ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিজের শেষ বিশ্বকাপে বাড়তি চাওয়া-পাওয়ার চেয়ে দলগত ;###;সাফল্য ও নিজে ভাল পারফর্ম করতে চান

সতীর্থদের কাছে ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ চাওয়া

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

সতীর্থদের কাছে ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ চাওয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০০৩ থেকে শুরু, এবার ২০১৯- সবমিলিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার কথা মাশরাফি বিন মর্তুজার। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে যা খুবই বিরল ঘটনা কোন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারে। কিন্তু ২০১১ বিশ্বকাপ ছিল বিভীষিকাময় একটি স্মৃতি। ইনজুরির কারণে ফিটনেস সমস্যায় দর্শক হয়ে ঘরের মাটিতে দলের বিশ্বকাপ দেখেছিলেন মাশরাফি। তবু এবার ক্যারিয়ারের ১৮তম বছরে চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন তিনি। ৩৫ বছর বয়সী ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ এটিই শেষ বিশ্বকাপ। তবে বিশেষ কোন চাওয়া-পাওয়া নেই এবারের টুর্নামেন্ট নিয়ে। বরং খেলোয়াড় হিসেবে পারফর্ম করতে চান এবং অধিনায়ক হিসেবে যে দায়িত্বগুলো আছে সেসব ঠিকঠাক পালনের দিকে মনোযোগ মাশরাফির। আর দীর্ঘ সময় বিশ্বকাপ চলাকালীন দলের সবাইকেও সবকিছু ভুলে শুধু বিশ্বকাপ নিয়ে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এ অধিনায়ক। ২০১৫ বিশ্বকাপটা বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে স্মরণীয়। ওই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা সাফল্য এনে দিয়েছিলেন মাশরাফি। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়ে ভারতের কাছে হেরে গেছে দল। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের মাটিতেই তিনি দলকে সেমিফাইনালে তুলেছিলেন নেতৃত্ব দিয়ে। মাশরাফির অধীনে দুইবার এশিয়া কাপ ফাইনালও খেলেছে দল। কিন্তু শুধু হারই সঙ্গী হয়েছে। এবার তেমন কোন পর্যায়ে (সেমিফাইনাল) উঠলে জেতার জন্য মানসিক দৃঢ়তা জরুরী। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আসলে এমন ম্যাচগুলো জেতা অভ্যাসের বিষয়। সর্বশেষ এশিয়া কাপে যদি আমরা ফাইনাল জিতে যেতাম তাহলে মানসিক চাপটা থাকত না। কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের এটা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে যে এটা আরেকটা ম্যাচ।’ অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশ দলকে অনেক সাফল্য পাইয়ে দিলেও মাশরাফি হাত শূন্যই থেকেছে দলীয় সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে। দলকে অন্যতম শক্তিশালী করে তুলেছেন ওয়ানডেতে। কিন্তু কোন বড় আসরের শিরোপা হাতে ওঠেনি। কিন্তু এই বিশ্বকাপেও ব্যক্তিগত কোন চাওয়া-পাওয়া নেই মাশরাফির, ‘আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। ভাল হলে সবাই খুশি হবে। বাড়তি চাপ আমি কখনও নিতে চাই না। আমি সব সময় ভাগ্যে বিশ্বাসী। পুরো দলের ভাগ্যে যেটা আছে সেটাই হবে। মেহনত করতে হবে। সেটা করার জন্য প্রস্তুত কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেরা সেরা দল অনেক সময় বিশ্বকাপ জিতেনি। সেরা দল আবার অনেক সময় সেমিফাইনালেও ওঠেনি। আমরা ভাল খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।’ আর এমনটা ভাবার কারণও জানালেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্বের সাবেক ক্রিকেটার, যারা টপ ক্রিকেটার ছিল বা যারা বিশ্লেষণ করে তাদের যদি আপনি প্রশ্ন করেন..আমরা কখনোই ফেবারিট না। আমরা যদি এখানে কিছু করতে পারি তাহলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের নিয়ে পরিবর্তন হবে আরও বেশি যেটা আগের থেকে অনেক হয়েছে। এটা অনেক বড় সুযোগ আমাদের জন্য।’ অতীতে বিভিন্ন বিশ্বকাপে দলের ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ২০১৫ বিশ্বকাপে কিছু বিষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য অধিনায়ক মাশরাফিকে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো অনেক ক্রিকেটারদের ওপরই প্রভাব ফেলে। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। আলাদা করে নিজেকে তৈরি করার কিছু নেই। আমার কাছে মনে হয় না আলাদা করে তৈরি হয়ে ওখানে কিছু করতে পারব। খেলোয়াড় হিসেবে আমাকে পারফর্ম করতে হবে। অবশ্যই অধিনায়কত্বটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার যে দায়িত্বটা আছে সেগুলো চেষ্টা করব পুরোপুরি ঠিক করার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ভাল কিংবা খারাপ ক্রিকেট খেলতে কখনও সাহায্য করবে না। আমার কাছে মনে হয় এটার দিকে নজর না রাখাই ভাল হবে। এটা আবার যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আমি আছি। কিন্তু এটা আমাকে প্রভাবিত করে না। আমি জানি সাকিবকেও করে না। অন্য কাউকে করতে পারে। যাকে করে সেটা তার বুঝতে হবে। এটার জন্য দলীয় নিয়ম জারি করার কিছু নেই। যেহেতু সমস্যা তৈরি করে এটার থেকে দূরে থাকতে পারলে ভাল। দুইটা মাস পূর্ণ মনোযোগ বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক থাকা ভাল হবে। আমাদের দল ও দেশের ক্রিকেটের জন্য ভাল হবে।’
×