ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুতগতির মোটরবাইকে ইয়াবা পাচার

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 দ্রুতগতির মোটরবাইকে ইয়াবা পাচার

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নামলেই সকাল-সন্ধ্যা চোখে পড়ছে হাইস্পীড মোটরসাইকেলের ঝাঁক। বিত্তশালী বাবা-মার আদুরে ছেলেরা এ্যাডভেঞ্চার বেশে রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাচ্ছে বিলাসবহুল হাইস্পীড মোটরসাইকেল। দেশের এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে এদের গন্তব্য হলেও বেশিরভাগই বহন করছে ইয়াবা, কিনছে ৩/৪ লাখ টাকা দামের হাইস্পীড মোটরসাইকেল। এ ধরনের মোটরসাইকেলের পেছনে সুন্দরী তরুণীদেরও সাঁটিয়ে বসানো হয়। মূলত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে আলালের ঘরের দুলালেরা এভাবেই ইয়াবা পাচারে জড়িত। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশও এসব মোটরসাইকেলকে তল্লাশি করছে না। তবে পুলিশ যখন বিভিন্ন পরিবহনে ইয়াবা উদ্ধারের চেষ্টায় তল্লাশি করছে তখন ইয়াবা পাচারকারিরা এ্যাডভেঞ্চারের বেশ নিয়েছে। ২০১৭ সালের ২৩ আগস্টের পর কক্সবাজারে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে ঠাঁই দেয়ার পর থেকে হাইস্পীড মোটরসাইকেলে দূর-দূরান্তে যাতায়তের মাত্রা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পর্যটনের নামে ইয়াবা পাচারকারী ও মাদককারবারিরা কৌশল পরিবর্তন করেছে। ১০/১২টি মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে যশোর, বগুড়া ও ঢাকা হয়ে চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে কক্সবাজার ও টেকানাফ যাচ্ছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা ইয়াবাকারবারি ও পাচারকারী নিহত হওয়ার পর এমনকি ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণের পর নব্য ইয়াবাকারবারিরা পাচার কৌশল পরিবর্তন করেছে। আরও অভিযোগ রয়েছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ইয়াবা পাচারকারী ও মাদককারবারিরা দ্রুতগামী মোটরসাইকেলে চড়ে রথ দেখছে ও কলাও বিক্রি করছে। অর্থাৎ কক্সবাজার ঘোরার নামে ইয়াবা নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন বিভাগীয় জেলা শহরে। তবে এ ধরনের ১০/১২ মোটরসাইকেলের ঝাঁক দেখে পুলিশও দীর্ঘ ২/৩ বছর তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেনি। গত শনিবার পটিয়াতে দ্রুতগামী দুই মোটরসাইকেল আরোহীর কাছে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধারের পর পুলিশের নজর পড়েছে হাইস্পীড মোটরসাইকেলের ওপর। চট্টগ্রামের পটিয়া সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ পুলিশ টিমের অভিযানে ইয়াবা উদ্ধারে পর টনক নড়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশেরও। জেলা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংঘবদ্ধ মাদক চোরাকারবারি ও পাচারকারীরা জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাইস্পীড মোটরসাইকেলযোগে তারা ইয়াবা সরবরাহ করে। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তরুণীরাও থাকে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে তারা হাইস্পীড মোটরসাইকেলের ঝাঁক নিয়ে কক্সবাজার যায়। নির্দিষ্ট স্থান থেকে তারা ইয়াবা নিয়ে আবার ফিরতে শুরু করে গন্তব্যে। এ বিষয়ে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, কিছুদিন ধরে হাইস্পীড মোটরসাইকেলের ঝাঁক দেখে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চেকপোস্ট বসিয়ে শনিবার বিকেলে তল্লাশি অভিযান শুরু করি এ ধরনের মোটরবাইকে। তবে কৌতূহল বৃথা যায়নি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশিতে দুটি মোটরবাইক আরোহী চারজন থেকে উদ্ধার করা হয় এক কোটি বিশ লাখ টাকা মূল্যের ৪০ হাজার পিস ইয়াবাসহ বিদেশী মুদ্রা।
×