ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য ফাঁসকারী সিআইএ কর্মকর্তা

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

তথ্য ফাঁসকারী সিআইএ কর্মকর্তা

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টেলিফোন কথোপকথনের তথ্য ফাঁস করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র একজন কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসেও কিছুদিন কাজ করেছেন। তবে আপাতত তার নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। আর এ দুই নেতার মধ্যে কথোপকথন গোপন করার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট ও রয়টার্সও এই তথ্য ফাঁসকারীকে সিআইএ’র একজন কর্মকর্তা বলে অভিহিত করেছে। গত ২৫ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভেøাদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। ওই সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের জন্য ভেøাদোমির জেলেনস্কিকে বারবার চাপ দেন। এ কাজের জন্য ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। কথা বলা শেষে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার কথোপকথনের রেকর্ড মুছে দিতে হোয়াইট হাউসকে নির্দেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু বিষয়টি ফাঁস করেন সিআইএ’র এই কর্মকর্তা। এই তথ্য প্রকাশের পর ডেমোক্র্যাট শিবির ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্ট করার জন্য তদন্তের দাবি তুলেছে। এদিকে জনগণের কাছ থেকে তথ্য লুকানোর চেষ্টা করায় হোয়াইট হাউসের নিন্দা করেছেন স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন ডেমোক্র্যাটিক দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইছেন। সম্প্রতি তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বাইডেনকে ট্রাম্প তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন। এ কারণে ট্রাম্প বাইডেনের জনপ্রিয়তা হ্রাস করাতে এই পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সিআইএ’র এই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার এই তথ্য ফাঁস করে জানান, ভেøাদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের কথোপকথনের রেকর্ড হোয়াইট হাউসের প্রচলিত কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হয়নি। এটি অপর একটি কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হয়। খবর বিবিসি ও সিএনএন অনলাইনের। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত এ ধরনের অভিযোগকে স্রেফ ধাপ্পাবাজি ও তার বিরুদ্ধে অপর একটি ভৌতিক তদন্ত বলে আখ্যা দেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের ঠিক কয়েকদিন আগে দেশটির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৪০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা প্রস্তাব নিজ উদ্যোগে আটকে দেন ট্রাম্প। তবে জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তে ভেøাদোমির জেলেনস্কিকে রাজি করাতে এই প্রস্তাব আটকে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন ট্রাম্প। এদিকে এসব তথ্য ফাঁসকারী সিআইএ’র কর্মকর্তা প্রসঙ্গে কিছু প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তার আইনজীবী। এই আইনজীবীর দাবি, এই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ হলে তিনি ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। ২৫ জুলাই এই কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি জানতে চাই তথ্য ফাঁসকারী লোকটি কে? এ সময় উপস্থিত অন্যদের উদ্দেশ করে ট্রাম্প বলেন, আপনারা কি আমাকে এই তথ্য ফাঁসকারীর তথ্য দিতে পারেন? ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার কয়েকদিন আগে দেশটিতে সামরিক সহায়তা বন্ধের বিষয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করে নিলেও এটি বাইডেন বিষয়ক তদন্তে চাপ দিতে ব্যবহার করা হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। অভিশংসন নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের পদক্ষেপে অনুমোদন দেয়া উচিত হবে না বলে মত দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা দেশের জন্য দুর্নাম নিয়ে আসছে, এটির অনুমোদন দেয়া উচিত হবে না। এটি বন্ধের উপায় থাকা উচিত, হয়ত আদালতের মাধ্যমে আইনীভাবেই বৃহস্পতিবার তথ্য ফাঁসকারীর অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই সময় সিআইএ’র এই কর্মকর্তাকে গুপ্তচর আখ্যা দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অতীতে গুপ্তচরদের যেভাবে মৃত্যুদণ্ড দিত, সে প্রসঙ্গ টেনে এনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘পুরনো দিনে যখন আমরা স্মার্ট ছিলাম তখন কি করা হতো, আপনারা জানেন? গুপ্তচর ও রাষ্ট্রদ্রোহিতাকে আমরা এখনকার চেয়ে খানিকটা ভিন্নভাবে মোকাবেলা করতাম।’ বৃহস্পতিবার তথ্য ফাঁসকারীর প্রকাশিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ইউক্রেনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যকলাপ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। এতে আরও বলা হয়, বিদেশী কোন নেতার সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল হোয়াইট হাউস।
×