ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার আহবান আলী শাহ গিলানির

কাশ্মীরে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ফুরিয়ে গেছে

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২৭ আগস্ট ২০১৯

  কাশ্মীরে জীবন রক্ষাকারী  ওষুধ ফুরিয়ে গেছে

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে হাহাকার উঠেছে ওষুধের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাশ্মীরের বিভিন্ন ফার্মেসিতে দেখা গেছে লম্বা লাইন। মিলছে না জীবন রক্ষাকারী ওষুধপত্র ও বাচ্চাদের খাবার। ফলে দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে জীবনযাপন করতে হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরবাসীকে। ইন্ডিয়া টুডে ও পার্স টুডে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি যতই স্বাভাবিক বলে দাবি করা হোক না কেন, বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী, ছন্দে ফিরছে উপত্যকা, সেখানকার পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হয়েছে বিরোধী দলের নেতাদের। বিমানবন্দরের বাইরে বের হতে দেয়া হয়নি তাদের। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কেন তাদের সেখানে যেতে দেয়া হলো না। জম্মু-কাশ্মীরের স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, কাশ্মীর স্বাভাবিক হয়নি। বেঁচে থাকার জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে না। বাচ্চাদের খাবারও পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে উপত্যকায় এখন হাহাকার শুরু হয়েছে। হার্ট, থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগা রোগী ও ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধের দোকানে দোকানে ঘুরছেন মানুষ। প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে যাদের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে, তারা বিমানে করে ভিন্ন রাজ্য থেকে ওষুধ সংগ্রহ করছেন। সাধারণ মানুষ ওষুধের জোগান না পেয়ে ভিড় করছেন স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে। ৫ আগস্ট থেকে অবরুদ্ধ কাশ্মীর উপত্যকা। শেষ হয়ে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ। ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করা হয় ৩৭০ অনুচ্ছেদ। দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয় জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে। সে সিদ্ধান্তের পর থেকেই বন্ধ দোকানপাট; নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ ব্যাহত। নেই ওষুধের সরবরাহ। গত ৫ আগস্ট থেকে নতুন কোন ওষুধের সরবরাহ আসেনি। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন মানুষ। পাওয়া যাচ্ছে না ইনসুলিন ও ইনহেলারের মতো অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী । এদিকে ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের জনগণকে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অঞ্চলটির প্রখ্যাত নেতা সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানী। কাশ্মীরের জনগণের কণ্ঠরোধ করার জন্য দিল্লী সরকার যখন বিভিন্নভাবে বলপ্রয়োগ করার চেষ্টা করছে তখনই এ আহ্বান জানান তিনি। আলী শাহ গিলানি রবিবার বলেন, স্থানীয় কাশ্মীরী জনগণের উচিত তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রাখা। গিলানি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চলতি মাসের শুরু থেকে কাশ্মীরের সাধারণ জনগণের কেবল সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করেনি, তারা কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্যাতন, হত্যা এবং হাজার হাজার যুবককে গ্রেফতারের কোন খবরই প্রকাশ করা হচ্ছে না। সাধারণ জনগণ তাদের আত্মীয় স্বজনদের সম্পর্কে কোন খোঁজ খবর রাখতে পারছে না। গিলানি বলেন, নির্যাতনকারীরা হয়তো সত্যকে লুকানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। মানুষ একদিন এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেই।
×