ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সতর্কতা জারির পর কাশ্মীর ছেড়েছে ভারতীয়রা

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ৫ আগস্ট ২০১৯

 সতর্কতা জারির পর কাশ্মীর  ছেড়েছে ভারতীয়রা

হাজার হাজার ভারতীয় কাশ্মীর ছেড়েছে। যারা কাশ্মীর ছেড়েছেন তাদের মধ্যে তীর্থযাত্রীরাও আছেন। পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গিরা হামলা হতে পারে, সরকারের পক্ষ থেকে এমন সতর্কতা জারির পর তারা কাশ্মীর ত্যাগ করে। শনিবার কাশ্মীর রাজ্য প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। বিবিসি। ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, কাশ্মীরে হিন্দু পুণ্যার্থীদের অমরনাথ যাত্রায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সমর্থিত জঙ্গিরা হামলার পরিকল্পনা করেছে এমন প্রমাণ পেয়েছেন তারা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে একটি মাইনসহ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মাইনটিতে পাকিস্তান অর্ডিন্যান্সের মার্কিং ছিল করা হয়। অমরনাথের পথে হিন্দু পুণ্যার্থীদের ওপর হামলা করার জন্য এসব অস্ত্র মজুদ করা হয়েছিল বলে মনে করছেন ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এরপরই সরকার পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের কাশ্মীরে অবস্থান সংক্ষিপ্ত করে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। শনিবার কাশ্মীর রাজ্য প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পরামর্শের কারণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে এবং এ কারণেই রাজ্যটি থেকে ‘হাজার হাজার’ পর্যটক, পুণ্যার্থী ও মজুর চলে যাচ্ছে। ওই কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা না জানালেও বলেছেন, ২০ হাজার হিন্দু পুণ্যার্থীর অধিকাংশ এবং ভারতীয় পর্যটক ও দুই লাখ মজুর এই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। সাধারণভাবে পর্যটকদের সতর্ক থাকার কথা বলা হলেও ভারতীয় ওই পরামর্শ বার্তায় বিদেশি নাগরিকদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার কাশ্মীরে প্রায় ৬০ জন বিদেশি পর্যটক উপস্থিত হয়েছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে এ দিনটিতেই জার্মানি ও যুক্তরাজ্য তাদের নাগরিকদের কাশ্মীর ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এক ঘোষণায় জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কাশ্মীরে অবস্থানরত ভ্রমণকারীদের (বিশেষ করে যারা কাশ্মীর উপত্যকা ও অমরনাথ যাত্রার পথে আছেন) জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জম্মু ও কাশ্মীরে কোনো ধরনের ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, তবে শুধু বিমানযোগে জম্মু শহরে গিয়ে সেখানেই অবস্থান করলে ও লাদাখ অঞ্চলে গেলে কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছে। তড়িঘড়ি করে কাশ্মীর ছাড়তে থাকা পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা সরকারের পরামর্শ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ১০ দিনের ছুটিতে শ্রীনগর গিয়েছিলেন প্রভাকর আইয়ার (৪৫), কিন্তু শুক্রবার রাতেই তারা ফিরে যান। তিনি বলেন, ‘যখন ওই পরামর্শটি জারি হয় তখন আমি ডাল লেকের একটি হাউসবোটে অবস্থান করছিলাম। কেন আমাদের চলে যেতে বলা হল আমি তা বুঝতে পারছি না। সেখানে সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল, বলেন তিনি। ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে আসা কাঠমিস্ত্রি মনজিত সিং গত নয় বছর ধরে কাশ্মীরে কাজ করছিলেন, তিনিও চলে গেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি শঙ্কিত ছিলাম না, কিন্তু সরকারের পরামর্শ আতঙ্ক তৈরি করেছে আর আমার পরিবার চাইছে আমি ফিরে যাই। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমি আবার ফিরে আসবো।’
×