ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় দলের ভবিষ্যত খেলোয়াড় তৈরিই লক্ষ্য র‌্যাডফোর্ডের

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৩০ অক্টোবর ২০২০

জাতীয় দলের ভবিষ্যত খেলোয়াড় তৈরিই লক্ষ্য র‌্যাডফোর্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবেমাত্র কাজ শুরু করেছেন টোবি র‌্যাডফোর্ড। ব্রিটিশ এই অভিজ্ঞ কোচ বাংলাদেশের হাই পারফর্মেন্স ইউনিটের (এইচপি) প্রধান কোচ হিসেবে ২৬ আগস্ট দায়িত্ব পেলেও কাজ শুরু করেন গত মঙ্গলবার। ইতোমধ্যেই ২৬ জন তরুণকে দেখেছেন তিনি এবং নিজের পর্যবেক্ষণে বেশ কয়েকজনকে মনেও ধরেছে। যদিও সেই ক্রিকেটারদের নাম প্রকাশ করেননি র‌্যাডফোর্ড। কারণ চলমান ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি ম্যাচ রয়েছে এই ক্রিকেটারদের মধ্যেই, তারপর কোন ক্রিকেটারকে নিয়ে কি কাজ করতে হবে তা বুঝে উঠতে সক্ষম হবেন তিনি। তবে নিজের একমাত্র উদ্দেশ্য হিসেবে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ দলকে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০- এ তিন ফরমেটের জন্য উপযুক্ত খেলোয়াড় তৈরি করতে চান তিনি। সেই প্রক্রিয়াটি দ্রুতই সেরে জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর কাছে পাঠাতে চান যেন সেই খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ দলের জন্য কিছু করতে সক্ষম হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে দীর্ঘ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাডফোর্ড। এ সময় তিনি দাবি করেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যত বেশ ইতিবাচক। সেপ্টেম্বরের শেষদিকে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও এইচপি দলের শ্রীলঙ্কা সফর হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়। ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময় পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরাতে প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে সিরিজ আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেখানে তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটাররা খেলার সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ও অপরিহার্যদের সঙ্গে। তাই শ্রীলঙ্কা সফর না হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন র‌্যাডফোর্ড। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা ট্যুর হয়নি কিন্তু বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে অভিজ্ঞদের নিয়ে উচ্চমানের ক্রিকেট হয়েছে। তরুণ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে বেশ ভাল টুর্নামেন্ট হয়েছে। আমি আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় মুশফিকুরকে কাজে লাগাতে পেরেছি দলগত বিভিন্ন আলোচনায়। তরুণ খেলোয়াড়রা শিখেছে যে তিনি কিভাবে তার প্রস্তুতি সারেন এবং কিভাবে খেলেন। একজন অভিজ্ঞ কোচ হিসেবে আমি তাকে অবশ্যই ব্যবহার করতে চাইতাম তাদের সহায়তায়। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সফর হলে সেটা হয়তো সম্ভব হতো না।’ কোচ হিসেবে দারুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে র‌্যাডফোর্ডের। তার শিষ্য ছিলেন বর্তমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জ্যাসন হোল্ডার, শ্যানন গ্যাব্রিয়েলসহ টেস্ট দলের অর্ধেক সদস্য। আবার ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগান ও ডেভিড মালান ১৫ বছর আগে ছিলেন তারই শিষ্য। এখন যে ২৬ ক্রিকেটারকে শিষ্য হিসেবে পেয়েছেন তাদের সবাই যে ভাল অবস্থানে যাবেন তা নিশ্চিত নয়। এ বিষয়ে র‌্যাডফোর্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যত আমার মনে হয় খুবই ইতিবাচক। এই মেধাবী খেলোয়াড়দের নিয়েই সেটা গড়ে উঠতে যাচ্ছে। অবশ্যই এই ২৫/২৬ খেলোয়াড়কে নিয়ে যেতে পারব না। কেউ কেউ যেতে পারবে না। এটাই যে কোন একাডেমির স্বাভাবিক ব্যাপার। লক্ষ্যটা হচ্ছে অধিকাংশকেই বিভিন্ন ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলানোর জন্য প্রস্তুত করা এবং বাংলাদেশকে র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরে তোলা। এটাই আমার উদ্দেশ্য। আমি এই খেলোয়াড়দের রাসেলের (ডোমিঙ্গো) কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে চাই যেন তারা তারজন্য কিছু করতে পারে।’ ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে, এইচপির অবকাঠামো দেখে বেশ সন্তুষ্ট র‌্যাডফোর্ড। কয়েকজন ক্রিকেটারকে মনেও ধরেছে তার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি যে এইচপিতে আমার বিশাল যে দায়িত্ব রয়েছে তা হচ্ছে খেলোয়াড় তৈরি করা যেন তারা টি২০, ওয়ানডে বা টেস্ট যে কোন দলেই হোক না কেন খেলতে পারে এবং বিশ্বের যে কোন স্থানে পারফর্ম করতে পারে। মাঠে আমাদের একজন তরুণ ছেলে আছে যাকে সবাই জোফরা বলে ডাকে এবং সে ঘণ্টায় ৯০ মাইল বেগে বল ছুড়তে পারে। সেখানে অবশ্য ৩/৪ জন ব্যাটসম্যানকে আজ সকালে পেয়েছি যারা এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দারুণ টেকনিক, সাহস এবং হিম্মত দেখিয়েছে যারা কিনা শীর্ষ পর্যায়ের টেস্ট খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারে। এটা আমাদের জন্য খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। ৩/৪ জনকে আমার মনে ধরেছে। আমি তাদের র‌্যাঙ্কিংও করতে পারি, কিন্তু সবার সামনে তা করব না। কোচ হিসেবে আমি আরও সময় দিতে চাই।’
×