ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৈরুতে বিস্ফোরণ

থমকে যাওয়া লেবাননের ভবিষ্যত কী?

প্রকাশিত: ০০:০৯, ১৩ আগস্ট ২০২০

থমকে যাওয়া লেবাননের ভবিষ্যত কী?

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর গণদাবির মুখে মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিয়ে ক্ষমতা ছেড়েছে লেবানন সরকার। কিন্তু শুধু সরকার পরিবর্তন করে কী মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে সৃষ্টি হওয়া অচলাবস্থার অবসান সম্ভব? ঠিক ১০ মাস আগে সরকারের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। তারপর এ বছর জানুয়ারিতে ইরানঘনিষ্ঠ শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্রদের সমর্থন হাসান দিয়াবের নেতৃত্বে লেবাননের নতুন সরকার গঠিত হয়। একই অভিযোগে জনরোষের চাপে দুইদিন আগে পদত্যাগ ঘোষণা করায় তিনি নিজেও এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিয়ে দিয়াব গত সোমবার পদত্যাগ করার সময়ই জানিয়েছিলেন, নতুন মন্ত্রিসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত তার সরকার তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় থাকবে। দিয়াব সরকারের পদত্যাগ ঘোষণার পর দুইদিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু নতুন সরকারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের কোন বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। এই দুইদিনে তিনি শুধু দিয়াব সরকারের মন্ত্রিসভার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। অথচ বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে যাওয়া বৈরুতের উদ্ধার কাজ এবং পুনর্নির্মাণে যোগ্য নেতৃত্ব এখন সবচেয়ে জরুরী। গত ৪ আগস্টের বিস্ফোরণের ধাক্কায় পুরো বন্দর এলাকাসহ রাজধানীর অর্ধেকই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ১৭১ থেকে ২০০ মানুষ মারা গেছেন। অনেকে এখনও নিখোঁজ। আহত প্রায় ছয় হাজার এবং গৃহহীন হয়ে পড়েছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত দিয়াব সরকারই তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় থাকছে। অনেকের আশঙ্কা, নতুন সরকার গঠন দীর্ঘায়িত হবে এবং সেই সময়টিতে দেশ অচল হয়ে থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে অভিজাতদের দুর্নীতি ও ঋণের বোঝার চাপে লেবাননের অর্থনীতি আগে থেকেই ভঙ্গুর। দেশটিতে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির কারণে ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রার মান তলানিতে ঠেকেছে, নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন এবং ব্যাংক ব্যবস্থাও প্রায় অচল। সরকারের উঁচু আসনে থাকা গুটি কয়েক মুখের দুর্নীতির কারণেই দেশের এ অবস্থা বলে মনে করে লেবাননের সাধারণ জনগণ। তারা দেশের শাসন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চায়। হাসান দিয়াবও পদত্যাগের ভাষণে বলেছেন, ‘দেশের সর্বত্র দুর্নীতি শেকড় গেড়েছে, যার ফল এই বিস্ফোরণ’। লেবাননের বর্তমান আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট আউন পার্লামেন্টের পরামর্শ নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভার নিয়োগ দিতে পারবেন। এজন্য নতুন করে নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু তিনি এখনও নিশ্চুপ। -খবর সূত্র- ইয়াহু নিউজ ও বিবিসি।
×