ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

বহুমাত্রিক পরিবেশনায় জন্মদিনে নজরুলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

​​​​​​​সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ২৫ মে ২০২৪

বহুমাত্রিক পরিবেশনায় জন্মদিনে নজরুলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

শনিবার জাতীয় জাদুঘরে নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনা

শনিবার ছিল দ্রোহ, প্রেম সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। সেই সুবাদে  জাতীয় কবির জন্মদিন উদ্যাপনের স্রোতধারায় রঙিন রূপ ধারণ করে রাজধানীর সংস্কৃতি ভুবন। প্রতিটি আয়োজনজুড়ে ছিল কবির সৃষ্টির নির্যাস। ঐশ্বর্যময় সেই সৃষ্টিকে মেলে ধরা হয় শিল্পিত সৃজনে। গানের সুরে, কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে কিংবা নৃত্যশিল্পীর নাচের মুদ্রায় প্রকাশিত হয়েছে কবির প্রতি অকৃত্রিম অনুরাগ। শিল্পের আলোকরেখায় নিবেদিত হয়েছে ভালোবাসা। সব মিলিয়ে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানানো হয় নজরুলকে। জাতীয় জাদুঘর থেকে  শুরু করে শিল্পকলা একাডেমি কিংবা ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনসহ নানা মঞ্চে উপস্থাপিত হয়েছে কবির নজরুলজয়ন্তীর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।  

জাদুঘরের অনুষ্ঠানমালা : নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার থেকে জাতীয় জাদুঘরে নাচ-গান কবিতায় সজ্জিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। আয়োজনে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার পূর্বে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনের লবিতে পরিবেশিত হয় বাউল গান।আমি ভাই ক্ষ্যাপা বাউলশিরোনামের গান শোনান অমিয় বাউল বাবুল বাউল। এই গানের সুরে পরিবেশিত হয় নাচ। এর পর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক পর্বেমোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দামগানের সুরে ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় নাচ করে নজরুল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এর পর একক সংগীত পরিবেশন করেন খায়রুল আনাম শাকিল ফেরদৌস আরা। তাদের কণ্ঠাশ্রিত সুরের অনুরণন থামতেই ভেসে বেড়ায় কবিতার শিল্পিত উচ্চারণ। নজরুলের কালয়জীবিদ্রোহীকবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী মাহিদুল ইসলাম। আবৃত্তি শেষে পুনরায় আসে গানের পালা। সংগীত পরিবেশন করেন ইয়াসমিন মুস্তারী ইয়াকুব আলী। এর পর একটি করে নাচ গান  পরিবেশন করে শিশু একাডেমির শিল্পীরা।   

শিল্পকলা একাডেমির নিবেদন : নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনে আলোচনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমি প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যশিল্পী দল।সৃজন ছন্দে আনন্দেশীর্ষক নাচটি  পরিচালনা করেন মেহরাজ হক তুষার। বিজন চন্দ্র মিস্ত্রির পরিচালনায় পরিবেশিত হয় গীতি আলেখ্য।আমার কৈফিয়তকবিতা অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃত্যশিল্পীবৃন্দ এর পর  ‘জয়  হোক জয়  হোকএবং ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটিশিরোনামের গান শোনায় নজরুল সংগীত সংস্থার শিল্পীরা। ছন্দা চক্রবর্তী গেয়ে শোনানলাইলী তোমার এসেছে ফিরিয়া সালাউদ্দিন আহমেদ পরিবেশন করেনআসলো যখন ফুলের ফাগুন ছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করেন ফাতেমা তুজ জোহরা, সুজিত মোস্তফা, রাজিয়া মুন্নি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, শারমিন সাথী ইসলাম। একাডেমির শিশু সংগীতদল গেয়ে শোনায়দাও  শৌর্য দাও  ধৈর্যশীর্ষক সংগীত।

আলোচনা পর্বে মুখ্য আলোচক ছিলেন শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ।  সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

ছায়ানটের নজরুল উৎসব : নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে ছায়ানট আয়োজিত তিন দিনব্যাপী নজরুল উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল শনিবার। সান্ধ্যকালীন আয়োজনে পরিবেশিত হয় ছায়ানট সভাপতি সন্্জীদা খাতুন গ্রন্থিত গীতিনৃত্যালেখ্যসজল শ্যাম ঘন দেয়া গান, পাঠ আবৃত্তিতে সজ্জিত  এদিনের উৎসবে নজরুলের সৃষ্টিসম্ভার থেকে পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ডালিয়া আহমেদ।এসো হে সজল শ্যামল ঘন দেয়াশিরোনামের গান শোনায় বড়দের দল। কানিজ হুসনা আহম্মদী সিম্পী গেয়েছেনবরষা এলো বরষা মনীষ সরকার পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিলমেঘ-মেদুর বরষায় কোথা তুমি ছাড়ারুম ঝুম বাদল আজি বরষে’, ‘কেন পরান কাঁদেসহ নানা আঙ্গিকের নজরুলসংগীত পরিবেশন করেন শারমিন সাথী ইসলাম, জয়িতা অর্পা, নাহিয়ান দুরদানা শুচি, নাশিদ কামাল, লতিফুন জুলিও, সঞ্জয় কবিরাজ, কল্পনা আনাম, মৃদুলা সমদ্দার, আফসানা রুনা মফিজুর রহমান।  সমবেত সংগীত পরিবেশন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।কাজরি গাহিয়া এসোগানের সুরে পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য।   

 

×