ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের নাগরিকত্ব বিল বিতর্কিত যে কারণে

প্রকাশিত: ০৮:৩৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

ভারতের নাগরিকত্ব বিল বিতর্কিত যে কারণে

তুমুল হৈচৈ, হট্টগোল ও প্রবল বিরোধিতার মধ্যে সোমবার গভীর রাতে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বহুল আলোচিত নাগরিক সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। বিলে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে যাওয়া শুধু অমুসলিমদের সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, এই বিল নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের রক্ষাকবচ। তবে বিশ্লেষকরা বিজেপির এই দাবির প্রতি সহমত পোষণ করতে পারছে না। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারতের মুসলিমদের কোণঠাসা করতেই এই বিল। এটি বিজেপির দীর্ঘ এজেন্ডার অংশ। এই সিটিজেনশিপ এ্যামেন্ডমিন্ট বিল বা (সিএবি) এখন ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পাঠানো হবে। এখানেও বিলটি পাসের সম্ভাবনা প্রকট, কারণ সেখানেও মোদিও বহু সমর্থক রয়েছেন। এটি আইনে পরিণত করতে উভয় কক্ষের অনুমোদন দরকার। সিএবি পাসের ভারতের বহু জায়গায় ইতোমধ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তুলোধুনা করেছে। অবশ্য ভারতের নাগরিক আইনের উদ্যোগ ৬৪ বছর আগেই নেয়া হয়েছিল। অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে ভারতের তৎকালীন সরকার এই উদ্যোগ নেয়। এই আইনের আওতায় এখন অবৈধ অভিবাসীদের ভারত ছাড়া করা হবে। অথবা তাদের বন্দীশালায় আটক থাকতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতে ১১ বছর বাস করা লোকেরা দেশটির নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। এই সুবিধার আওতায় মুসলমানদের রাখা হয়নি। শুধু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রীস্টান এই ছয় ধর্মের লোকেরা এই সুবিধার আওতায় পড়বে। বিশ্লেষকরা মোদি সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছে, শুধু ধর্মীয় বিশ্বাস নাগরিকত্ব পাওয়ার কারণ হতে পারে না। কারণ ভারতের সংবিধানে সকল ধর্মের মানুষের সমানাধিকারের কথা বলা আছে। দিল্লীর আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম ভাটিয়া বলেন, এই বিল হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন তৈরির পাঁয়তারা ছাড়া আর কিছু নয়। বিলটি ভারতের দীর্ঘ দিনের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির ওপর পেরেক ঠুঁকে দিল। -বিবিসি
×