ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে আর্মি কলেজসহ ৫ স্থানে বিদ্রোহীদের হামলা

প্রকাশিত: ০৮:৪৪, ১৭ আগস্ট ২০১৯

 মিয়ানমারে আর্মি কলেজসহ ৫ স্থানে বিদ্রোহীদের হামলা

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে একটি সামরিক কলেজসহ বিভিন্ন সরকারী স্থাপনায় সমন্বিত হামলায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বর্মি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। স্থানীয় চারটি সশস্ত্র বিদ্রোহী দলের জোট নর্দার্ন এ্যালায়েন্স এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে আগামী দিনগুলোতে এরকম আরও হামলার মুখোমুখি হতে হবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে। বিদ্রোহীদের হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল শান রাজ্যের পায়িন উ লউয়িন শহরের ডিফেন্স সার্ভিসেস টেকনোলজিক্যাল একাডেমি। এখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এছাড়া আরও চারটি জায়গায় বৃহস্পতিবার প্রায় একই সময়ে বিদ্রোহীরা হামলা চালায় বলে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ জানায়। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তুন তুন নাই বলেছেন, নাউং চো শহরে গোকটেক ভায়াডাক্ট রেলওয়ে সেতুর কাছে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সৈন্যদের লড়াই হয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে পাহাড়ী ওই রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। বিদ্রোহীরা গোক টুইন ভ্যালির আরেকটি সেতু ধসিয়ে দিয়েছে এবং ওই শহরের মাদক নিয়ন্ত্রণ পুলিশের দফতর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তুন তুন নাই। শান রাজ্যের বৃহত্তম শহর লাশিওগামী মহাসড়কের একটি টোল আদায় কেন্দ্রেও লড়াই হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, কেবল গোক টুইনেই সাতজন সেনা সদস্যকে বিদ্রোহীরা হত্যা করেছে। আর টোল আদায় কেন্দ্রে হামলায় মারা গেছে দুইজন। এছাড়া মিলিটারি কলেজের হামলায় বেসামরিক কর্মীরাও নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কলেজ ভবন এবং বুলেটে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া পোড়া গাড়ির ছবি এসেছে। লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে গোক টুইনের মাদক নিয়ন্ত্রণ পুলিশের দফতরের পাশে। মাইন ব্যবহার করে উড়িয়ে দেয়া গোক টুইন সেতুর একটি ছবি প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতী। মিয়ানমারের ওই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী তাদের অধিকারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। এরকম চারটি দল- কচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ), টাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক এ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) মিলে গঠন করেছে নর্দার্ন এ্যালায়েন্স। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বিদ্রোহীদের ওই জোট। মিয়ানমার সরকার দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র দলের সঙ্গে ২০১৫ সালে শান্তি চুক্তি করলেও নর্দার্ন এ্যালায়েন্স তাতে সাড়া দেয়নি। টাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির মুখপাত্র মং আইক কিয়াও বলেন, সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানের জবাবেই বৃহস্পতিবারের হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের এ এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। কিন্তু সেনাবাহিনী যদি না চায়, শান্তি কোনদিন আসবে না।’
×