ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৫ ফুটবলে প্রতিপক্ষ নেপাল

আজ জিতলেই ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২৭ আগস্ট ২০১৯

 আজ জিতলেই ফাইনালে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ একদিকে দু’বারের এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল। অন্যদিকে দু’বারের রানার্সআপ দল। যদিও মুখোমুখি ৫ বারের সাক্ষাতে রানার্সআপ দলের জয়ের পাল্লাই ভারি। তবে দু’দল ষষ্ঠবার পরস্পরকে মোকাবেলার আগে পয়েন্ট টেবিলে শ্রেয়তর অবস্থানে আছে প্রথম বা চ্যাম্পিয়ন দলটিই। ফলে ম্যাচটি যে জমজমাট এবং হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের হতে যাচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। চ্যাম্পিয়ন দলের কথা বলা যাক। ফাইনালে ওঠার জন্য হাতে আছে দুটি ম্যাচ। আর এই দুটি ম্যাচ থেকে মাত্র তিন পয়েন্ট হলেই চলবে। এই তিন পয়েন্ট অর্জিত হতে পারে আজকের ম্যাচ থেকেই। বলা হচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৫ জাতীয় ফুটবল দলের কথা। আজ তারা প্রতিপক্ষ নেপালকে হারাতে পারলেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই সাফ অ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলাটা নিশ্চিত করতে পারবে। ভারতের কলকাতার কল্যাণী স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ম্যাচের আগেরদিন কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজ বাবুর শিষ্যরা শেষবারের মতো অনুশীলনে নিজেদের শাণিত করে নেয়। দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার আল মিরাদের ম্যাচ নিয়ে ভাবনা, ‘দুই ম্যাচেই গোল করতে পেরেছি। এজন্য ভাল লাগছে। দেশকে সবসময় জেতাতে চাই। এখান জেতার জন্য যেহেতু গোল করতে হবে, সেটা তো ভাল লাগবেই।’ মিরাদ আরও যোগ করে, ‘সামনের ম্যাচে চেষ্টা করব দেশের জন্য আবারও গোল করতে। এই টুর্নামেন্টে আমাদের টার্গেট চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দেশকে জেতানোর জন্যই তো এখানে এসেছি।’ দলীয় অধিনায়ক রাকিবুল ইসলামের মন্তব্য, ‘মঙ্গলবারের ম্যাচে আরও ভাল করার চেষ্টা করব। দুটি ম্যাচ জিতেছি। এখন সামনের ম্যাচগুলোতে সেই ধারাটা ধরে রাখতে চাই। আমরা আক্রমণাত্মক খেলতে চাই।’ দলের ম্যানেজার মোহাম্মদ মহসিন জানান, ‘দলে কোন ইনজুরি নেই। সবাই সুস্থ আছে। আমরা গত দুটি ম্যাচ জিতেছি। ছেলেরা ভাল পারফর্ম করেছে, সেই জন্য আমরা ফলও পেয়েছি। সামনের ম্যাচটা নেপালের বিপক্ষে। খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে এখনও কোচরা কাজ করছেন। ফাইনালে ওঠতে হলে নেপালকে আমাদের হারাতেই হবে। আশা করি আমরা জিততে পারব।’ অতীতের পরিসংখ্যান মোতাবেক হিমালয়ের দেশটির বিপক্ষে লাল-সবুজ বাহিনীদের রেকর্ড তেমন ভাল নয়। ২০১১ সালের আসরে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ গোলশূন্য ড্র করেছিল নেপালের সঙ্গে। সেমির পরাজিত দল হিসেবে তৃতীয় স্থান দখলের লড়াই আবারও দেখা হয় বাংলাদেশ-নেপালের। ওই ম্যাচে নেপাল ২-১ গোলে জেতায় চতুর্থ হয় বাংলাদেশ দল। ২০১৩ আসরে সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে ৫-১ গোলে হারায় নেপাল। ২০১৭ আসরে আবারও সেমিতে সাক্ষাত এবং আবারও নেপালের জয় (৪-২ গোলে)। ২০১৮ আসরে গ্রুপ পর্বে মোকাবেলায় নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। নেপাল যেখানে গোল করেছে ৮টি, সেখানে বাংলাদেশের গোল ৪টি। আজকের ম্যাচ বাংলাদেশ দলকে সাহস জোগাচ্ছে সর্বশেষ মুখোমুখির জয়টা। তাই নেপাল যদি পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকার আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশও কিন্তু নামবে শেষ দেখায় জয় আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুখস্মৃতি নিয়ে। আর আজ জয় পেলেই ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের নৈপুণ্য কিন্তু শিরোপা জেতার মতোই হচ্ছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ৫-২ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করে। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে তারা বিধ্বস্ত করে ৭-১ গোলে। পক্ষান্তরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে ০-৫ গোলের বড় ব্যবধানে হেরে যায় নেপাল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। সমান ম্যাচে ভারতেরও ৬ পয়েন্ট। তবে গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় ভারত আছে এক নম্বরে (ভারত +১২, বাংলাদেশ +৯)। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত এই দুই দলই কোন ম্যাচে হারেনি। তবে একমাত্র দল হিসেবে ভারতই এখনও কোন গোল হজম করেনি। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে নেপাল। চতুর্থ স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কা তিন ম্যাচ খেলে সংগ্রহ করেছে মাত্র তিন পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ভুটান পয়েন্টের খাতাই খুলতে পারেনি। ইতোমধ্যেই ফাইনালে খেলার সব আশা ধূলিসাত হয়ে গেছে তাদের। ২ ম্যাচে তিন পয়েন্ট থাকায় নেপালেরও সুযোগ আছে ফাইনালে খেলার। কিন্তু বাংলাদেশ যদি তাদের হারিয়ে দিয়ে মোট ৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে তবে বাকি মাত্র এক ম্যাচে তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারলেও নেপালের হবে ৬ পয়েন্ট। যেহেতু রবিন লীগ পদ্ধতিতে হচ্ছে এবারের আসর। তাই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনাল। আর সে লড়াইয়ে ভারতের পরই আছে বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয়, আজকের লড়াইয়ে হিমালয়ের দেশকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারে কি না লাল-সবুজের দেশ।
×