ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনিতে লকডাউনের মেয়াদ আরও ৪ সপ্তাহ বাড়ল

প্রকাশিত: ১৪:০৪, ২৮ জুলাই ২০২১

সিডনিতে লকডাউনের মেয়াদ আরও ৪ সপ্তাহ বাড়ল

অনলাইন ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাসের রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শহর সিডনির কর্তৃপক্ষ লকডাউনের মেয়াদ আরও ৪ সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুলনামূলক বেশি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের বিস্তার রোধে জুনের শেষদিকে থেকে শহরটির বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না আসার বিধিনিষেধ জারি হয়েছিল। চলতি মাসের মাঝামাঝি ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়; এরপরও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকায় কর্তৃপক্ষ লকডাউন আরও ৪ সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৮ অগাস্ট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সিডনিতে চলতি বছরের সবচেয়ে বাজে এ প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজারের বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) বুধবার ১৭৭ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে; গত বছরের মার্চের পর রাজ্যটিতে একদিনে আর এত কোভিড রোগী মেলেনি। সিডনি নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী। এনএসডব্লিউর প্রিমিয়ার গ্লেডিস বেরিজিক্লিয়ান বলেছেন, শুক্রবার সিডনির লকডাউন তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও এখনকার পরিস্থিতিতে তা করা যাচ্ছে না। তিনি জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া শহরটির বাসিন্দাদের যাতায়াতে নতুন বিধিনিষেধ দিয়েছেন। এ বিধিনিষেধের ফলে বাসিন্দারা এখন জরুরি কেনাকাটার ক্ষেত্রেও ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে যেতে পারবেন না। নিউ সাউথ ওয়েলসের অবস্থা উদ্বেগজনক হলেও শনাক্ত রোগী কমে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া রাজ্য বুধবার লকডাউন থেকে বেরিয়ে এসেছে। বিশ্বজুড়ে গত দেড় বছর ধরে চলা মহামারীর বেশিরভাগ সময়েই অস্ট্রেলিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে ও দেশে আসা ব্যক্তিদের হোটেলে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে সংক্রমণ অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছিল। বিভিন্ন রাজ্যের সরকার দ্রুত লকডাউন ও আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার মাধ্যমে সংক্রমণের বিস্তার রোধে সক্ষম হয়েছিল। মহামারী মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়ার আগ্রাসী পদক্ষেপের কারণে গতবছর দেশটির জনগণ ডজনখানেকের বেশি ছোটখাট লকডাউন দেখেছিল। ডেল্টার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে এ বছর সিডনির ৫০ লাখ বাসিন্দা মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনযাপনই উপভোগ করছিলেন; কিন্তু শনাক্ত রোগীর ঊর্ধ্বগতি ওই চিত্র বদলে দেয়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে শহরটিতে সেপ্টেম্বর বা তার বেশি সময় পর্যন্ত বিধিনিষেধ দেওয়া লাগতে পারে। কঠোর এ বিধিনিষেধ শহরটির অনেক বাসিন্দাকে ক্ষুব্ধও করেছে। কয়েকদিন আগে মেলবোর্ন ও অন্যান্য শহরের পাশাপাশি সিডনিতেও হাজারো মানুষ লকডাউন থেকে মুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এখনকার এ পরিস্থিতির পেছনে টিকাদানে শ্লথগতিকেও অনেকে দায়ী করছেন। দেশটিতে ফেব্রুয়ারিতে গণটিকাদান শুরু হলেও এখন পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ ভ্যাকসিন পেয়েছেন। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকায় ‘রক্ত জমাট বাঁধা’ নিয়ে আতঙ্কের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত ফাইজারের টিকা সংগ্রহ করতে না পারায় দ্রুতগতিতে টিকা দেওয়া যাচ্ছে না বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের। অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সিডনির বাসিন্দাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে; এ টিকার পর্যাপ্ত মজুদ আছে বলে আশ্বস্তও করেছে তারা।
×