স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতির অভিযোগে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের দায়ের করা কোন মামলা সরকার চাইলেই প্রত্যাহার করতে পারবে না উল্লেখ করে রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। সরকার প্রত্যাহারতো করতে পারবে না, দুদকের করা কোন মামলা প্রত্যাহারে সুপারিশও করা যাবে না বলে রায়ে বলা হয়েছে। রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোঃ খুরশীদ আলম খান রায়ের বিষয়টি জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর একটি টিন চুরির মামলায় বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ের ফলে এখন থেকে কোন দুর্নীতি মামলায় সরকারের আইনী হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ থাকল না। এছাড়া ১/১১ এর সময়ে দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার বিষয়েও হাইকোর্টের রায়টি সুনির্দিষ্টভাবে সব প্রশ্নের অবসান ঘটাল বলেও জানান দুদক আইনজীবী।
রায়ে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা। এর ফলে দুদকের অনুমোদিত কোন মামলা প্রত্যাহারে কেউ কোন হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামি পক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে কি না সে বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিগত ১/১১ এর পর আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন ফৌজদারিসহ অসংখ্য মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী এ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেই সময় দুদকের মামলাও প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। তখন অনেক ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার হলেও দুদকের মামলায় আইনী প্রশ্ন জড়িত থাকার কারণে কোন মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু ওই সময়ে সিলেটের ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৫টি টিন চুরির অভিযোগে দুদকের মামলা প্রত্যাহারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে। আদালতও মামলাটি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহারের আদেশ দেয়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পক্ষ থেকে। আবেদনে বলা হয়, যে প্রক্রিয়ায় দুদকের মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে তা সঠিক আইন মেনে হয়নি। ক্রিমিনাল ল’ এ্যামেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট-১৯৫৮ এর ১০(৪) ধারা অনুযায়ী সরকারের জায়গায় আইনে কমিশন’ শব্দটি লেখা আছে। সে আবেদনের ওপর হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার।