ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইরান নিয়ে সংলাপের আহ্বান

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৬ জুলাই ২০১৯

ইরান নিয়ে সংলাপের আহ্বান

ইউরোপের তিনটি শক্তিধর দেশ রবিবার ইরানের পরমাণু কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা বৃদ্ধির অবসান, সঙ্কট অবসান এবং সঙ্কট অবসানে সংলাপ অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে। খবর এএফপির। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর ওপর ২০১৫ সালের চুক্তিটি আরও শিথিল হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিবৃতিতে এ কথাও বলা হয় যে, চুক্তি টিকিয়ে রাখার নিশ্চয়তা নির্ভর করে তেহরানের ওপর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনের প্রত্যাহার ঘোষণা করলে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। এ প্রেক্ষাপটে এলিসি প্রাসাদে প্রকাশিত বিবৃতির ইংরেজী ভার্সনে বলা হয়, আমরা মনে করি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি বন্ধ ও সংলাপ শুরু করার উপায় বের করতে হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলও যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্যাবিনেটমন্ত্রী ডেভিড লিডিংটনকে প্যারিসে ‘বার্ষিক বাস্তিল দিবস’ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানোর পর বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঝুঁকি এমন যে, চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী সকল দেশের জন্য তাদের কর্মকান্ডের সম্ভাব্য পরিণতি বিবেচনা করার এবং তাতে বিরতি টানার প্রয়োজন রয়েছে। এ তিন ইউরোপীয় দেশ ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর ওপর ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশন বা জেসিপিও এ চুক্তিতে প্রধান স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে রয়েছে। ইরান মনে করছে, চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু দেশটি অবরুদ্ধ অর্থনীতি নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত না হওয়ায় ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং এর স্পর্শকাতর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ কর্মসূচী জোরদার করে। ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা উচ্চারণ করে চলেছে। ইরানী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি রবিবার ইরানের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নর্থ খোরাসান সফরকালে বলেন, আমরা ৮ মে থেকে আমাদের ধৈর্য্যরে কৌশল প্রতিশোধে রূপান্তর করছি। অন্য পক্ষ যে পদক্ষেপই নিক না কেন আমরা প্রতিশোধ নেব। সরকারী ওয়েবসাইটে বলা হয়, তিনি বলেন, চুক্তিতে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি হ্রাস করলে আমরাও হ্রাস ঘটাব। তারা তাদের প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করলে আমরাও আমাদেরটা বাস্তবায়ন করব। তিনি ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক চাপের উল্লেখ করে বলেন, আপনি আপনার উৎপীড়ন ও নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটালে আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত যে কোন সময়ে, যে কোন মুহূর্তে। তিন ইউরোপীয় দেশের বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা চুক্তি শিথিল হয়ে পড়ার ঝুঁকির জন্য উদ্বিগ্ন। আমরা উদ্বিগ্ন যে, যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার কারণে জেসিপিওএ আরও শিথিল হয়ে পড়বে এবং ইরান চুক্তির প্রধান শর্তগুলোর মধ্যে কয়েকটি আর কার্যকর করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অনুমিত সীমার বাইরে ইউরেনিয়াম মজুদ সমৃদ্ধিকরণে ইরানের সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন। বিবৃতিতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ক্রমেই নিরাপত্তা পরিস্থিতি অবনতির জন্য সতর্কতাও উচ্চারণ করা হয়। তিন শক্তি বলেছে, তারা পরমাণু চুক্তির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। কিন্তু তারা একথাও বলে যে, চুক্তির বাস্তবায়ন ইরানের সম্মতির ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ইরানের প্রতি আমরা জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
×