ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অং সান সুকে দেখা গেল আদালতে ॥ তৃতীয় অভিযোগ গঠন

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ১ মার্চ ২০২১

অং সান সুকে দেখা গেল আদালতে ॥ তৃতীয় অভিযোগ গঠন

অনলাইন ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর দমন-পীড়ন ও সহিংসতায় একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ জনের প্রাণহানির ঘটনার পরদিন আজ সোমবার যখন বিক্ষোভকারীরা জান্তা সরকারের বিরোধিতায় আবারও রাস্তায় নেমে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন; ঠিক সেদিনই সু চির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বলে তার একজন আইনজীবী জানিয়েছেন। ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) এই নেত্রীর আইনজীবী মিন মিন সোয়ে বলেছেন, রাজধানী নেইপিদোতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়েছেন অং সান সু চি। এ সময় তাকে সুস্থ্য এবং স্বাভাবিক দেখা গেছে। তবে সম্ভবত তার ওজন কমে গেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এনএলডির এই নেত্রীকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। অভ্যুত্থানের দিন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো নেত্রীকে আটক করে সেনাবাহিনী। এর আগে, মিয়ানমারের এই নেত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ছয়টি ওয়াকি-টকি আমদানি এবং আইনলঙ্ঘন করে তা ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস প্রোটোকল না মেনে জনসমাবেশ করায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ গঠন করা হয়। আদালতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিলেও সু চি এখন কোথায় আছেন; তা জানা যায়নি। মিন মিন সোয়ে বলেছেন, ঔপনিবেশিক আমলের দণ্ডবিধির একটি ধারা অনুযায়ী— জনসাধারণের মাঝে ‘বিশৃঙ্খলা’ অথবা ‘ভীতি বা উদ্বেগ’ তৈরি করতে পারে এমন তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ক্ষমতায় থাকাকালীন সু চি তা মানেননি বলে সোমবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। গত নভেম্বরের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবারও মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে অং সান সু চির দল এনএলডি। কিন্তু এই নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকার হটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। সোমবার আদালতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যখন অং সান সু চি শুনানিতে অংশ নেন, তখন দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে সোমবার পুলিশের অভিযানে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। দেশটির অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনের নেতা এই থিনজার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, অভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেছে। সোমবার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। আমরা আজ আবারও বেরিয়ে এসেছি। রবিবারের সহিংসতার বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের মন্তব্য করা হয়নি। দেশটির জান্তা সরকার এক বছরের জরুরি অবস্থা শেষে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও এখনও সময় প্রকাশ করেনি। সেনাবাহিনীর নির্বাচনী এই প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে পারছেন না দেশটির নাগরিকরা।
×