ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটেনের পতাকাবাহক দিনা স্মিথ

প্রকাশিত: ১২:০০, ৪ অক্টোবর ২০১৯

ব্রিটেনের পতাকাবাহক দিনা স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে রৌপ্য জিতেছিলেন দিনা এ্যাশার-স্মিথ। দারুণ সম্ভাবনা জাগালেও শেলি ফ্রেজার-প্রাইসের সঙ্গে সেই ইভেন্টে পেরে ওঠেননি তিনি। তবে ২০০ মিটার স্প্রিন্টে বাজিমাত করলেন দিনা স্মিথ। কাতারের দোহায় দাপুটে পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে ২০০ মিটারে স্বর্ণপদক জেতেন গ্রেট ব্রিটেনের এই সফল প্রতিনিধি। সেই সঙ্গে গড়েন নতুন ইতিহাস। ব্রিটেনের প্রথম প্রমীলা এ্যাথলেট হিসেবে এই ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন তিনি। বুধবার ২১.৮৮ সেকেন্ডে ফিনিশিং লাইন স্পর্শ করে ২০০ মিটারে স্বর্ণপদক জয়ের নতুন নজির গড়লেন দিনা এ্যাশার-স্মিথ। ২২.২২ সেকেন্ডে ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করে রৌপ্য জিতেছেন ব্রিটানি ব্রাউন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন সুইজারল্যান্ডের মুজিঙ্গা কামবুঞ্জি। ফিনিশিং লাইন স্পর্শ করতে তার সময় লেগেছে ২২.৫১ সেকেন্ড। অলিম্পিকে কিংবা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ব্রিটেনের কোন প্রমীলা এ্যাথলেট হিসেবে সর্বশেষ পদক জিতেছিলেন লিনফোর্ড ক্রিস্টি ১৯৯৩ সালে স্টুটগার্টে। তার দীর্ঘ ২৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ব্রিটেনকে কোন পদক উপহার দেয়ার নতুন নজির গড়লেন দিনা স্মিথ। এমন কীর্তি গড়ে বাকরুদ্ধ ২৩ বছরের এই তরুণী। নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এটার জন্য স্বপ্ন দেখতাম আমি। অথচ সেটাই এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে।’ দিনা স্মিথের বয়স খুব অল্প। ভদ্র এ্যাথলেট হিসেবে নিজের দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় খেলোয়াড়ও তিনি। প্রকৃতিগতভাবেই মেধাবী হিসেবে স্বীকৃত দিনা। দারুণ আত্মবিশ্বাসী তরুণ প্রতিভাবান এই এ্যাথলেট কঠোর পরিশ্রমীও। বুধবার ঘুম থেকে উঠেও নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ তারকা বলেন, ‘আজ ঘুম থেকে উঠেই ভাবতেছিলাম এই সেই দিন। এই মুহূর্তের জন্যই আমার সকল পরিশ্রম। আমার কোচ জন ব্ল্যাকি এবং আমি জানতাম; আমি এটা করতে পারব।’ শেষ পর্যন্ত পেরেছেন। এখন আরও বড় স্বপ্ন পূরণের দিকে হাঁটবেন দিনা এ্যাশার স্মিথ। এদিকে ২০০ মিটার পুরুষ এককে স্বর্ণপদক জিতেছেন নোয়া লাইস। সোনা জেতার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে আমেরিকার স্প্রিন্টার জানালেন, ‘দয়া করে আমাকে কেউই নতুন বোল্ট বলবেন না। আমি নোয়া লাইস।’ ২০০ মিটারে সোনা জয়ের পরে গ্যালারিতে বসে থাকা মা’কে জড়িয়ে ধরেন আমেরিকার ২২ বছরের এই তরুণ প্রতিভাবান এ্যাথলেট। যার এ্যাথলেট জীবন শুরু হয়েছিল এই মায়ের হাত ধরেই। ২০০ মিটারে বিশ্বের নতুন তারা তিনি। প্রথম জীবনে যার শুরু হয়েছিল জিমন্যাস্ট হিসেবে। অনুর্ধ ২০ বিশ্বমিটে সোনা জয়ের পর সিনিয়র বিশ্ব মিটে তার সোনা জয়ের পর উসাইন বোল্টের সঙ্গে তুলনা শুরু হয়। বোল্ট অবসর নেয়ার পরে দোহা বিশ্ব মিটে তিনি দারুণভাবে রয়েছেন আলোচনা ও তুলনায়। এখানেই আপত্তি নোয়া লাইসের। তার কথায়, ‘বোল্টকে দেখে বড় হয়েছি। বোল্ট আমার হৃদয়ে। আমার বাড়ির দেয়ালে। বোল্ট আমার গাড়িতে। তবুও আমি নতুন বোল্ট নই। কিংবদন্তি এ্যাথলেটের সঙ্গে কোন তুলনা টানবেন না।’ ২০০ মিটারে তার টাইমিং ১৯.৮৩ সেকেন্ড। বোল্টের তুলনায় ভাল। শেষবার বোল্ট ২০০ মিটার সময় করেছিলেন ১৯.৮৭ ২০১৫ সালে বেজিং বিশ্ব মিটে। যেখানে ২০০ মিটারে শেষ সোনা জিতেছিলেন। তারপর সোনা জিতেছিলেন রিও অলিম্পিকে। যদিও ২০০ মিটারে বোল্টের রেকর্ড অক্ষত। ১৯.১৯ সেকেন্ড টাইমিং এখনও ভাঙ্গতে পারেননি কেউই। লাইস না বললেও বোল্টের সঙ্গে তার তুলনা শুরু হয়ে গেছে। দোহা বিশ্ব মিটে ২০০ মিটারে লাইসের টাইমিং দারুণ না হলেও শুরুতেই সোনা জয়ের নজির খুব বেশি নেই। হাজার এ্যাথলেটের মধ্যে লাইসকে বাছতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তার ধূসর মাথার চুল অনেকটা জাপানের কমিক চরিত্র গোকুর স্টাইলে। আন্তর্জাতিক এ্যাথলেটিক্স সংস্থার প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান কো প্রশংসা করেছেন লাইসের। তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিকতা দেখাতে পারলে অবশ্যই ভাল ব্যাপার। লাইসের সবে শুরু। এখনও অনেক পথ যেতে হবে।’ লাইসও সে কথাই বলছেন, ‘বোল্টের আরও অনেক সাফল্য ছিল। আমার এখনও তা নেই। তাই এখনও তুলনা টানা ঠিক হবে না।’
×