ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উদীয়মানদের জন্য নান্নুর পরামর্শ

প্রকাশিত: ১০:২৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 উদীয়মানদের জন্য নান্নুর পরামর্শ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চলমান বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) সবার নজর কেড়েছেন তিন তরুণ পেসার মেহেদী হাসান রানা, হাসান মাহমুদ ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। এদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হয়েছেন দুর্দান্ত বোলিংয়ে মেহেদী রানা। ৫ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে এককভাবে সেরা উইকেট শিকারি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বাঁহাতি পেসার মিতব্যয়ী বোলিংয়েও সবাইকে ছাড়িয়ে। আর গতির দিক থেকে এগিয়ে ঢাকা প্লাটুনের ডানহাতি পেসার হাসান। লাইন-লেন্থে মুকিদুলও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে এখন সর্বত্রই তাদের নিয়ে আলোচনা। তবে মাত্র কয়েকটি ম্যাচ দেখেই এই তরুণদের বিবেচনা করতে নারাজ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। এ কারণে তিনি তরুণদের জন্য দিয়েছেন পথ নির্দেশনা। দারুণ গতির ঝড় তুলেছেন হাসান। ২০ বছর বয়সী এ লক্ষ্মীপুরের ডানহাতি পেসার। চলতি বঙ্গবন্ধু বিপিএলে তার সর্বোচ্চ গতি উঠেছে ঘণ্টায় ১৪৪ কিলোমিটার। ৪ ম্যাচে ৪ উইকেট শিকার করলেও তিনি অবশ্য রান দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ খরুচে। ওভারপ্রতি রান খরচা করেছেন ৯.৩৫। শুধু গতির কারণেই আলোচনায় এসেছেন প্রতিভাবান এ তরুণ। রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে ৩ ম্যাচ খেলে ৩ উইকেট নিয়েছেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। রংপুরের ডানহাতি এ ১৯ বছর বয়সী পেসার লাইন-লেন্থেও নজর কেড়েছেন। উইকেট প্রাপ্তিতে তেমন সফল না হলেও ৮.৭২ ইকনোমিতে তিনি এগিয়ে হাসানের চেয়ে। তবে এ দুই তরুণকেই পেছনে ফেলেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ২২ বছর বয়সী চাঁদপুরের বাঁহাতি পেসার মেহেদী রানা। ৫ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে শীর্ষে তিনি এই মুহূর্তে। স্লগ ওভারে মিতব্যয়ী বোলিং এবং প্রয়োজনীয় মুহূর্তে ব্রেক থ্রু দেয়ার পাশাপাশি মিতব্যয়ী বোলিংয়েও সবার নজর কেড়েছেন তিনি। চলমান আসরে ১৯ ওভার বোলিং করে মাত্র ৬.৪৭ ইকনোমি আর ৯.৪৬ গড়ে উইকেটগুলো ঝুলিতে পুরেছেন মেহেদী। তারচেয়ে ইকনোমিতে এগিয়ে শুধু আফগানিস্তানের অফস্পিনার মুজিব উর রহমান। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে ৪ ম্যাচে ১৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ৫.২০ ইকনোমিতে ৫ উইকেট নিয়েছেন মুজিব। সবমিলিয়ে আলোচনার শীর্ষে মেহেদী। তবে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা জমিয়ে তুলেছেন হাসান ও মুগ্ধ। এ বিষয়ে হাসান বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ যে কয়জন দলের মধ্যে থাকতে পারবে। আমাদের স্কোয়াডের অনেকেই খেলছে নতুন। আমরা যারা এইচপিতে আছি ওদের মধ্যে অনেকেই এখানে খেলছে। আমাদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ কাজ করছে। সামনে কে কার আগে যেতে পারে।’ মেহেদী, মুকিদুল ও হাসানের মধ্যে যে অদৃশ্য প্রতিযোগিতা তাতে রান বন্যার মাঝেও বেশি আলোচনা মেহেদীকে নিয়ে তার মিতব্যয়িতা ও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের জন্য। এছাড়া কিছু দারুণ স্লোয়ার দিয়েও নজর কেড়েছেন তিনি। তবে এখুনি তাদের নিয়ে কিছু ভাবতে নারাজ বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক নান্নু। উদীয়মানদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কোন ইয়াংস্টারের কাজ হলো তাকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে যেন ১৫ বছর টানা স্ট্যান্ডার্ড ক্রিকেট খেলতে পারে। একটি বা দুটি ম্যাচ দিয়ে একজন ক্রিকেটারকে বিবেচনা করা যায় না। একজন ক্রিকেটারের ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৫ বছরের একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অন্তত ১০ বছরের একটা লক্ষ্য স্থির করতে হবে। সে যেন একবার দলে ঢুকলে দশ বছর দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। সুতরাং একটি, দুটি ম্যাচ দেখে, একটি বল করে বা দুর্দান্ত ডেলিভারি দিয়ে একজন ক্রিকেটারকে বিবেচনা করা যায় না।’ এমনটা বলেছেন খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক ও জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও। দু’দিন আগে মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তারা যেন ব্যক্তি পারফর্মেন্সের দিকে না তাকিয়ে টিমের দিকেই বেশি ফোকাস দেয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখনও অনেক ম্যাচ আছে। তাদের আরেকটু সুযোগ দেন। তাদের এখনই মাথার ওপর তুলে ফেলবেন না। সামনে বিশ্বকাপ না কি আছে এগুলো বলে চাপ দেবেন না। দুই-তিন বছর স্বাধীনভাবে খেলতে দেন, আপনি এমনিই বুঝতে পারবেন কে আসছে না কে বাদ পড়ছে। এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু টি২০ না, টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও।’
×