ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মুনাফা উদ্দেশ্য নয় ॥ আস্ট্রাজেনেকা প্রধান প্যাসকাল সরিয়ট

সাধ্যের মধ্যেই করোনার টিকা

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৪ জুলাই ২০২০

সাধ্যের মধ্যেই করোনার টিকা

করোনা আতঙ্কে ভোগা বিশ^বাসীর সামনে সুখবর নিয়ে এসেছে বিশে^র কয়েকটি কোম্পানি। বিশ^খ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও আস্ট্রাজেনেকার উৎপাদিত টিকা চলতি বছরের শেষ নাগাদ পাওয়া যাবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুধু উৎপাদন খরচে বিশ্বজুড়ে এ টিকা পাওয়া যেতে পারে। অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনকার উৎপাদিত টিকাটির নাম এজেডডি-১২২২। অক্সফোর্ড গবেষক সারা গিলবাট ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছেন। আস্ট্রাজেনকার ডিরেক্টর জেনারেল প্যাসকাল সরিয়ট বুধবার বলেন, স্বল্পমূল্যে তাদের ভ্যাকসিনটি পাওয়া যাবে। তিনি আরটিএল রেডিওকে বলেন, মুনাফা না করে প্রত্যেকের কাছে সমানভাবে ভ্যাকসিনটি পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। তাই আমরা এ ভ্যাকসিন উৎপাদন খরচেই সরবরাহ করব। উৎপাদন খরচে ভ্যাকসিনটির দাম পড়বে প্রতি ইউনিট ২ দশমিক ৮ মার্কিন ডলার। এক সাক্ষাতকারে তিনি আরও বলেন, আশা করছি চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমরা ভ্যাকসিনটি তৈরি করতে পারব। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এর আগেও হতে পারে। এই ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার ফলাফল চলতি সপ্তাহে মেডিক্যাল জার্নাল দ্য লানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। এতে ভ্যাকসিনটিকে নিরাপদ ও কার্যকর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফলাফল এই শরতে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর এএফপি, আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইনের। মার্কিন কোম্পানি জনসন এ্যান্ড জনসনও তাদের ভ্যাকসিন বিক্রিতে মুনাফা না করার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু ফাইজার, মের্ক ও মর্ডানা মঙ্গলবার মার্কিন আইনপ্রণেতাদের নিশ্চিত করেছেন তারা উৎপাদন খরচে ভ্যাকসিন বিক্রি করবে না। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে ২শ’ ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাজ চলছে। এর মধ্যে ২৩টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে। এদিকে চীনের উদ্ভাবিত একটি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা ব্রাজিলে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা এ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। এটি বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন। চীনের বেসরকারী ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত এ ভ্যাকসিন হচ্ছে নিয়ন্ত্রক প্রশাসনের অনুমোদনের আগের সর্বশেষ পদক্ষেপ, অর্থাৎ তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রবেশ করা বা মানব দেহে ব্যাপক ভিত্তিক পরীক্ষা শুরু করা বিশ্বে তৃতীয় প্রতিষ্ঠান। সাও পাওলো ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে ভ্যাকসিনটির প্রথম ডোজ গ্রহণ করা ২৭ বছর বয়সী চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা একটি নজিরবিহীন ও ঐতিহাসিক সময়ের মধ্যে জীবনযাপন করছি। এ কারণে আমি এ ট্রায়ালের অংশ হতে চেয়েছি।’ তার নাম গোপন রাখা হয়েছে। ব্রাজিলের ছয়টি রাজ্যের প্রায় ৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভ্যাক নামে পরিচিত এ ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন। এ জরিপের আওতায় আগামী তিন মাসে দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। সাও পাওলো রাজ্যের গবর্নর জোয়াও ডোরিয়া সোমবার বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে এর প্রাথমিক ফল পাওয়া যাবে। এই ট্রায়ালে ব্রাজিলের জনস্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্র বুটানটান ইনস্টিটিউটের অংশীদার হচ্ছে সিনোভ্যাক। কর্মকর্তারা জানান, এই ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণ হলে চুক্তির আওতায় এ প্রতিষ্ঠান ১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের অধিকার পাবে। বিশ্বে মহামারী করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে ব্রাজিল। দেশটিতে মৃতের মোট সংখ্যা ৮১ হাজার এবং আক্রান্তের মোট সংখ্যা ২১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
×