ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অমিত দাস

অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ

প্রকাশিত: ১০:২০, ২০ জুন ২০১৯

 অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ

সন্তানের মুখ দেখে এই সংসারে কোন পিতা-মাতার মনে না সুখের উদয় হয়, সন্তানের সাফল্যে আনন্দে বুকটা কোন পিতা-মাতার ভরে না যায়। সন্তান সুপথে চলুক সন্তান সুস্থ থাকুক এই সমাজে সুনামের অধিকারী, হোক সন্তানের ভবিষ্যত সুন্দর হোক, আমার মনে হয় একজন পিতা-মাতা হিসেবে তার প্রিয় সন্তানকে নিয়ে এই স্বপ্নটা দেখা একেবারেই স্বাভাবিক। সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের ভালবাসা শুভাশীষ আর শুভকামনার কোন শেষ নেই। কেননা এ যে স্নেহের বাঁধন সম্পর্কের একটি সুদৃঢ় স্নেহলতা এই সংসারের প্রতিটি সন্তানকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে বেঁধেছে। আর তাই বোধকরি চোখের সামনে প্রিয় সন্তান বিপথে চলে গেলে নষ্ট হয়ে গেলে সকল বাবা-মায়ের বুকটা ব্যথায় বিদীর্ণ হয়ে যায়। সন্তানের বিপদে কোন পিতা-মাতাই বিমুখ থাকতে পারেন না, বিচলিত না হয়ে পারেন না। সন্তান তাঁদের না বুঝে যতই ত্যক্তবিরক্ত করুক না কেন। কিন্তু আজ সমাজের সামনে এক সঙ্কট এসে উপস্থিত হয়েছে। সন্তানকেও সন্দেহ করতে হয় কেননা অতি আদরের সন্তানটি সঠিক পথে চলছে না বাবা-মায়ের সঙ্গে পরিবারের অপরাপর সদস্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করছে না, সত্য কথা বলছে না, মনের কথা মুখে সহজভাবে প্রকাশ করছে না। কি যেন চেপে রাখছে কি যেন গোপন রাখতে চাচ্ছে নিজেকে আপনজনদের কাছ থেকে দিনকে দিন কেবল দূরে সরিয়ে নিচ্ছে; এক মনোসামাজিক জটিলতায় ভুগছে আর নানাবিধ সামাজিক জটিলতার জন্ম দিচ্ছে! কেন আদরের সন্তান তার বাবা-মার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে আড়াল করছে তার আবেগকে পিতা-মাতার জন্য তা সত্যিই এক দুশ্চিন্তা। সমাজের চোখে মানুষ তার আচরণ তার কাজের জন্য ভাল-মন্দ হিসেবে বিবেচিত হয়। ভাল হোক আর মন্দই হোক মানব সন্তান তো একা থাকতে পারে না। তার সঙ্গী সাথী বন্ধু-বান্ধব থাকবেই। আর যদি সন্তান মন্দ হয়, নষ্ট ছেলে-মেয়ে হয় তার বন্ধু-বান্ধব কিছু বেশি বৈ কম থাকে না। তাই সন্তানের ভালর কথা মাথায় রেখে এই সমাজের সকল বাবা-মাকে সর্বদা সজাগ সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। প্রিয় সন্তানটি কোথায় যাচ্ছে কার সঙ্গে মিশছে তার কোন্্ কোন্্ বন্ধুর সঙ্গে কোথায় কোন্্ কাজে সময় কাটাচ্ছে তার খোঁজখবর নিতে হবে। কারণ আমরা এটাতো সকলেই জানি সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। অনেক সময় এই সমাজের অনেক ছেলেমেয়ে না বুঝে এলাকার বড় ভাই বা বদমাশ বন্ধুদের খপ্পরে পড়ে যায়। তাদের কাছে টানে, তাদের বাবা-মা নিজের ভাই-বোনের চেয়ে বেশি আপন ভাবে, বিশ্বাস করে পছন্দ করে। তাদের কথায় ওঠাবসা করে অথচ বাবা-মায়ের কথা কানে তুলে না-এটা যে কতবড় বোকামি বিপদে না পড়ার আগে চূড়ান্ত সর্বনাশ না ঘটার আগে অনেক ছেলে-মেয়েই তা বুঝতে পারে না। সংসারের খরচ যোগাতে গিয়ে সারাদিন কাজকর্ম চাকরি-বাকরি করে বাসায় ফিরে কর্মক্লান্ত পিতা-মাতার সন্তানের খোঁজখবর নেয়ার মতো আলাদা সময় থাকে না। কিন্তু এভাবে আর চলবে না কেবল মাস শেষে খরচের টাকা সন্তানের হাতে তুলে দিয়ে কেউ আর মুক্তি পাবেন না। সন্তানের সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে তা নাহলে প্রিয় সন্তানের ভবিষ্যতের সাড়ে বারোটা বেজে যাবে বর্তমান সমাজবাস্তবতায় এ কথা নিশ্চিত। আর সন্তান যেন আদব-কায়দা সুআচরণ রপ্ত করতে পারে তার স্বভাবে দুরাচার দুর্নীতি দূরে গিয়ে সুনীতি সততা বাসা বাঁধে, সেই ব্যবস্থাই করতে হবে। তাহলেই এই সামাজিক সমস্যার বাস্তব কার্যকর সমাধান আসবে। নচেৎ নষ্টনীড়ে নষ্টছেলে তৈরি হবে। নেত্রকোনা থেকে
×