ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা মাথা নোয়াবো না ॥ আব্বাস

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় আরব বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় আরব বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা

জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে বোকামি আখ্যা দিয়ে যে কোন মূল্যে এই ধরনের পদক্ষেপ রুখে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। খবর এপি ও নিউইয়র্ক টাইমসের। নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই শান্তি পরিকল্পনাকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্পের এই শান্তি পরিকল্পনা ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমান গুরুত্বপূর্ণ। ইসরাইল ও শান্তির জন্য এটি মহান পরিকল্পনা। নেতানিয়াহু অধিকৃত জর্ডান উপত্যকায় ইহুদী বসতি বাড়ানো হবে বলে জানান। ট্রাম্পের পরিকল্পনা আরব বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বহু আরব নেতা এই ধরনের পরিকল্পনাকে বোকামি ও শান্তির পথের অন্তরায় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ট্রাম্প এমন সময় এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেন দেশে তিনি অভিশংসনের মুখে রয়েছেন। আবার ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যখন তার দেশে দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ট্রাম্প একে ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের জন্য শুভ পদক্ষেপ আখ্যা দেন। ফিলিস্তিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, দেশটিকে এই ঐতিহাসিক সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত হবে না। জবাবে ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবর ইসরাইলের পক্ষে কথা বলে। তাই এই ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না। আব্বাস আরও বলেন, ‘আমরা হাজার বার বলব এই পরিকল্পনা নিরপেক্ষ নয়। ট্রাম্পের কাছে আমরা নতজানু হবো না ও আত্মসমর্পণ করব না। এই পরিকল্পনার বিস্তারিত এখনও প্রকাশিত হয়নি।’ ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার গত তিন বছর ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন। মূলত ট্রাম্পের মঙ্গলবার ঘোষিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা জ্যারেড কুশনারের মস্তিষ্কপ্রসূত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই পরিকল্পনা ঘোষণার আগে গাজা বিক্ষোভের শহরে পরিণত হয়। বহু বিক্ষোভকারীর ব্যানারে লেখা ছিল-ফিলিস্তিনীর মাটি বিক্রির জন্য নয়। মঙ্গলবার ট্রাম্প এই পরিকল্পনা পেশের পর বলেন, আমরা শীঘ্রই ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিস্তারিত জানাব। ৫০ পাতার এই শান্তি পরিকল্পনার ৩০ পাতা জুড়ে পশ্চিম তীর ও গাজায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলা আছে। মঙ্গলবার পরিকল্পনাটি ঘোষণার সময় ট্রাম্পের পাশে তিন আরব রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। বাহরাইন, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত থাকলেও আরব বিশ্বজুড়ে এই পরিকল্পনা বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এতে আরব বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। তবে মিসর ও জর্ডান এই পরিকল্পনায় যোগ দেবে বলে মনে করেন তিনি। সেই জর্ডান এই পরিকল্পনা নিয়ে শীতল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মিসর পরিকল্পনার বিস্তারিত উভয় দেশকে পড়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফিলিস্তিন ও ইসরাইলকে প্রথমে ট্রাম্পের এই পরিল্পনার বিস্তারিত পড়ে দেখতে বলেছে।
×