ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

হারকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন মরগান

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

হারকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন মরগান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে টি২০ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ দলীয় রান করেছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে সেই রান টপকানোর পথেই ছিল সফরকারী ইংল্যান্ড। কিন্তু শেষ ওভারে হাতে ৪ উইকেট নিয়েও তা পারেনি পেসার লুঙ্গি এনগিডির অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান করতে পেরেছে ইংলিশরা, হারিয়েছে ৩ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ১ রানে হেরে ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এখন পিছিয়ে ইংলিশরা। আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৭৭ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ইয়ন মরগানের দল নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৬ রানে থেমে যায়। এমন পরাজয়কে মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসেবেই দেখছেন মরগান। বছরের শেষভাগে টি২০ বিশ্বকাপ। তার আগে এই অভিজ্ঞতাকে বরং দারুণ কার্যকরী হিসেবেই ভাবছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আজ সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ জিতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় ইংল্যান্ড। ম্যাচটি ডারবানের কিংসমিডে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হবে। টেস্ট সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে স্বাগতিক প্রোটিয়াদের হারিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজে খেলতে নেমেই পরাজয় দেখে তারা। গত বছর বিশ্বকাপের পর সেটিই ছিল দু’দলের প্রথম ওয়ানডে। দ্বিতীয় ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলে নেয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। মরগানের দল ওয়ানডে সিরিজ ড্র করে উজ্জীবিত হয়েই নেমেছিল ইস্ট লন্ডনে প্রথম টি২০ ম্যাচ খেলতে। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মরগান। শুরুতে ইংলিশ পেসারদের নাজেহাল করেছেন দুই ওপেনার টেম্বা বাভুমা ও ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তারা ৪ ওভারে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই মঈন আলীর অফস্পিনে সাজঘরে ফেরেন কক। তিনি মাত্র ১৫ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩১ রান করেছিলেন। তবে এরপরও রানের গতি কমেনি। ৯.৩ ওভারেই দলীয় রান এক শ’ ছুঁয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন মনে হচ্ছিল ২০০ রান পেরিয়ে যাবে প্রোটিয়ারা। ইংল্যান্ডের ৬ নম্বর বোলার হিসেবে পেস অলরাউন্ডার বেন স্টোকস আক্রমণে এসেই সাফল্য এনে দেন। তিনি রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে (২৬ বলে ৩১) শিকার করলে রান তোলার গতি কমে যায় স্বাগতিকদের। মঈনের পর লেগস্পিনার আদিল রশিদও দুর্দান্ত বোলিং করেন। ২৭ বলে ৫ চারে ৪৩ রান করে বাভুমাও সাজঘরে ফিরে যান তার শিকার হয়ে। এরপর আর কেউ বড় স্কোর করতে পারেননি। জন-জন স্মুটস ২০ বলে ২০ রান করতে পারলেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে আয়ত্তের মধ্যেই রাখে ইংলিশরা। শেষদিকে এসে ক্রিস জর্ডানও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৬ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এটি টি২০তে এই ভেন্যুর সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জর্ডান ২৮ রানে ২ উইকেট নেন। আর মঈন ৪ ওভারে ২২ ও রশিদ ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ১টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে দলীয় ১৯ রানেই ডেল স্টেইনের আঘাতে প্রথম উইকেট হারায় ইংলিশরা। কিন্তু ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো ৭২ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথেই রাখেন। কিন্তু আন্দিলে ফেলুকোয়াওয়ের জোড়া আঘাতে কিছুটা ধীর হয়ে পড়ে তাদের রান তোলার গতি। বেয়ারস্টো ২৩ ও জো ডেনলি ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। তার আগে জেসন রয়ও ৩৮ বলে ৭ চার, ৩ ছক্কায় ৭০ রান করে সাজঘরে ফিরেন বিউরেন হেনড্রিকসের বলে। এরপর বড় কোন জুটি হয়নি। মরগানও লড়তে লড়তে ৩৪ বলে ৭ চার, ১ ছক্কায় ৫২ রান তোলার পর আউট হয়ে যান ১৯তম ওভারে। সেই ওভারে অবশ্য ১৬ রান তুলে নিয়ে জয়ের একেবারে কাছে চলে গিয়েছিল ইংলিশরা। কিন্তু ৬ বলে ৭ রান আর করতে পারেনি তারা ৪ উইকেট হাতে রেখেও। দুর্দান্ত বোলিং করেন এনগিডি। তিনি ৪ রান দেন, ২ উইকেট শিকার করেন এবং শেষ বলে যখন ৩ রান প্রয়োজন ইংলিশদের সেই বলেও রানআউট করে দেন রশিদকে। ফলে ৯ উইকেটে ১৭৬ রানে থামে ইংলিশরা। ১ রানের অবিশ্বাস্য এ জয়ে এনগিডি শেষ ওভারে যে অবদান রেখেছেন সে জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন। তিনি ৩০ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট ফেলুকোয়াও ও হেনড্রিকসের। জয়ের কাছে গিয়েও ১ রানের এমন পরাজয়ের পর ইংল্যান্ড অধিনায়ক মরগান বলেন, ‘দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলার উদাহরণ এটি। সুনির্দিষ্টভাবে যখন বিশ্বকাপ কাছে চলে এসেছে তখন এ ধরনের অভিজ্ঞতা যে কোন দলের জন্য খুবই মূল্যবান। আমার মনে হয় এমন ম্যাচ থেকে উভয় দল সম্পর্কে আমরা অনেক শিখতে পারি যখন কিছুটা চাপ থাকে।’ আর এই পরাজয়ের শিক্ষা থেকেই আজ ডারবানে ঘুরে দাঁড়াতে চান মরগান। সিরিজ হার ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আজ হারাতেই হবে তাদের।
×