ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দিল্লীর পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি

মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীদের

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মোদির নীরবতা নিয়ে  প্রশ্ন বিরোধীদের

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা ৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দিল্লীতে চলমান বিক্ষোভে এ দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। বিজেপি সমর্থিত একদল উগ্রহিন্দুবাদী এ হামলা চালায়। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে। দাঙ্গায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। রবিবার যখন দিল্লীতে সহিংসতা শুরু হয় তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত ছিলেন। খবর আলজাজিরা ও এপি অনলাইনের। এদিকে ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আপাতত থেমে গেলেও সহিংসতার আশঙ্কা এখনও রয়েছে। দিল্লীর যেসব জায়গায় দাঙ্গা হয়েছে সেসব স্থানে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মূলত ভারতীয় জনতা পার্টির স্থানীয় নেতা কপিল মিশ্র রবিবার উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পর পরই ঘটনার সূত্রপাত। দিল্লীর গুরু তেজবাহাদুর হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার সুনিল কুমার বলেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সোমবার থেকে এ হাসপাতালে মোট ২১৪ জন দাঙ্গায় আহত রোগী ভর্তি রয়েছেন। ইসলামী সম্মেলন সংস্থা ওআইসি ইতোমধ্যে দিল্লী সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এতে দিল্লীতে মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন সম্পত্তি ভাংচুরের নিন্দা এবং এই সহিংসতার শিকার পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। বিবৃতিতে ওআইসি মুসলিমবিরোধী সহিংসতার জন্য প্ররোচণাকারী ও জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা, মুসলিম নাগরিকের সুরক্ষা এবং সারা দেশে ইসলামী পবিত্র স্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান সোনিয়া গান্ধী, দিল্লীর চলমান ঘটনায় কেন্দ্রে ক্ষমতাসিন বিজেপি ও রাজ্যে ক্ষমতাসিন আম আদমি পার্টির নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একই সঙ্গে সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ দিল্লীর সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন বৃহস্পতিবার বলেছে, সিএএ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে বেছে বেছে মুসলিমদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। সব দেখেও সরকার নীরব রয়েছে। ভারত সফরে থাকাকালে দিল্লী পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোন মন্তব্য না করলেও তিনি ফিরে যাওয়ার পরই গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে এ অভিযোগ তুলল যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন বা ইউএসসিআইআরএফ। মার্কিন কমিশন বলেছে, ‘মুসলিমদের ওপর আঘাতের আবহে ভারত সরকারের উচিত ধর্মের উর্ধে উঠে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। তাছাড়া, সহিংসতা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক এ কমিশন। কমিশনের মতে, নৃশংস এবং লাগামছাড়া সহিংসতা ঠেকিয়ে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তবে মার্কিন কমিশনের এমন অভিযোগ খারিজ করে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
×