ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্ত থেকে নিরাশ হয়ে ফিরল দুই বাংলার স্বজনরা, এবারও হলোনা মিলনমেলা

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্ত থেকে নিরাশ হয়ে ফিরল দুই বাংলার স্বজনরা, এবারও হলোনা মিলনমেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্ত থেকে এবারও নিরাশ হয়ে ফিরে গেলো দুই বাংলার স্বজনেরা হলোনা মিলনমেলা। জেলার হরিপুর উপজেলায় কুলিক নদীর পারে ঐতিহ্যবাহী পাথরকালি মেলা উপলক্ষে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে যুগ যুগ ধরে দুই বাংলার হাজারো মানুষ তাদের স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করতে আসে এ মেলায়। কিন্তু কোনা আর ওমিক্রনের দোহাই দিয়ে মেলা না হওয়ায় নিরাশ হয়েই ফিরে যেতে হয়েছে দুই বাংলার স্বজনদের। নিয়ম অনুযায়ী হরিপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৬ নং ভাতুড়িয়া ইউনিয়নের মাকড়হাট ক্যাম্পের ৩৪৬ পিলার সংলগ্ন টেংরিয়া গোবিন্দপুর গ্রামেই শনিবার হওয়ার কথা ছিল এ মিলনমেলার। মেলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ভিড় করেছিল বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষ। সে মোতাবেক বাঙালী আত্মীয় স্বজনরা প্রিয় স্বজনদের জন্য জিনিসপত্র নিয়ে কাটা তারের দুই পাশে অবস্থান করলেও ভিড়তে পারেনি কাটা তারের কাছে। জানা যায়, প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লাখো মানুষের সমাগমে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা হয়ে থাকে। কয়েক যুগ ধরেই এখানে পাথরকালি মেলার আয়োজন করে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। কালীপুজার পর ওই এলাকায় বসে এই পাথরকালি মেলা। মেলাকে ঘিরে একদিনের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। দুই বাংলার মানুষ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করে। নিজের আতœীয় স্বজনদের জন্য নিয়ে আসা জিনিসপত্র গুলো কাটা তারের উপর দিয়ে ছুড়ে দেন নিজের স্বজনদের উদ্দেশ্যে। এর আগেও করোনার ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মিলনমেলা’র আয়োজন করা হয়নি। এবারো একই কারনে মেলার আয়োজন করেনি কতৃপক্ষ। অপরদিকে কঠোর অবস্থানেই থাকে দুই পাড়ের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী। স্বজনের সাথে দেখা করতে আসা সামাদ মাস্টার জানান, দু'দেশে আতœীয় স্বজনদের সম্প্রতি স্থাপনে প্রতিবছর এ পূজাকে কেন্দ্র করে কাটা তারকে ধরে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয় ৷ কিন্তু এবার সেটাও হলোনা। নিজের ভাইকে দেখতে আসা মখলেসুর জানান, আপনজনদের দেখার জন্য এক বছর অপেক্ষা করে থাকি। নিজের ভাই পরিবারসহ ওপারে থাকে । গতবছরেও দেখা করতে পারিনি ৷ এবারে আশা ছিল ভাইয়ের মুখ দেখতে পারব কিন্তু প্রসাশন তা হতে দিলনা। মেয়ে এবং নাতনির জন্য নিজ হাতে বানানো পিঠা নিয়ে আসা আমেনা বেগম জানান, নাতনির বয়স ৩ বছর। গত বছরেও দেখিনি এবারো দেখা হলোনা। মেয়ে,জামাই, নাতনির জন্য নিজের হাতে পিঠা বানিয়ে কি লাভ হলো, এখন এই পিঠা কে খাবে? পূজা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মিলনমেলা করা সম্ভব হয়নি শুধু প্জূা পালন করা হয়েছে। হরিপুরের গোবিন্দপুর ও চাপাসার ক্যাম্পে কর্মরত সীমান্ত বাহিনীরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে এবার মিলনমেলা বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় কতৃপক্ষ এবং কাঁটাতারের কাছে কোন বাংলাদেশীরা যেন না যায় সে বিষয়ে আমাদের জানিয়েছে৷
×