ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য গোয়েন্দা সহযোগিতা হুমকির মুখে

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ১ মে ২০১৯

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য গোয়েন্দা সহযোগিতা হুমকির মুখে

হুয়াওয়ে প্রযুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার গোয়েন্দা সহযোগিতা সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। যুক্তরাজ্যে ফাইভজি মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য হুয়াওয়ে প্রযুক্তি অনুমোদন করেছে বলে ফাঁস হওয়া প্রস্তাব থেকে জানা গেছে। এর ফলে এই সতর্কতা উচ্চারণ করা হলো। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী মন্ত্রী রবার্ট স্ট্রেয়ার সোমবার বলেন, হুয়াওয়ে বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে ফাইভজি নেটওয়ার্কের জন্য এটির যেকোন প্রযুক্তি ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যদি যুক্তরাজ্য বা অন্যকোন পশ্চিমা দেশ অবিশ্বস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পণ্য ব্যবহার করে, তাহলে আন্তঃসম্পর্ক ও তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন করে বিবেচনা করতে হবে। কারণ এর ফলে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) বৈঠকে পাঁচ ক্যাবিনেট মন্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও ‘নন-কোর’ ফাইভজি প্রযুক্তি সরবরাহের জন্য হুয়াওয়েকে নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়া হয়। এ অনুমোদন না দিতে কয়েক মাস ধরে তদ্বির চালিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্রও। সিদ্ধান্তটি দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের কাছে ফাঁস করা হয়। এর ফলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তদন্ত কমিটি মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকার নেবে। এছাড়া সিদ্ধান্ত ফাঁসকারীকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হবে। কারা এই সিদ্ধান্ত ফাঁস করেছে সে সম্পর্কে অনেকটা অনুমান করছে ওয়েস্টমিনস্টার। এর মধ্যে হুয়াওয়ে নিয়ে যে পাঁচ মন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তারা রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রী জেরেমি হান্ট, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসন। হুয়াওয়েকে প্রযুক্তি সরবরাহের অনুমতি দেয়ার বিরোধিতাকারী কনজারভেটিভ এমপি বব সিলি মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘রবার্ট স্ট্রেয়ারের মন্তব্য হচ্ছে সাধারণ জ্ঞান। বাস্তবিক অর্থে হুয়াওয়ে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হতে পারে না। চীনা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করতে এটি আইনগতভাবে বাধ্য। যদিও সরকারের অংশ নয়, তবে চীনা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।’ একই রকম মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। সোমবার তিনি হুয়াওয়ে সম্পর্কে তাঁর উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। হান্ট বলেন, এ নিয়ে উদ্বেগের কারণ আছে। কারণ ২০১৭ সালের চীনা আইন অনুযায়ী সকল চীনা কোম্পানিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে যেকোন ঘটনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে হবে। সোমবার ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, হুয়াওয়ে সম্পর্কে উদ্বেগের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হচ্ছে, যখন কোন বিদেশী বিনিয়োগের কারণে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়, তখন সরকার ঝুঁকির বিষয়টি আমলে নেয় এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়টি বিবেচনা করে।’-গার্ডিয়ান
×