স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) রোগীদের জন্য পথ্য সরবরাহের ঠিকাদার নির্বাচিত করা হয়েছে ইচ্ছেমতো। বিবেচনায় নেয়া হয়নি দরপত্রের সঙ্গে দাখিল করা পণ্যের দর। এ নিয়ে ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মোঃ সুমন নামের একজন ঠিকাদার ইতোমধ্যে আদালতে মামলা করেছেন। এছাড়া বাতিলের কারণ জানতে চেয়ে এমদাদুল হক (বর্তমানে তিনি ৯টি আইটেম সরবরাহ করছেন) নামের এক ঠিকাদার হাসপাতালের পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সম্প্রতি আটটি গ্রুপে মোট ৩৮ আইটেমের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদাররা এতে অংশ নিয়ে সরবরাহ করতে দরপত্র জমা দেন। ৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র বাক্স খোলা হয়। ২৬ অক্টোবর ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু কার্যাদেশে হাতে পাওয়ার পর ধরা পরে নানা অনিয়ম। সর্বনি¤œ ঠিকাদারকে কাজ না দিয়ে উচ্চ দরে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়েছে।
দরপত্রের কার্যাদেশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সবজি গ্রুপে আলু ও পেঁপের মূল্য একই হওয়ায় লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু পাউরুটির দরে শফিকুল ও আজাদ আলী একই দর দেন। নিয়মানুযায়ী সেখানেও লটারি হওয়ার কথা। কিন্তু দরপত্র কমিটি লটারি না করে শফিকুলকে সরবরাহের আদেশ দেন। আজাদ আলী তার কাগজপত্রে সবজি, মাংস, রেশন গ্রুপে কাজ পান। কিন্তু পাউরুটি সরবরাহের গ্রুপে তাকে বাদ দেয়া হয়। মুরগির মাংস সরবরাহে মোঃ সুমন সর্বনিম্ন প্রতি কেজি ২১৩ টাকা দর দেন। কিন্তু সরবরাহের কাজটি শফিকুল এন্টারপ্রাইজকে দেয়া হয় ২১৪ দরে। এনিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। ঠিকাদারদের অভিযোগ, আটটি গ্রুপের মধ্যে চারটি গ্রুপের দরপত্র খোলা হয় প্রকাশ্যে। অন্য চারটি গ্রুপের দরপত্র খোলা হয় গোপনে। ঠিকাদার এমদাদুল হক অভিযোগ করেন, মাছ, দুধ, স্টেশনারি ও বিবিধ কাজের দরপত্র গোপনে খোলা হয়। যারা কাজ পেয়েছেন, তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কে কত দর দিয়েছিলেন, তা জানানো হয়নি। এ নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
দরপত্র ডকুমেন্টে দেখা যায়, রেশন গ্রুপে শাহাবুদ্দিন হলুদের দর দেন প্রতি কেজি ৫৮ টাকা। কিন্তু কাজটি ১৭০ টাকা দর দেয়া এমদাদুল হককেও দেয়া হয়নি। ২২৫ টাকা দর দেয়া আজাদ আলীকে কাজটি দেয়া হয়েছে। জিরা প্রতি কেজি ১২০ টাকা দর দেন শাহাবুদ্দিন। কিন্তু সরবরাহের কাগজে তাকে দর দেয়া হয়েছে ৩৫০ টাকা প্রতি কেজি। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সাইফুল ফেরদৌস জানান, যারা কাজ পান না, তারা অভিযোগ করেন। এটাই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবে পথ্য সরবরাহের দরপত্র নিয়ম মেনে খোলা হয়েছে। সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যোগ্যদের।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: