ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় দলে তরুণদের পরীক্ষা করা উচিত

প্রকাশিত: ১২:৩২, ৪ আগস্ট ২০১৯

জাতীয় দলে তরুণদের পরীক্ষা করা উচিত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবেমাত্র শ্রীলঙ্কা সফর করে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরেছেন তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহীমরা। এবার শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং ক্রিকেট দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ইমার্জিং ক্রিকেট দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। আগামী ১৬ আগস্ট লঙ্কান ইমার্জিং দল বাংলাদেশে আসবে ৩ ওয়ানডে ও ২টি চারদিনের ম্যাচের সিরিজ খেলতে। সেই ইমার্জিং দলটি গঠন করা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হাই পারফর্মেন্স ইউনিট (এইচপি) থেকে। এইচপি কোচ সাইমন হেলমটের অধীনে তাই ক্রিকেটাররা প্রস্তুত হচ্ছেন। শনিবার হেলমট সম্প্রতি আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পারফর্মেন্সে হতাশা ব্যক্ত করে জানিয়েছেন এবার ইমার্জিং দলের (মূলত অনুর্ধ-২৩) ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্স দেখবেন তিনি। তারা ভাল করতে পারলেই জাতীয় দলে সুযোগ দেয়া যেতে পারে এবং জাতীয় দলের নিয়মিতদের টানা খেলার ক্লান্তি থেকে বিশ্রাম দেয়া উচিত বলে মনে করেন হেলমট। শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং ক্রিকেট দলের বিপক্ষে আবু জায়েদ রাহী, ইয়াসিন আরাফাত মিশু, শহীদুল ইসলাম, শরীফুল ইসলামরা খেলার সুযোগ পাবেন। এ বিষয়ে হেলমট বলেন, ‘এবাদত এবং খালেদ এইচপি প্রোগ্রাম থেকে এসেছে। নতুন বোলার যারা বেরিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম। আমরা দেখেছি রাহী এসেছে। এই মুহূর্তে মিশু, শহিদুল, শরিফুলরা দারুণ বোলিং করছে। ঈদের পর ছেলেরা সুযোগ পাচ্ছে অনুর্ধ-২৩ সিরিজে। তখন আমরা দেখতে পারব ছেলেরা কেমন করে।’ মূলত জাতীয় দলের পাইপলাইন তৈরি করার অন্যতম মাধ্যম এই এইচপি প্রোগ্রাম। তাই জাতীয় দলের ভবিষ্যত তৈরির জন্য এই ক্রিকেটারদের এখন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। তারা দারুণ কিছু করতে পারলেই হয়তো জাতীয় দলে সুযোগ মিলতে পারে। আর টানা খেলার শ্রান্তি কাটাতে নিয়মিত সদস্যরাও বিশ্রাম পেতে পারেন। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে বিশ্রাম নিতেই ছুটি নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। টানা দেড় মাস বিশ্বকাপ ব্যস্ততা, তার আগে আয়ারল্যান্ডে এক মাস ত্রিদেশীয় সিরিজ নিয়ে ব্যস্ততা ছিল জাতীয় দল। টানা খেলার মধ্যে থেকে বিশ্বকাপ থেকে ফিরে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানেই শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে হয়েছে। আর এই অবিরাম খেলার মধ্যে থাকাতেই জাতীয় দল এবার লঙ্কানদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। তাই নিয়মিতদের অনেকেরই বিশ্রাম দেয়া উচিত ছিল বলে দাবি করেছেন অনেকে। এমনকি সাকিব নিজেও এমনটা বলেছেন। কিন্তু সে জন্য পাইপলাইন শক্ত করা প্রয়োজন। ‘এ’ দলের বাজে পারফর্মেন্সের পর এখন তাই ইমার্জিং দলের পরীক্ষা। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ান কোচ হেলমট বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনায় অন্য ক্রিকেটারদের সুযোগ দেয়া জরুরী। আগে হোক বা পরে হোক; যারা সুযোগ পাওয়ার মতো তাদের সুযোগ পাওয়া উচিত। আমাদের খেলোয়াড় বদল করা উচিত। এটা আমরা বিভিন্নভাবে করতে পারি। কেউ ইনজুরিতে পড়লে বা কাউকে বিশ্রাম দিয়ে এটা করা যায়। আমাদের এসব বিষয়ে বোর্ড, কোচ এবং নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলা উচিত।’ বিসিবির এইচপি প্রোগ্রামের অধীনে অনেক ক্রিকেটারই বেরিয়ে এসেছেন। জাতীয় দলের হয়ে খেলা সাদমান ইসলাম অনিক, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন ও রাহীরা হেলমটের শিষ্য ছিলেন। ইতোমধ্যেই তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরীক্ষাও দিয়েছেন। সম্প্রতি ‘এ’ দল ও বিসিবি একাদশের হয়ে খেলেছেন অনেকে। সাইফ হাসান, শহীদুল, শরীফুল, ইয়াসিনরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তবে তরুণরা ভাল করলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগটা সেভাবে পাচ্ছেন না। এক সময় হতাশায় তারা ফর্ম হারিয়ে ফেলছেন। তাই হেলমট মনে করেন তরুণদের মধ্যে দু’য়েকজনকে অবশ্যই সুযোগ করে দেয়া উচিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার। কিন্তু জাতীয় দলে যাওয়ার পর্যায়ে যারা আছেন তারা যে সবসময় ভাল করতে পারছে সেটাও নয়। সম্প্রতি আফগান ‘এ’ দলের বিপক্ষে স্বাগতিক ‘এ’ দলের পারফর্মেন্স নিয়ে তাই অসন্তোষ জানিয়েছেন হেলমট। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে বেশ কিছু কারণে আমরা পারফর্ম করতে পারিনি। আমাদের সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা পারফর্ম করতে পারেনি, এটাই মূল কারণ। এরপর আমাদের তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে হয়েছে। আমরা সিরিজে ফিরতে পেরেছি। আমরা দুটো ম্যাচ জিততে পেরেছি।’ এখন এই তরুণদের নিয়ে লঙ্কান ইমার্জিং দলের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে খেলবে বাংলাদেশ ইমার্জিং ক্রিকেট দল যেটি মূলত অনুর্ধ-২৩ ক্রিকেট দল। ১৬ আগস্ট বাংলাদেশ সফরে আসবে শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং ক্রিকেট দল। দু’দলের মধ্যে ১৯ ও ২১ আগস্ট বিকেএসপিতে দুই ওয়ানডের পর ২৪ আগস্ট খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। খুলনার একই ভেন্যুতে ২৭-৩০ আগস্ট প্রথম চারদিনের ম্যাচ এবং ৩-৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
×