ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

পূর্বাচলের শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামেও হতে পারে বিশ্বকাপের ম্যাচ

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৭ অক্টোবর ২০১৯

পূর্বাচলের শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামেও হতে পারে বিশ্বকাপের ম্যাচ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগামী আসরটিই হবে ভারতে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। এবার প্রথমবারের মতো উপমহাদেশের কোন দল এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে। তবে বাংলাদেশ চাচ্ছে ২০১১ সালের মতো ২০২৩ সালের বিশ্বকাপেরও কয়েকটি ম্যাচ বাংলাদেশে আয়োজন করতে। যদি ভারত ক্রিকেট বোর্ডকে রাজি করা যায় তাহলে পূর্বাচলে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে যে স্টেডিয়াম হবে সেই স্টেডিয়ামে খেলাগুলো হবে। এমনটিই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বিসিবি সভাপতি অবশ্য এখনই কোন কিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে, তা বলেননি। কারণ, আগে তো শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামটি হতে হবে। এই স্টেডিয়াম হলেই না ভারত ক্রিকেট বোর্ডের কাছে প্রস্তাব রাখা যাবে। অবশ্য ২০২৩ সালের মধ্যে স্টেডিয়াম হয়ে যাওয়ার কথাও। সব ঠিক থাকলে কাজ শুরু হয়ে গেলে ২০২৩ সালের মধ্যে স্টেডিয়াম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালোই। তখন এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করেই বিশ্বকাপের ম্যাচ, অন্তত বাংলাদেশের ম্যাচগুলো শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামে আয়োজনের জন্য ভারত ক্রিকেট বোর্ডকে দেয়া যেতে পারে। টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক হতে চায় বিসিবি। দুবাইয়ে আইসিসি সভা শেষে দেশে ফিরে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। যদি আমাদের নতুন স্টেডিয়ামটি (পূর্বাচলে) করতে পারি, তাহলে ভারতকে বলার জন্য সহজ হবে যে, নতুন স্টেডিয়াম বলে এখানে কিছু খেলা নিয়ে আসব। সম্ভাবনা আছে, একেবারে যে নেই এমনটা নয়। এটা নিয়ে ওদের কারও সঙ্গে কথা হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি।’ বিসিবি সভাপতি যেহেতু সম্ভাবনা আছে বলছেন, তখন না বুঝে নিশ্চয়ই বলেননি। বিশ্বকাপের আগে স্টেডিয়াম হয়ে যাওয়া চূড়ান্ত হলেই এখন কাজ হয়ে যায়। এর আগে তিনবার উপমহাদেশের মাটিতে বিশ্বকাপ হয়েছে। ১৯৮৭, ১৯৯৬ ও ২০১১ সালে। একবারও কোন দেশ এককভাবে আয়োজন করতে পারেনি। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে ভারত, পাকিস্তান যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা আয়োজন করেছে। আর ২০১১ সালের বিশ্বকাপে নিরাপত্তার বেড়াজালে পড়ে পাকিস্তান আয়োজক থেকে বাদ যায়। ভারত, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আয়োজক হিসেবে যোগ হয় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচ হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশও সহআয়োজক থাকে। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করবে ভারত। বিসিবি চাচ্ছে, কোনভাবে যদি আয়োজক হওয়া যায়। নকআউট পর্বের কোন ম্যাচ না হোক, লীগপর্বের ম্যাচ আয়োজন করা গেলেও হয়। শুধু বাংলাদেশের ম্যাচগুলো আয়োজন করার সুবিধা পেলেও হবে। সেই ম্যাচগুলো শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামে হবে। ভারত ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি হতে চলেছেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তার দিকেই এখন তাকিয়ে আছে বিসিবি। বিসিবি সভাপতি যেমন বলেছেন, ‘এটি খুব ভাল খবর যে সৌরভ গাঙ্গুলী বিসিসিআইয়ের সভাপতি হয়েছে। আমাদের জন্য এটা খুবই ভাল হবে। আমাদের সঙ্গে তার সবসময়ই ব্যক্তিগত পর্যায়ে সম্পর্ক ছিল। এটা আরও ভাল হবে।’ অবশ্য ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের আগে যেহেতু নারীদের যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপ রয়েছে, সেদিকেই বিশেষ নজর দিতে চান বিসিবি সভাপতি। আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশে হবে নারী অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। নারীদের ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপের পর এবার যুব বিশ্বকাপও বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে। আইসিসি প্রথমবারের মতো আসরটি আয়োজন করতে চলেছে। সেটিই হবে বাংলাদেশে। আইসিসি সভায় প্রথম আয়োজক এবং স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশই মনোনীত হয়েছে। বাংলাদেশ এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপ যৌথভাবে, এককভাবে টি২০ বিশ্বকাপ এবং বিশ্ব যুব ক্রিকেট আসর সফলভাবে আয়োজন করেছে। প্রশংসাও কুড়িয়েছে। নারী যুব বিশ্বকাপ আগে কখনও হয়নি। প্রথমবারেই আয়োজক বাংলাদেশ। নিজ দেশে খেলা। ভাল করতে হবে। তাই যুব নারী ক্রিকেট দল গঠন নিয়েই বেশি নজর আছে বিসিবির। বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘আপনাদের বলার মতো আইসিসি তো সব স্টেটমেন্ট দিয়েছেই। আমাদের জন্য একটি জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ এখানে, সেটা হচ্ছে অনুর্ধ-১৯ নারী বিশ্বকাপ।’ বিসিবি সভাপতিকে বাংলাদেশ নারী ও পুরুষ দলের পাকিস্তান সফর নিয়েও কথা বলতে হয়েছে। তিনিও সরকারের সবুজ সঙ্কেতের দিকেই নজর দিয়েছেন। জানান, ‘আইসিসি সভায় পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে কোন কথা হয়নি। আমাদের একটি পর্যবেক্ষণ দল যাবে। পর্যবেক্ষণ দলের দেয়া রিপোর্টের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। নিরাপত্তা দল যাচ্ছে, আমরা যতটা শুনেছি যে একটু দেরি করতে হচ্ছে। ওরা একটি চিঠি দিয়েছে যে ১৭ তারিখে (পর্যবেক্ষক) দল যাবে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা আসলে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এটা পুরোটা আমাদের হাতে না। নিরাপত্তা আমাদের কাছে বেশি প্রাধান্য পাবে। সেটা যদি ঠিক না থাকে তাহলে কোন লাভ হবে না।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘নিরাপত্তা ইস্যু সমান, সেটি নারী দল, অনুর্ধ-১৭; যে দলই হোক না কেন। নিরাপত্তার ক্লিয়ারেন্স যদি আমরা পাই তাহলে ওখানে দল পাঠাতে পারব। এমনিতে পাঠাতে আমাদের কোন অসুবিধা নেই। আমরা পুরো প্রস্তুত আছি। তবে প্রথমে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছ থেকে নিরাপত্তার ক্লিয়ারেন্সটা দরকার।’
×