ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বলিভিয়ার ক্ষমতায় শূন্যতা তৈরি হতে পারে

ইভো মোরালেস ও তার উত্তরসূরিদের পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১২ নভেম্বর ২০১৯

ইভো মোরালেস ও তার উত্তরসূরিদের পদত্যাগ

বলিভিয়া এক আকস্মিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার যুগে প্রবেশ করেছে। আদিবাসী প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস সেনাবাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে সোমবার পদত্যাগ করলে এ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। প্রায় ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তিনি পদত্যাগ করেন। একইসঙ্গে সাংবিধানিকভাবে তার উত্তরসূরীরাও পদত্যগ করেছেন। রবিবার মোরালেসের পদত্যাগের ঘোষণার পর সমাজতান্ত্রিক এ নেতার বিপক্ষের লোকজন রাস্তায় উল্লাস করে। মোরালেসের পদত্যাগকে তারা গণতন্ত্রের বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করে। তিনি প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদের সময়সীমা বাতিল করেন এবং অক্টোবরের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে নিজেকে জয়ী দাবি করেন। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিকটে এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা উদযাপন করছি যে, বলিভিয়া মুক্ত। -বিবিসি ও রয়টার্স তবে মোরালেসসহ অনেকেই এটাকে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপে বিবর্ণ যুগে প্রত্যাবর্তন হিসেবেই দেখছেন। ল্যাটিন আমেরিকান সামরিক বাহিনীগুলো ওই অঞ্চলে দীর্ঘদিন আধিপত্য করেছে। সামরিক বাহিনী প্রধান জেনারেল উইলিয়ামস কালিমান শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনাতে মোরালেসকে পদত্যাগের আহ্বান জানানোর পরই শুধু তিনি পদত্যাগ করেন। এটা তাতক্ষণিকভাবে পরিষ্কার নয়, কে মোরালেসের উত্তরসূরী হবেন অথবা কিভাবে তার উত্তরসূরী নির্বাচিত হবে। গতমাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিতর্কিত জয় নিয়ে অস্থিরতার জেরে তিনি পদত্যাগ করলেন। রবিবার আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ২০ অক্টোবরের ভোটে জালিয়াতির স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে জানিয়ে নির্বাচনের ফল বাতিলের আহ্বান জানায়। তাদের সঙ্গে একমত হয়ে মোরালেস নির্বাচন কমিশন সংস্কার করার পর নতুন নির্বাচনের ডাক দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু তার এ ঘোষণা মেনে না নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা, সেনাবাহিনী প্রধান ও পুলিশ প্রধান তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। এরপর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে মোরালেস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাই ও বোনদের ওপর হামলা বন্ধ করুন, জ্বালাও পোড়াও ও হামলা বন্ধ করুন।’ এর আগে তার মিত্রদের কয়েকজনের ওপর হামলা হয়। তাদের বাড়িতেও আগুন দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তারা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বলিভিয়া অস্থির হয়ে ছিল। নির্বাচনের দিন রাতে ভোট গণনা ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মোরালেস প্রথম পর্বে সরাসরি জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন। বিরোধীদলগুলো নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে রাস্তায় নেমে আসে। তারপর থেকে চলা অস্থিরতায় অন্তত তিনজন নিহত হন। এক পর্যায়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উর্দি পরা কিছু পুলিশ কর্মকর্তাকেও অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) রবিবার জানায়, ব্যাপক জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে আর তারা ভোটের ফলাফলের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারবে না। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মোরালেসের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করে।
×