ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরের ইসলামপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

জামালপুরের ইসলামপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের ইসলামপুরে এবার দীর্ঘস্থায়ী দফায় দফায় বন্যার পানির হ্রাস-বৃদ্ধির তীব্র স্রোতে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে মানুষের জীবন যাত্রা। বন্যায় এ উপজেলায় প্রায় ১০২ কোটি টাকার পাকা-কাঁচা রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও রাস্তা-ঘাট জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ ও যানবাহন চলাচলে। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদী বেষ্টিত উপজেলার নাম জামালপুরের ইসলামপুর। এই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও দশানীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিবছর বন্যায় প্লাবিত হয়ে রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। প্রতিবছর বন্যার সময় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা পানি ফুঁসে উঠলেই জেলার সাত উপজেলা থেকে সবচেয়ে বেশি বন্যায় আক্রান্ত হয় ইসলামপুর উপজেলা। এবারও বন্যার পানির তীব্র স্রোতে উপজেলার পৌর শহরসহ ১২টি ইউনিয়নের ২০০ কিলোমিটার পাকা ও ৩০৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা নষ্ট হয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অনেক যায়গায় পিচ, ইট-সুঁড়কি ও মাটিসহ ভেসে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০২ কোটি ১২ লাখ টাকা। এসব রাস্তায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেটে পথ পাড়ি দিতেও বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগণকে। ইসলামপুর উলিয়া হয়ে মেলান্দহের মাহমুদপুর রাস্তা, পাথর্শী-মোরাদাবাদ রাস্তা, গুঠাইল রাস্তা, জারুলতলা রাস্তা, সদর ইউনিয়নের রাস্তা, গোয়ালেরচর কুমিরদহ রাস্তাসহ স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়কগুলো ও ব্রিজ-কালভার্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকটা পথ পায়ে হেটে যানবাহনে উঠতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে যানবাহন ঠেলে নিতে হচ্ছে, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেয়া, হাট-বাজার করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবি বিগত গত চার বছর বন্যায় এসব রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, প্রশাসন এসব রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় প্রতি বছরের বন্যায় এই রাস্তাগুলো আরো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় সেসব রাস্তা আরো বেশি ভেঙে গিয়ে চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর সচেতন মহল ক্ষতিগ্রস্ত এসব রাস্তা জরুরিভিত্তিতে মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন। ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জনকণ্ঠকে জানান, এবার বন্যায় পাকা রাস্তা আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৮০কিলোমিটার; যার ক্ষতির পরিমাণ ৯০ কোটি টাকা। কাঁচা ইট ও খোয়ার রাস্তা ক্ষতি হয়েছে ২০ কিলোমিটার; যার ক্ষতির পরিমাণ ছয় কোটি টাকা এবং কাঁচা রাস্তা ক্ষতি হয়েছে ৩০৬ কিলোমিটার; যার ক্ষতির পরিমাণ ছয় কোটি ১২ লাখ টাকা। খুব শিগগির ব্রিজ-কালভার্টসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার ও চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে এবং কিছু কিছু রাস্তার কাজের জন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এস জামাল আব্দুন নাসের বাবুল ও ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
×