয় চরিত্রই করতে হবে। হিরো চরিত্র করা যাবে না। চাইলেই ইউনিভার্সিটির ছেলের চরিত্রে করতে পারব না। সেই চেষ্টাটা সেই বিষয়টা আগে থেকে গোছানো নিজের কথা চিন্তা করে। আর আমি সব সময় চেয়েছি অভিনেতা হতে হিরো হতে চাইনি। একজন পারফর্মার যত অভিনয় করবেন তত মানুষ মনে রাখবে। যে কমেডি করছে সে কমেডিই করছে। যে হিরো চরিত্র করছে সে হিরোই করছে। সব জোনে কাজ করার একটা প্রেসার মানসিক বা শারীরিক। আজকে আমি রোমান্টিক হিরো কালকে আমি পাগল তারপরের দিন মুছি, ডাক্তার। চরিত্র পরিবর্তন করে একটা এফোর্ড দিতে হয়। হুমায়ুন ফরীদি কে আমার আইডল মানি। তার মধ্যে থেকে এ জিনিসগুলো পেয়েছি। তারে দেখে আমি শিখেছি যে আমার অভিনেতা হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। কার অভিনয় দেখে এমন বহুমুখী চরিত্রে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন- আমার আদর্শ হুমায়ুন ফরীদি। একজন পরিপূর্ণ অভিনেতা তিনি। ফরীদি ভাইকে দেখেছি বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে। তার বহুমুখী চরিত্রগুলো আমার পছন্দ হতো বলেই আমি হুমায়ুন ফরীদি কে পছন্দ করতাম। তিনি আজীবন তার অভিনয় গুণে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। তাকে দেখেই আমি এমন সব চরিত্রে কাজ করার উৎসাহ পাই। বড় পর্দায় কাজ করার ইচ্ছে আছে? ইচ্ছে তো প্রচুর আছে। অনেকে ভাববে আমার ইচ্ছে নেই। আমাকে এতবার যে বড়পর্দার জন্য বলা হয়েছে। এতজন বলেছে এতজনকে না করছি। বড়পর্দায় যে ভাবে এখন কাজ হচ্ছে এ ভাবে কাজ করতে চাই না। বড়পর্দায় কাজ করলে আমি ছোটপর্দায় কাজ করতে চাই না। প্রফেশনাললি বড়পর্দার কাজ নেওয়াটা বড় একটা টাফ। বছরে একটা দুইটা ভালো ছবি। আমাদের এখানে নিজস্ব অনেক গল্প আছে সেসব গল্পে কাজ করতে চাই। আমাদের এখানে দেখা যায় যে নিজেদের গল্পের চেয়ে ধার করা গল্পে বেশি কাজ করা হয়। আমাদের এখানে এত লেখক এত গল্প আছে তারপরও ধার করে গল্প নিয়ে কাজ করছে। আমাদের এখান থেকে অনেক গল্প বলা যেতে পারে যেটা নাটকে বলা হয়। বড় পর্দায়ও এই অভিনেতা কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। অনেকে তার সঙ্গে চলচ্চিত্রের বিষয়ে কথা বলছেন বলেও জানান। তবে তিনি মনের মতো গল্প ও চরিত্র পেলেই চলচ্চিত্রের খাতায় নাম লেখাবেন। তিনি বলেন, সব সময় দর্শকের কথা ভেবেই কাজ করি। ভবিষ্যতেও এমন কিছু কাজ করতে চাই, যা দর্শক গ্রহণ করবে।
×