ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রীয় শোক

প্রকাশিত: ১১:৪০, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রীয় শোক

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় রাষ্ট্রীয় শোকের কর্মসূচী। রবিবার এই সময়েই প্রথম বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে তিন মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সর্বস্তরের মানুষ মাথা নুইয়ে নীরবতা পালন করেন। সারাদেশে সব সরকারী, আধা-সরকারী দফতরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। এদিকে নীরবতা কর্মসূচী শেষ হওয়ার পরপরই কলম্বোর পুলিশ জানায়, আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২১ জনে দাঁড়িয়েছে। কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র রাবন গুসাসেকারা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানান, গত রবিবার ওই হামলায় আহত পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে মারা গেছেন। আত্মঘাতী বোমা হামলায় কলম্বোর সেন্ট এ্যান্থনি গির্জায় বহু মানুষ নিহত হন। মঙ্গলবার গির্জার কাছে কিছু মানুষ সমবেত হয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরবে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। এ সময় কিছু মানুষ অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। যখন তিন মিনিট নীরবতা পালন শেষ হয় তখন সবাই উচ্চস্বরে প্রার্থনা করেন। খবর এএফপি, বিবিসি ও ওয়েবসাইট। চ্যানেল নিউজ এশিয়ার খবরে বলা হয়, তিন মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে সকালে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের কার্যক্রম শুরু হয়। বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত নেগম্বোর সেন্ট সেবাস্তিয়ানের গির্জায় শেষকৃত্য শেষে নিহতদের কয়েকজনকে গণকবরে সমাহিত করা হয়। কলম্বোর একটি গির্জা ও তিনটি পাঁচ তারা হোটেল, নিকটবর্তী নেগম্বো শহরের একটি গির্জায় ও দেশের অন্য প্রান্তে বাত্তিকোলার একটি গির্জায় হামলাগুলো চালানো হয়। এর পাঁচ ঘণ্টা পর কলম্বোর দক্ষিণাংশের দেহিওয়ালায় জাতীয় চিড়িয়াখানার কাছে ছোট একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এতে দুইজন নিহত হন বলে জানায় বিবিসি। বিকেলে পুলিশের অভিযান চলাকালে কলম্বোর দেমাটাগোদা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তিন পুলিশ নিহত হন। প্রথম ছয়টি হামলায় কোথায় কতজন নিহত হয়েছেন কর্তৃপক্ষ তা প্রকাশ করেনি। অন্তত সাত আত্মঘাতী এসব হামলা চালিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। হতাহতের অধিকাংশই শ্রীলঙ্কান। তবে নিহতদের মধ্যে ৩৮ বিদেশী রয়েছেন বলে জানান কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে অন্তত আটজন ভারতীয়, আট ব্রিটিশ, তিন ডেনিশ, দুই তুর্কী, দুই অস্ট্রেলীয়, এক চীনা, এক বাংলাদেশী এবং যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ড ও পর্তুগালের নাগরিকরা রয়েছেন। এক দশক আগে বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগাররা উৎখাত হওয়ার পর এমন ভয়াবহ হামলা আর দেখা যায়নি শ্রীলঙ্কায়। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মধ্যরাত থেকে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে ভারত লাগোয়া দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। জরুরী অবস্থার বলে পুলিশ ও সামরিক বাহিনী আদালতের নির্দেশ ছাড়াই সন্দেহভাজনদের আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এর আগে গৃহযুদ্ধের সময় শেষ এ ক্ষমতা ব্যবহার করেছিল দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। বিস্ফোরণের পর সরকার ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। শ্রীলঙ্কার পুলিশ জানায়, ওই হামলায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও এদের অধিকাংশই শ্রীলঙ্কার নাগরিক এবং এদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এক সিরীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাকে (সিরীয়) গ্রেফতার করা হয়।
×