ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মারিয়াদের বিশ্বকাপ বাছাই প্রস্তুতি ইউরোপে

প্রকাশিত: ১০:১৩, ১০ মে ২০১৯

মারিয়াদের বিশ্বকাপ বাছাই প্রস্তুতি ইউরোপে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ নারী জাতীয় ফুটবল দল থাইল্যান্ডে খেলতে গিয়েছিল। অংশ নিয়েছিল এএফসি অনুর্ধ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্বে। এই আসরটি ছিল সপ্তম আসর, আর তাতে প্রথমবারের মতো খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলার বাঘিনীরা। এশিয়ার সেরা আট দলের সেই লড়াইয়ে মারিয়া-মনিকারা ছিল ‘বি’ গ্রুপে। আরও অংশ নিয়েছিল চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর কোরিয়া। এই আসরের চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দল হিসেবে যথাক্রমে উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান ২০১৮ সালের নবেম্বরে উরুগুয়েতে অনুষ্ঠেয় ফিফা অনুর্ধ-১৭ নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র পায়। সেবার গ্রুপের তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে যাওয়াতে বাংলাদেশের মেয়েদের বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি। তিন ম্যাচে তারা হজম করেছিল ১৫ গোল। তারপরও বাংলাদেশ দলের খেলা কুড়িয়েছিল প্রশংসা। দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী জাপানকে তিন গোলের বেশি দিতে দেয়নি গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যারা। তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৭ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৩-২ গোলে হেরেছিল তারা। সেবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে যেতে না পারলেও তারপরও তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য কোন কিছুর কমতি রাখা হয়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পক্ষ থেকে। ওই আসরে অংশ নেয়ার আগে সেবার মেয়েদের ৫ বার বিদেশে পাঠিয়ে অনুশীলন করানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। লাল-সবুজ বাহিনীরা দুবার জাপান এবং একবার করে সিঙ্গাপুর, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে অনুশীলনের পাশাপাশি বেশকিছু প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছিল। সবমিলিয়ে তাদের এই প্রস্তুতির জন্য বাফুফে ব্যয় করেছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। এবারও এএফসি অনুর্ধ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্বে খেলবে বাংলাদেশ। এই আসরে এবার আগের প্রায় সব দলগুলোই আছে, শুধু এবার লাওসের জায়গায় খেলবে ভিয়েতনাম। থাইল্যান্ডে ১৫-২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এই আসরের এখনও গ্রুপিং ড্র হয়নি। এবারও এই আসরের সেরা দলগুলো টিকেট পাবে ২০২০ সালে ভারতে অনুষ্ঠেয় ফিফা অনুর্ধ-১৭ নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে। তবে এবার শুধু চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের ভাগ্যেই জুটবে এই প্রাপ্তি (ভারত এই আসরের স্বাগতিক বিধায় তারা আগেই এই আসরে খেলবে, ফলে বাকি দুই দলকে খেলে আসতে হবে)। দুই বছর আগে না পারলেও এবার বিশ্বকাপে খেলার অধরা স্বপ্নটা পূরণ করতে চায় বাংলাদেশ দল। এবারও তাদের নিয়ে সেই সুনীল স্বপ্ন দেখছে বাফুফে। বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন আশাবাদী মেয়েদের বিশ্বকাপ খেলার সামর্থ্য আছে। ফলে তিনি তাদের আরও ভাল প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠাতে চান থাই-ভূমিতে। এবার দলকে আরও ভালমতো শানিত করার জন্য এশিয়ার কোন দেশে নয়, বরং তাদের ইউরোপে পাঠিয়ে ট্রেনিং করানোর কথা জোরেশোরেই ভাবছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সালাউদ্দিনের মতে, আমাদের মেয়েরা এখন যেহেতু এশিয়ার শীর্ষ ৮ দলের একটি, কাজেই এখান থেকে তাদের সেরা দুইয়ে থাকাও সম্ভব। তাই তাদের জন্য আমরা সবকিছু করবা। বাফুফে সভাপতি ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনালের সঙ্গে। যদি অর্থের সংস্থান (প্রায় ৪ কোটি টাকা) করা যায় তাহলে মারিয়াদের ওখানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে কোন বাধা থাকবে না।
×