ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাঙ্গাকারাকে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ!

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ৪ জুলাই ২০২০

সাঙ্গাকারাকে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে ওঠা ফিক্সিংয়ের অভিযোগে তদন্তে নেমেছে শ্রীলঙ্কান ক্রীড়া মন্ত্রণালয় গঠিত পুলিশের বিশেষ ইউনিট। প্রথমে গ্রেট অরবিন্দ ডি সিলভাকে ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাবাসাদ করা হয়। যে সূত্রে উঠে আসা ওই ম্যাচের ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও পরে অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারাকেও গোয়েন্দা পুলিশের সামনে হাজির হতে হয়। লঙ্কান ক্রিকেটের চলমান এ কিংবদন্তিকে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাবাবদ করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন ভক্ত সমর্থকদের অনেকেই। তলব করা হয় আরেক গ্রেট মাহেলা জয়াবর্ধনেকেও। মুম্বাইয়ে নয় বছর আগের ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারে সাঙ্গাকারার শ্রীলঙ্কা। সম্প্রতি ওই সময়ের ক্রীড়ামন্ত্রী আলুথগামাগে অভিযোগ করেন, ‘ফাইনাল ভারতের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল।’ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় মাহেলা-সাঙ্গা সাবেক মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। আর ওই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কান নির্বাচক বোর্ডের প্রধান ডি সিলভাও প্রশ্ন তুলে তদন্ত দাবি করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদমাধ্যমকে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘এখানে জবানবন্দী দিতে এসেছিলাম। কারণ, খেলাটার প্রতি আমার দায়িত্ববোধ ও সম্মান আছে। (শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী) মহিন্দানন্দ আলুথাগমাগে যে অভিযোগ তুলেছেন, আশা করি, তদন্তে সত্য উদ্হবে।’ কী কী জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, এ নিয়ে কিছু বলেননি সাঙ্গাকারা। সাবেক মন্ত্রীর আলুথগামাগের অভিযোগের পরই মাহেলা টুইট করেছিলেন, ‘নির্বাচন কি খুব কাছে? মনে হচ্ছে সার্কাস শুরু হয়ে গেছে। নাম ও প্রমাণ কই?’ একই সুরে কথা বলেন লঙ্কানদের সেই ম্যাচের অধিনায়ক সাঙ্গাকারা। তিনি নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘সাবেক মন্ত্রী মাহিন্দানান্দা নিজের ‘প্রমাণ’ নিয়ে আইসিসি ও দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটের কাছে যাওয়া দরকার। যেন অভিযোগের পূর্ণ তদন্ত হতে পারে। এটা খুবই দুর্বোধ্য যে, এমন মারাত্মক একটি বিষয় সামনে আনার জন্য তিনি এতদিন অপেক্ষা করেছেন!’ উল্লেখ্য, সেই ফাইনালে ধারাভাষ্য দেয়া রানাতুঙ্গা ২০১৭ সালেই সন্দেহ প্রকাশ করে তদন্ত দাবি করেছিলেন। মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৭৪ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। ২০ বলে মাত্র ২১ রান করে আউট হওয়া ওপেনার থারাঙ্গার ব্যাটিং ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ৪৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে সেটি টপকে যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। ওদিকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান মনে করেন, এতদিন পরে শ্রীলঙ্কার পক্ষে তদন্ত করে সাফল্য পাওয়া সত্যি কঠিন। অবশ্য লঙ্কান ক্রিকেটের ভেতরে-বাইরে দুর্নীতির খবর নতুন নয়। তদন্তের ইতি টানল শ্রীলঙ্কা ॥ শেষ পর্যন্ত তথ্য-প্রমাণের অভাবে তদন্তের ইতি টেনে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা পুলিশ। শুক্রবারই তদন্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। ভারতকে জেতাতে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা ভূমিকা রেখেছেন, এমন কোনও প্রমাণ তারা পাননি। এই ঘোষণার পর হাঁফ ছেড়েই বাঁচলো লঙ্কান ক্রিকেট। তদন্তকারী এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওরা যেভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এখন আমরা তদন্তের সমাপ্তি টেনে দিয়েছি।’ মুম্বাইয়ের সেই ফাইনালের একাদশে চারটি পরিবর্তন এনেছিল শ্রীলঙ্কা। এ নিয়েও আঙুল তোলেন অনেকে। তবে এর মূল কারণটি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই কর্মকর্তা আরও যোগ করেন, ‘ফাইনালে কী কারণে স্কোয়াডে পরিবর্তন এসেছে, এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা তাদের কাছে রয়েছে। আমরা অপরাধমূলক কোনও কিছুর প্রমাণ পাইনি।’
×