ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরের এ ঈদগাহ প্রস্তুত

সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত হবে ‘গোর-এ শহীদ ময়দানে’

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ৪ জুন ২০১৯

সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত হবে ‘গোর-এ শহীদ ময়দানে’

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ঐতিহাসিক দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দান। এই মাঠে এ বছর প্রায় ১০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। ইতোমধ্যে নামাজের জন্য মাঠ প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দিনাজপুর সদর আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের উদ্যোগে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে ২০১৫ সালে এই ঈদগাহের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণের প্রায় দেড় বছরে এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত করা হয়। উপমহাদেশে এর তুলনা করার মতো অন্য কোন ঈদগাহ মাঠ নেই। এই ৫২ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে ২টি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এই সব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ হলো ৫১৬ ফুট। ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে নির্মিত হয়েছে ঈদগাহ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ দেয়া হয়েছে। মিনার দুটির উচ্চতা ৫০ ফিট। যে মেহেরাবে খতিব বয়ান করবেন, সেটির উচ্চতা ৫০ ফুট। ৫২ গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে বিশাল মিনার নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে তা ৬ মাস বর্ধিত করা হয়। বিস্তীর্ণ মাঠের জামাতের কারণে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু ভরাটের কাজ চলছে। নামাজ আদায়ের জন্য মাঠ এখন প্রস্তুত। গোটা মাঠ যেন সবুজ ঘাসের আস্তরণে পরিণত হয়েছে। এই ঈদগাহ নির্মাণে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০১৭ সাল থেকে এই ময়দানে দু’টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রথম বছরেই মুসল্লির সংখ্যা হয় প্রায় ২ লাখ। পরের বছর এর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৫ লাখ। আয়োজকরা আশা করছেন, এ বছর এই ময়দানে প্রায় ১০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও নামাজে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব শামসুল ইসলাম কাশেমী। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জেলা প্রশাসক মোঃ মাহামুদুল আলম জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, প্রায় ১০ লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের প্রধান জামাতকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঈদগাহের চারপাশে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের তল্লাশির পর জামাতে প্রবেশ করানো হবে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সাদা পোশাকে ঈদগাহ প্রাঙ্গণে দায়িত্ব পালন করবেন। র‌্যাবসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরাও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সক্রিয় থাকবেন। মাঠের নিরাপত্তার জন্য নির্মিত হয়েছে ৪টি বিশাল পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম জানান, শুধু বাংলাদেশই নয়, উপমহাদেশে এত বড় মিনার সম্বলিত ঈদগাহ মাঠ আর একটিও নেই। এ বছর প্রায় ১০ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে যা শোলাকিয়ার চেয়ে অনেক বড়। লোক সমাগম বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই ঈদগাহ মাঠে লোক সমাগম এবার অনেক বেশি হবে এবং যা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
×