ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা

এই শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠে আমার দুটি লেখা বেরিয়েছিল বেশ আগে। একটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনামলে- আরেকটি তৃতীয় মেয়াদে। চতুর্থ মেয়াদের শাসনামলেও এই শিরোনামটিকেই বেছে নিতে হলো বাস্তবতার নিরিখে। শিরোনাম বেছে নেয়ার দুটি দিক আছে- ইতিবাচক ও নেতিবাচক। ইতিবাচক দিকটি প্রথমে আলোচনা করতে চাই- তবে এক্ষেত্রে একটু পিছন ফিরে তাকাতে হবে। ১৭ মে, ১৯৮১। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে ফিরে এলেন শেখ হাসিনা। অনেক দুঃখ-কষ্ট বেদনাকে সাথী করে শুধু স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকে আশু লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করলেন। কিন্তু তা করতে গেলে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এ পথ কন্টকময়, প্রতিটি মুহূর্তে সরীসৃপের দংশন এবং পিছনে যাবার অযুত সম্ভাবনা। ক্ষমতায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতারা। হায়েনার উদ্ধত থাবা খুঁজে বেড়ায় তাকে। কিন্তু দমবার পাত্র নন তিনি। তিনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা নীলকণ্ঠ। সঙ্গে আছে বাংলার তেরোশ’ নদী, উন্মুক্ত প্রান্তর, শিশুর হাসি, কোকিলের ডাক, কোটি জনতা, লাখ লাখ ত্যাগী কর্মী আর লড়াইয়ের ইতিহাস। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল জনতা, চাঙ্গা হয়ে উঠল কর্মীর দল আর প্রিয় সংগঠন। ষড়যন্ত্র যে নেই তাও কিন্তু নয়। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন অন্তত পঁচিশ বার। চলার পথ কিন্তু থেমে নেইÑ কদম কদম করে এগিয়ে চলছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রজ্ঞাÑ অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ, সৎ, সাহসী, মানবিক বোধসম্পন্ন, দেশপ্রেমিক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনতার সংগ্রামে একে একে বিদায় নিলেন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ এবং গণতন্ত্রের মুখোশধারী বেগম খালেদা জিয়া। মাঝখানে জন রায়ে ১৯৯৬ সালে একবার ক্ষমতায় এলেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ একুশ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আবার জেগে উঠল। মানুষ আশায় বুক বাঁধলো। স্বল্প সময়ে অনেক কাজ হলোÑ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তি, গঙ্গার পানি চুক্তি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, আশ্রয়ণ প্রকল্প, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিএফ কার্ড চালু, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধি ও মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মান, শিক্ষা ও নারী উন্নয়নের ব্যাপক উদ্যোগ। কিন্তু ষড়যন্ত্র তো চলমান। ২০০১-এর নির্বাচনে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে ভূতের ভোটে আবারও হারল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতার মঞ্চে ফের স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে বিএনপি। বিরোধীদল ও সংখ্যালঘুদের হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলÑ এ যেন একাত্তরের পুনরুত্থান। খালেদা জিয়ার প্রশ্রয়ে যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফালন এবং দেশব্যাপী জঙ্গীগোষ্ঠীর উত্থান মানুষকে শঙ্কিত করে তুলল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং শ্রেণী পেশার মানুষ ও সামাজিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলো। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবেÑ চাই মানুষের পছন্দের সরকার। সংবিধানের অপব্যাখ্যা করে বিএনপির ক্ষমতা আটকে রাখার ষড়যন্ত্র, এক এগারোর সৃষ্টি, অনির্বাচিত সরকারের আমলে ২ বছর শেখ হাসিনার কারাবাসÑ এসবই এখন ইতিহাসের অংশ। চূড়ান্ত বিচারে জয় হলো জনতার, জয় হলো সত্যের, জয় হলো ঐক্যের। ২০০৯-এ ব্যাপক জনসমর্থন ও সংখ্যাধিক্যে পুনরায় ক্ষমতায় এলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট। নির্বাচনে ওয়াদা ছিল যুদ্ধাপরাধীর বিচার আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বার। যুদ্ধাপরাধীর বিচার অনেক কঠিন এবং জীবনের জন্য ঝূঁকিপূর্ণ। কিন্তু তিনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা ঝুঁকিতে পরওয়া নেই। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে দেশব্যাপী সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টির অপতৎপরতা এবং বড় বড় শক্তির চোখ রাঙানিকে পাত্তা না দিয়ে নিজ সিদ্ধান্তে আর আদালতের রায়ে অটল থেকে জাতির কপোল থেকে কালিমা দূর করতে অনেক পথ এগিয়ে গেলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকরেও অনেকটাই সফল সরকার। যা কিছু হয়নি তা সরকারের আয়ত্তে নেই বলে। এর মধ্যে হলি আর্টিজানের মতো নির্মম ঘটনা যে দুর্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছিল সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সময় উপযোগী সিদ্ধান্তে এবং কঠোর অবস্থানের কারণে তাও মোকাবেলায় সফল সরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর করায় দেশের ভেতরে-বাইরে সরকার বিরোধী নানা তৎপরতা শুরু হয়। শত শত কোটি টাকা খরচ করা হয় বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ এবং দেশে অস্থিশীলতা তৈরির জন্য। এর অন্যতম হলো পদ্মা সেতু নিয়ে চক্রান্ত। সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে চূড়ান্ত বিচারে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ষড়যন্ত্রকারীরা চিহ্নিত হয়েছে। ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে পানি কম ঘোলা হয়নিÑ কিন্তু সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থেকেছে এবং সর্বোচ্চ আদালত তাকেই সঠিক বলে রায় প্রদান করেছে। এই দুই মেয়াদে শেখ হাসিনা তার রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট থেকেছেন। ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রের এক বড় অংশ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অধীনে আনতে সক্ষম হন। এর ফলে বিশাল সমুদ্রে পানি, মৎস্য, জলজ এবং খনিজ সম্পদের সম্ভাব্য ভা-ার বাংলাদেশের অধিন্যস্ত হলো। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা সীমানা নির্ধারণ চুক্তি এবং ছিটমহল চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়। শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের প্রায় চার শতাধিক পণ্য ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকার পেল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন গতি বিশ্বের বিস্ময়। সামষ্টিক জাতীয় আয়, রফতানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মাথাপিছু গড় আয়সহ অর্থনীতির সকল সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সমকক্ষ। দেশী শিল্পের বিকাশ এবং বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, যাতায়াত, গ্যাস-বিদ্যুতের সহজলভ্যতা, দক্ষ জনশক্তি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশ আজ প্রশংসিত। শিল্প-কৃষি-সেবা খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে জীবন মান উন্নীত হয়েছে। গড় আয় এবং গড় আয়ু দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যসঙ্কট, দুর্ভিক্ষ, মঙ্গাÑ এগুলো এখন ইতিহাসের পাতায়। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, যোগাযোগ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মধ্যমআয়ের রাষ্ট্রের সমকক্ষ। এতসব অগ্রগতি সত্ত্বেও কিছুকিছু ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ব্যর্থতা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। কখনও কখনও মনে হয় কোথাও যেন কেউ নেই। যে কোন সময় যে কোন সঙ্কট তৈরি হতেই পারেÑ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা এগিয়ে আসেন না। পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে এগিয়ে এসে উদ্যোগ নিতে হয়। কিন্তু কেন? আর কত কাল? তাহলে বাকিদের কাজ কি? আমাদের স্মৃতিতে নিশ্চয়ই আছে এই সেদিনের কথা। এয়ারপোর্ট রোডে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র মারা গেল। আবেগের বশবর্তী হয়ে ছাত্ররা তাৎক্ষণিক সড়ক অবরোধ করতেই পারে। কিন্তু সে সময় শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বা অন্যরা কেউ কি ছাত্রদের সহমর্মিতা জানাতে গিয়েছিলেন? ছোট একটা ঘটনা এই যে বিশাল আকার ধারণ করেছিল তার জন্য দায়ী কে? কোটাবিরোধী আন্দোলন হলো। নেতৃত্বের কথা বাদ দিলেও সাধারণ ছাত্রদের ব্যাপক সম্পৃক্ততা ছিলÑ এটা তো অস্বীকার করা যাবে না। কোটা সম্পর্কিত সঠিক তথ্য সময়মতো সাধারণ ছাত্রদের জানানো হলো না কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সিদ্ধান্ত নিলেন, কমিটি গঠন হলোÑ তাঁর সিদ্ধান্ত অমান্য করে অহেতুক তিনমাস সময় বাড়িয়ে নিয়ে অবিশ্বাস তৈরি এবং পরিস্থিতি জটিল করল কারা? প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য এরা কি দায়ী নয়? ফেনীতে মাদ্রাসা ছাত্রীকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হলো। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ঘটনার জন্য দায়ী। তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে থানার ওসি এবং স্থানীয় কতিপয় অসৎ রাজনীতিবিদ। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে হলো কেন? আগেই কেন আসামিরা গ্রেফতার হলো না? ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়া অস্বাভিক নয়। একই সঙ্গে মেয়রদের ব্যর্থতা, বিতর্কিত ও অসংলগ্ন কথাবার্তা, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরÑ মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তোলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছিলেন। সে অবস্থায়ও তাকে কেন দিকনির্দেশনা দিতে হবে, মনিটরিং করতে হবে? তাহলে বাকিদের প্রয়োজনীয়তা কী? বরগুনায় তরুণ রিফাতকে প্রকাশ্যে কলেজের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। হত্যাকারীরা চিহ্নিত ও রাঘব বোয়ালদের আত্মীয় এবং আশ্রয়প্রাপ্ত। এক নম্বর সাক্ষী রিফাতের স্ত্রী স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে এখন আসামি। তাকে শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা জবানবন্দী নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগ সুরাহায় কারও কোন উদ্যোগ নেই। এক্ষেত্রেও কী ন্যায় বিচারের জন্য শেষপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিতে হবে? সম্প্রতি ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন দেশের মানুষ তাতে অভিভূত। সত্য উচ্চারণে তিনি যে কখনও দ্বিধা করেন না এ বক্তব্য তা নতুন করে প্রমাণ করল। আমরা যারা তাঁর অনুসারী নিজেদের দাবি করিÑ তারা যদি প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য মেনে চলি তবে জাতির অশেষ মঙ্গল সাধিত হবে। একজন সৎ, ত্যাগী, আদর্শবান, সাহসী, দেশপ্রেমিক, মানবতাবাদী প্রধানমন্ত্রী আছেন বলেই কি আমরা সবাই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকব? সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব নেয়ার যোগ্য কি আমরা এখনও হইনি? এত বড় মাথাভারি প্রশাসনের তাহলে কাজ কি? আমরা যদি সত্যিই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি এবং আরও দীর্ঘদিন কর্মক্ষম ও নেতৃত্বে দেখতে চাই তবে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধে উঠে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতেই হবে। মনে রাখতে হবে, যারা সামনে এসে ঘুরঘুর করেÑ তারা সবসময় প্রকৃত বন্ধু নাও হতে পারে। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, সৎ, ত্যাগী নেতাকর্মীরা অভিমানী হয়Ñ দল এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তাদের খুঁজে সামনে আনতেই হবে। তাহলে আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা তাঁর স্বপ্নের চূড়ান্ত বাস্তবায়নে সফল হবেনÑ এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গবেষক
×