ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যা করান বাবা

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১০ মার্চ ২০২০

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যা করান বাবা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ৩০ লাখ টাকার চুক্তিতে নিজের শিশুকন্যা ইলমাকে (১১) হত্যায় সহায়তা করেন বাবা আব্দুল মোতালেব। এই হত্যার পরিকল্পনা মোতাবেক বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে ডেকে নিয়ে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে ইলমাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন ইলমার দুলাভাই বাবুল ও ফুফাত ভাই মাসুমের নেতৃত্বে ৭/৮ জন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর ইলমা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতের অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই লোমহর্ষক এই কাহিনী জানতে পারে সিআইডি। সোমবার দুপুর দেড়টায় সিআইডি সদর দফতর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর ইলমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ এ কথা জানান। ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, ইলমার খুনের রহস্য উৎঘাটনের জন্য সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরার তত্ত্বাবধানে একটি টিম নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে তার বাবা আব্দুল মোতালেব, মঙ্গলী বেগম, ফুফাত ভাই মাসুম মিয়া, মোঃ বাতেন ও গ্রুপ লিডার শাহজাহান ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামি মাসুম মিয়া আদালতে ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দী দিয়েছেন। বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, ইলমাকে হত্যার সময় তার বাবা মোতালেব নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সহায়তা করেন। যদিও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে চুক্তির ৩০ লাখ টাকাও পাননি ঘাতক বাবা। তিনি জানান, ইলমা হত্যার তদন্ত করে জানতে পারেন এই লোমহর্ষক কাহিনী। এরই সূত্র ধরে অতিসম্প্রতি সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরার তত্ত্বাবধানে একটি টিম নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে বাবা আব্দুল মোতালেব, মঙ্গলী বেগম, ফুফাত ভাই মাসুম মিয়া, মোঃ বাতেন ও গ্রুপ লিডার শাহজাহান ভূঁইয়া। গ্রেফতারকৃত আসামি মাসুম মিয়া আদালতে ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, ইলমা হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে থানা পুলিশ ব্যর্থ হলে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক নিহত ইলমার ফুফাত ভাই মাসুমকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়। তিনি জানান, ২০১৫ সালের ২৮ মার্চ ১১ বছর বয়সী ইলমার মৃতদেহ নরসিংদী থানাধীন বাহেরচর গ্রামের একটি ধানক্ষেতে পাওয়া যায়। ইলমা বাহেরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। তদন্তে জানা যায়, নরসিংদী থানাধীন বাহেরচর নামক একটি দুর্গম এলাকায় শাহজাহান ভূঁইয়া ও সাবেক মেম্বার বাচ্চুর নেতৃত্বে দুটি দলের মধ্যে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব বিরাজমান ছিল। শাহজাহান গ্রুপের সদস্য ইলমার ফুফাত ভাই মাসুমের সঙ্গে বাচ্চু পক্ষের সদস্য তোফাজ্জলের মেয়ে তানিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে করার উদ্দেশে মাসুম তানিয়াকে তার ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তানিয়ার বাবা দলবল, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় তানিয়ার বাবা বাদী হয়ে মাসুম, মাসুমের ভাই খসরু ও ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।
×