ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জিদান জাদুতে উজ্জীবিত রিয়াল, বেহাল বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৬ অক্টোবর ২০২০

জিদান জাদুতে উজ্জীবিত রিয়াল, বেহাল বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফরাসী কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের পরশে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা দুই ম্যাচ হারের পর এল ক্লাসিকোয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনাকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। শনিবার রাতে নতুন মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে বার্সার মাঠ ন্যুক্যাম্পে দাপুটে ফুটবল খেলে লিওনেল মেসির দলকে হারিয়েছে সার্জিও রামোস বাহিনী। অথছ এর আগে প্রথমে ঘরের মাঠে লা লিগায় উঠে আসা কাদিজের কাছে ২৯ বছর পর হার মেনেছিল রিয়াল (১-০)। এরপর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ইউক্রেনের ক্লাব শাখতার ডোনেস্কের কাছেও ঘরের মাঠে হার (৩-২)। টানা দুই ম্যাচে হেরে এসে ন্যুক্যাম্পে মেসি-পিকেদের রীতিমতো নাজেহাল করে ছেড়েছেন ক্রুস-মডরিচরা। মূলত জিদানের জাদুর কাঠিতেই দুই হারের পর এভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রিয়াল। এর ফলে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো বার্সার বিরুদ্ধে টানা দুই ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেয়েছে রিয়াল। শিরোপা জয়ের পথে গত মৌসুমে শেষ ক্লাসিকোয় ঘরের মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল জিদানের দল। লীগে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ হেরেছে বার্সিলোনা। গত সপ্তাহে গেটাফের মাঠে হেরেছিল। এই দুই ম্যাচের আগে সেভিয়ার সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল কাতালানরা। অর্থাৎ সবমিলিয়ে টানা তিন ম্যাচ জয়বঞ্চিত কোচ রোনাল্ড কোম্যানের দল। যে অবস্থা তাতে নিজেদের ইতিহাসে লীগে সবচেয়ে বাজে শুরুর রেকর্ড গড়তে চলেছে বার্সা। বর্তমানে পাঁচ ম্যাচ শেষে মাত্র ৭ পয়েন্ট নিয়ে ২০ দলের মধ্যে তালিকার ১২ নম্বরে অবস্থান করছে মেসির দল। আর ছয় ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রিয়াল। অবশ্য রবিবার রাতে রিয়াল সোসিয়েদাদ নিজেদের ম্যাচে জয় পেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আবারও শীর্ষে উঠে আসবে। অন্যদিকে রিয়াল বেটিসকে ২-০ গোলে হারানো এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ১১ পয়েন্ট নিয়ে গোলগড়ে আছে তালিকার দুই নম্বরে। বার্সার এমন দুর্দশার জন্য সুপারস্টার মেসির নিষ্প্রভতাই দায়ী। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক কিছুতেই নিজের ফর্ম ফিরে পাচ্ছেন না। গত গ্রীষ্মে বার্সা ছাড়া নিয়ে মেসির সঙ্গে ক্লাবের সম্পর্কের বেশ অবনতি হয়েছে। যার বাজে প্রভাব পড়েছে মাঠের খেলায়। এবারের মৌসুমে লা লিগায় এখন পর্যন্ত দুটি পেনাল্টি ছাড়া গোল করতে পারেননি মেসি। এ পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট কতটা ফর্মহীনতায় ভুগছেন রেকর্ড সর্বোচ্চ ছয়বারে ফিফা সেরা তারকা। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ইউরোপের অন্যতম বড় স্টেডিয়ামে মৌসুমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দ্বৈরথে ছিল না দর্শকরা। হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে দু’দল মুখোমুখি হয়। প্রথম ১০ মিনিটে উত্তেজনাকর ম্যাচেরই আলামত মিলেছিল। পঞ্চম মিনিটে ডানদিক থেকে করিম বেনজেমার বাড়ানো পাসে ফেডেরিকো ভালভার্ডে গোল করলে এগিয়ে যায় অতিথি রিয়াল। যদিও মাদ্রিদের গোলোৎসব খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন মিনিটের মধ্যেই বার্সিলোনা সমতা ফেরায়। লেফটব্যাক পজিশন থেকে মেসির পা ঘুরে বল চলে যায় জর্র্ডি আলবার কাছে। স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের সহায়তায় উঠতি তারকা আনসু ফাতি ডি বক্সের ভেতর রামোসকে কাটিয়ে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন। এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় রিয়াল। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে রিয়ালকে আবারও এগিয়ে দেন অধিনায়ক রামোস। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে রিয়াল পেনাল্টি পেলেও ম্যাচ শেষে এটা নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জানান বার্সা কোচ কোম্যান। ম্যাচের শেষ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা লুকা মডরিচ বার্সা গোলরক্ষককে ডজ দিয়ে রিয়ালের হয়ে তিন নম্বর গোল করেন। ম্যাচশেষে উচ্ছ্বসিত রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, কখনও কখনও কোন ব্যাখ্যা থাকে না। এই ম্যাচে আমরা যা করেছি এভাবে চালিয়ে যেতে চাই। টানা দুই হারের পর শুরু হওয়া সমালোচনারও আপন ভঙ্গিমায় জবাব দিয়েছেন ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী জিদান। বলেন, আমি জানি না এই সমালোচনা ঠিক ছিল কিনা। আমি কেবল বলতে পারি, আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি গর্বিত। আমরা এমন একটা দলকে হারিয়েছি যারা সবসময় প্রতিপক্ষের জন্য কাজটা কঠিন করে তোলে। আমাদের নিয়ে যা কিছু বলা হয়েছে, এরপর জয়টা উপভোগ করা উচিত। অন্যদিকে হতাশ বার্সা কোচ রোনাল্ড কোম্যান রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তিনি বলেন, পেনাল্টির সিদ্ধান্তটি ম্যাচের ফলে বড় প্রভাব ফেলেছে। কারণ পেনাল্টির আগ পর্যন্ত আমরা ভাল খেলছিলাম।
×