ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় ওয়ানডে

দাপুটে জয়ের প্রত্যাশা আজ টাইগারদের

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ২২ জানুয়ারি ২০২১

দাপুটে জয়ের প্রত্যাশা আজ টাইগারদের

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে মনে হয়েছিল এবার প্রতিটি ম্যাচ দাপটে জিতবে বাংলাদেশ। তাহলে সিরিজ জয়ও দাপটেই হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটি যে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক দুর্বল দল। কিন্তু প্রথম ওয়ানডেতে সেই দাপট মিলেনি। আজ দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এ ম্যাচটিতে কী তাহলে দাপটে জিততে পারবে বাংলাদেশ? সেই প্রশ্নই সবখানে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বেলা সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে। প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আজ জিতলেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় হয়ে যাবে। বাংলাদেশ কী সিরিজ জিততে পারবে? এই প্রশ্নের চেয়েও এখন বেশি শোনা যাচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে সবখানে দাপট কতটা দেখাতে পারবেন তামিম, সাকিব, মুশফিক, মুস্তাফিজরা। প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬ ক্রিকেটারের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। আনকোরা দল। তাতেই বোঝা গেছে। এই দলটির সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুড়ে দেয়া টার্গেট ১২৩ রান তুলতেই বেগ পেতে হয়েছে। চার উইকেটের পতন ঘটেছে। লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান আউট হয়েছেন। অভিষিক্ত আকিল হোসেনের স্পিন ঘূর্ণিতে রান তুলতে কষ্ট হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও বেশি রান করতো, মজবুত স্কোর গড়তো, তাহলে কী হতো? সেই দিকটিই সবার নজরে পড়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ বোলাররা যে বোলিং করেছেন বিশেষ করে ৪ উইকেট নেয়া সাকিব, অভিষেক ওয়ানডেতেই ৩ উইকেট নেয়া পেসার হাসান মাহমুদ ও ২ উইকেট নেয়া ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সব আশা শেষ হয়ে গেছে। ব্যাট হাতে তামিম ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু কোন কারণে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন-দুইজন ব্যাটসম্যান হাল ধরে ফেলতেন আর রান ২০০’র বেশি হয়ে যেত তাহলে বিপদ ঘনিয়ে আসতেও পারত। এবার এ নিয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দাপটেই হারাতে হবে। শুধু জয় দিয়েই এখন যেন মন ভরবে না। দাপটও দেখাতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১২ নিয়মিত ক্রিকেটার করোনাভীতির কারণে বাংলাদেশ সফরে আসেননি। এসেছেন তরুণ ক্রিকেটাররা। এই তরুণদের বিরুদ্ধে যদি দাপট দেখানো না যায় তাহলে কিভাবে চলবে। আরেকদিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে। দীর্ঘ ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমেছেন টাইগাররা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে এতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি। এত দীর্ঘ সময় না খেলায় জড়তাও কাজ করেছে। প্রথম ওয়ানডেতে তাই সেই জড়তা দেখাও গেছে। কিন্তু সেই জড়তা এখন কাটিয়ে আজকের ওয়ানডেতে দুর্দান্ত জয়ই তুলে নিতে হবে। বাংলাদেশ ওয়ানডে দল এখন তামিমের নেতৃত্বে খেলছে। নতুন নেতৃত্ব পাওয়ার পর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তামিমেরও এতদিন নিয়মিত অধিনায়কত্বের শুরুটা করা হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে তা করেছেন। জয় নিয়ে মাঠও ছেড়েছেন। আজ জিতলেই সিরিজ জয় হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এরআগে অধিনায়কত্ব করে প্রথম সিরিজেই জিতেছিলেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেই ২০০৯ সালে। সেবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের তুলনামূলক দুর্বল দলই ছিল। এবার যখন তামিমও সেই কৃতিত্ব গড়ার কাছাকাছি তখনও সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজই সামনে। তবে আলোচনা এখনও প্রথম ওয়ানডে নিয়েই হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কাছ থেকে যে রকম আশা করা হয়েছিল বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা সেই আশা পূরণ করতে পারেননি। তামিম অবশ্য কোন দোষ দেখেননি। অভিযোগও নেই তার। তামিম বলেছেন, ‘কোন অভিযোগ নেই। আমরা দারুণ বোলিং করেছি। শুরুটা দারুণ করেছে মুস্তাফিজ ও রুবেল। তরুণ হাসানও চমক দেখিয়েছে। স্পিনে সাকিব ও মেহেদী দারুণ করেছে। বিশেষ করে সাকিব।’ সঙ্গে ব্যাটিং এমন খারাপ হওয়ার কারণ হিসেবে বোঝাতে চেয়েছেন, ‘এমন উইকেটে ব্যাট করা খুব কঠিন ছিল। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে চেয়েও পারা যাচ্ছিল না। যখন উইকেট দেখেছিলাম মনে হয়েছিল ব্যাট ভালমতো করা যাবে। কিন্তু না। সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে আপনি কাউকে দোষারোপ করতে পারেন না।’ বিরুপ আবহাওয়ার বিষয়টি ব্যাটিংয়ে আসলেই কাজ করেছে। শুরুতে পনের মিনিট খেলা হওয়ার পর বৃষ্টির জন্য এক ঘণ্টা খেলা হয়নি। সারাদিন মেঘলা আকাশ থাকে। তাতে ব্যাটিং করাও কঠিন হয়ে পড়ে। সবকিছু দূর করে আজ বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা পুরো ছন্দে ফিরলেই হলো, দল দাপটে জিততে পারলেই হলো।
×