ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির জাদুতে বার্সার জয়

প্রকাশিত: ১০:০১, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 মেসির জাদুতে বার্সার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একবার জাদু দেখালেন লিওনেল মেসি। রবিবার তার করা একমাত্র গোলের সৌজন্যেই এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে পরাজিত করে বার্সিলোনা। সেই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে টপকে আবারও স্প্যানিশ লা লিগার শীর্ষস্থানটা দখল করে নেয় আর্নেস্টো ভালভার্ডের শিষ্যরা। বার্সিলোনা ছাড়াও এদিন জয়ের দেখা পেয়েছে গেটাফে, ওসাসুনা, এ্যাথলেটিক বিলবাও এবং সেভিয়া। সেভিয়াও বার্সার মতো ১-০ গোলে হারিয়েছে লেগানেসকে। এ্যাথলেটিক বিলবাও ২-০ ব্যবধানে অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে গ্রানাডার বিপক্ষে। এছাড়া ওসাসুনা ৪-২ গোলে এস্পানিওলকে এবং গেটাফে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লেভান্তেকে। চলতি মৌসুমের শুরুতে ১২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ছেড়ে বার্সিলোনায় যোগ দিয়েছিলেন এ্যান্থনি গ্রিজম্যান। মাদ্রিদের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ছাড়ার পর রবিবারই প্রথম পুরনো মাঠে ফিরে এসেছিলেন এই ফরাসী তারকা। তবে ম্যাচের নায়ক ছিলেন যথারীতি লিওনেল মেসি। তবে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত। নিজেদের মাঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে বেশ ভালভাবেই খেলতে থাকে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। সফরকারীদের কোন সুযোগ তৈরি করতে দেয়নি তারা। যে কারণে গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে আলভারো মোরাতাকে বাজেভাবে চ্যালেঞ্জ করে বসেন কাতালান ক্লাবটির স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। একই অপরাধে জেরার্ড পিকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড থেকে কোন রকমে রক্ষা পায়। তা নাহলে হয়তো বাকি সময়টা বার্সাকে ১০ জন নিয়েই খেলতে হতো। তার আগে মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানও দুইবার রক্ষা করে বার্সিলোনাকে। মারিও হারমোসো এবং মোরাতাকে ফিরিয়ে দিয়ে টার স্টেগান কার্যত স্বাগতিকদের হতাশ করে তুলেন। হারমোসোর একটি শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। তবে ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে আর কোন ভুল করেননি লিওনেল মেসি। ডানদিক থেকে এ্যাটলেটিকোর দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সুয়ারেজের সঙ্গে বল আদান প্রদান করে বার্সাকে জয়সূচক গোল উপহার দেন এলএম টেন। ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে এটাই তার প্রথম গোল। শেষ পাঁচ ম্যাচে এটা মেসির ষষ্ঠ গোল। চলতি মৌসুমের ১২তম গোল। এ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে এই নিয়ে ২৭ লীগ ম্যাচে ২৫ গোল করলেন তিনি। সবমিলিয়ে মাদ্রিদের এই ক্লাবটির বিপক্ষে ৩০ গোল করার রেকর্ড গড়লেন এলএম টেন। যা তার কোন ক্লাবের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। লিওনেল মেসি এখন পর্যন্ত কোন ক্লাবের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ গোল করতে সক্ষম হয়েছেন। সেটা সেভিয়ার বিপক্ষে। এমন কষ্টের জয়েও সন্তুষ্ট বার্সিলোনা। ম্যাচের শেষে লিওনেল মেসিকে আলাদা করেই প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কাতালানদের অভিজ্ঞ কোচ। এ প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে বার্সার কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে বলেন, ‘এই ম্যাচে সবকিছুই ছিল। দুই দলই সমানভাবে খেলেছে। তবে লিও’র মতো একজন খেলোয়াড় যে কোন দলকেই এগিয়ে রাখবে। আমরা সেই সুবিধাটাই পেয়েছি।’ গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে কাতালানদের কোচ এ সময় আরও বলেন, ‘তিন পয়েন্ট এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানসিক দিকটা। এই জয় বড়দিনের সময়টাতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।’ মেসির গোলে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে আবারও লীগ টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বার্সিলোনা। পয়েন্ট টেবিলে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে সমান ৩১ পয়েন্ট অর্জন করে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে রয়েছে কাতালান ক্লাবটি। অন্যদিকে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ নেমে গেছে ষষ্ঠ স্থানে। এই সময়ে শীর্ষ লড়াইয়ে ফিরে আসতে হলে পাহাড় সমান পথ অতিক্রম করতে হবে ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যদের। ১৫ ম্যাচ শেষে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট এখন ২৫। তাদের আগে রয়েছে সেভিয়া, রিয়াল সোসিয়েদাদ ও এ্যাথলেটিক বিলবাও। মৌসুমের অর্ধেক সময়ের শেষে শীর্ষ পাঁচের বাইরে ছিটকে যাওয়াটা খুবই হতাশার। তাছাড়া মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে তারা বার্সা ও রিয়াল মাদ্রিদ উভয় দলের বিপক্ষেই ঘরের বাইরে খেলবে। এ সম্পর্কে এ্যাটলেটিকোর কোচ সিমিওনে বলেন, ‘আমাদের পয়েন্ট দরকার। আমরা তাদের থেকে খুব একটা দূরে নেই, কিন্তু আমরা চিন্তিত। যেভাবে দল খেলেছে তাতে আমি খুশি। কিন্তু এতে যথেষ্ট পয়েন্ট আসছে না বলে আমি হাসতে পারছি না।’ এর আগে দিনের শুরুতে তৃতীয় স্থানে থাকা সেভিয়া ১-০ গোলে লেগানেসকে পরাজিত করে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে। ৬৩ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক দিয়েগো কার্লোস। এই জয় রিয়াল ও বার্সার থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে সেভিয়া। যদিওবা রিয়াল-বার্সার থেকে এক ম্যাচ বেশি খেলেছে তারা।
×