অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ২য় ও ৩য় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করতে পারেনি ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কেয়া কসমেটিক। অথচ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/ পরিচালকেরা গত ১ বছর নিয়মিতভাবে শেয়ার বিক্রি করেছে। যারা ১১ মাসে ১৪ কোটির বেশি শেয়ার বিক্রয় করেছেন। কেয়া কসমেটিকের সঙ্গে একীভূতকরণের পর অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার উদ্যোক্তা শেয়ার হিসেবে বিক্রি করছেন তারা। সব মিলে এটি কোম্পানির ব্যবসা খারাপের ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার দর এখন অভিহিত মূল্যের নিচে এবং তারপরেও উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে মানসম্মত কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেয়া উচিত হবে। সর্বশেষ আইপিও অনুমোদন পাওয়া ৭৪টি কোম্পানির মধ্যে অধিকাংশই দুর্বল কোম্পানি। যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারের জন্য ক্ষতিকর। তিনি আরও বলেন, এখন আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর প্রথম ২ বছর মুনাফা ও লভ্যাংশ দিচ্ছে। কিন্তু ৩য় বছর থেকেই নাই হয়ে যাচ্ছে। এটা কোন স্বাভাবিক কোম্পানির লক্ষণ না। তাই আইপিও অনুমোদনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সতর্ক হওয়া উচিত।
২০০১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কেয়া কসমেটিকসের ১ হাজার ২ কোটি ১১ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ৬২.৭৭ শতাংশ হারে ৬২ কোটি ৯০ লাখ শেয়ারের মালিকানা ছিল। কিন্তু চলতি বছরের ৩১ মে এসে দাঁড়িয়েছে ৪৮ কোটি ৭৮ লাখ শেয়ারে। অর্থাৎ ১১ মাসে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/ পরিচালকেরা ১৪ কোটি ১২ লাখ শেয়ার বিক্রয় করেছেন।
উদ্যোক্তা/পরিচালকদের টানা বিক্রির ঘোষণায় শেয়ারটির দরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যাতে ১ বছর আগের ১৮.২০ টাকার শেয়ারটি এখন অভিহিত মূল্যের নিচে ৮.৩০ টাকায় নেমে এসেছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের ২য় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ১৭) আর্থিক হিসাব প্রকাশের জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা ছিল। আর ৩য় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ ১৮) জন্য ছিল ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে কেয়া কসমেটিকস কর্তৃপক্ষ উভয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব এখনও প্রকাশ করতে পারেনি।
কেয়া কসমেটিকসের সচিব নূর হোসেন বলেন, কেন এখনও ২য় ও ৩য় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি, তা আমি নিশ্চিত না। তবে অতিশীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।