ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চার বছর পর ফিরে চমক মুস্তাফিজের

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৯ এপ্রিল ২০১৯

চার বছর পর ফিরে চমক মুস্তাফিজের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ চার বছর খেলেননি দেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল)। কিন্তু সোমবার অবশেষে মাঠে নামলেন মুস্তাফিজুর রহমান। আহামরি কোন দল নয়, এবার শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তাকে দেখা গেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। বল হাতে শুরু থেকেই তা-ব শুরু করেছিলেন এ বাঁহাতি পেসার। কিন্তু কাটার মাস্টারের ধ্বংসাত্মক রূপ থেকে গাজী গ্রুপ রক্ষা পেয়েছে বৈরী প্রকৃতির কারণে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে ২১.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৬ রান করায় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে মুস্তাফিজের শাইনপুকুরকে ২১ রানে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। মুস্তাফিজ ২৩ রানেই নেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজ সর্বশেষবার ডিপিএলে খেলেছিলেন ২০১৪ সালে। তবে এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) আর কাঁধের ইনজুরিতে দীর্ঘদিন বাইরে থেকে ডিপিএলে খেলা হয়নি ৪ বছর। সোমবার থেকে আবার ফিরেছেন তিনি। তার দল শাইনপুকুর আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১৭৭ রান তুলতে পেরেছিল। সাদমান ইসলাম অনিক সর্বোচ্চ ৬৯ বলে ৪০ রান করেন ২ চার, ১ ছয়ে। এছাড়া পেসার দেলোয়ার হোসেন ৫২ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় অপরাজিত ৪০ এবং সোহরাওয়ার্দি শুভ ৪২ বলে ২ চারে ৩০ রান করেন। মুস্তাফিজ ব্যাট হাতে নেমে ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। গাজী গ্রুপের হয়ে সঞ্জিত সাহা ১০ ওভারে ২১ রানে নেন ৪ উইকেট। এরপর ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মুস্তাফিজের গতি, কাটার আর সুইংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে গাজী গ্রুপ। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ওয়ালিউল করিমকে (০) এলবিডব্লিউ করেন। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস এসে একটি বাউন্ডারি হাঁকালে শেষ বলে তাকেও শিকার করেন মুস্তাফিজ। ত্রাস হয়ে ওঠা এ কাটার মাস্টার ইনিংসের নবম ওভারে আবার আঘাত হানেন। এবার আরেক ওপেনার মেহেদী হাসানকে (১৩) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন দারুণ কাটারে। ভয়ানক হয়ে ওঠা মুস্তাফিজ হয়তো এত স্বল্প সংগ্রহ নিয়েও গাজী গ্রুপকে বিপদেই ফেলতেন। কিন্তু বৃষ্টি তাদের বাঁচিয়ে দেয়। ২১.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৬ রান তোলার পর বৃষ্টি শুরু হয়। পরে আর খেলা শুরু হয়নি। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইনে ২১ রানে জিতে যায় গাজী গ্রুপ। বৃষ্টির আগে মুস্তাফিজ ৬.৫ ওভার বোলিং করে একটি মেডেনসহ ২৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজ ঝড়ের মধ্যেই শামসুর রহমান ৬৫ বলে ৯ চারে ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এবার ডিপিএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই চমকে দিয়েছেন মুস্তাফিজ। শুরুটা এভাবে উজ্জ্বল করে তোলার রীতিটা তার আগে থেকেই আছে। ডিপিএল দিয়েই তিনি সেটা শুরু করেছিলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট খেলতে নেমেই পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। ২০১৪ সালের ২৮ নবেম্বরে ফতুল্লায় আবাহনীর হয়ে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ৩২ রানে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের অভিষেকেই তিনি ম্যাচের নায়ক, যেমনটা টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০ অভিষেকে হয়েছেন। যে প্রিমিয়ার লীগে তার দুর্দান্ত শুরু, সেটা আর খেলা হয়নি গত চার বছর। লম্বা বিরতিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ফিরলেন মুস্তাফিজ। ২০১৬ সালের ডিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে এ কাটার মাস্টারকে নিয়েছিল আরেক ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কিন্তু সেবার আইপিএল আর চোটে পড়ায় খেলতে পারেননি। আইপিএল ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকায় খেলা হয়নি ২০১৭ প্রিমিয়ার লীগও। গতবারও তাই। এবার আইপিএলে নেই তিনি। কিন্তু বিসিবির নির্দেশনায় আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য অপরিহার্য ক্রিকেটাররা বিশ্রাম পাচ্ছেন বলে পুরো ডিপিএল খেলতে পারছেন না এবারও। তা জেনেও প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে মুস্তাফিজকে নিয়েছে শাইনপুকুর। তারা যে ভুল করেনি সেই প্রমাণ তো প্রথম দিনেই দিলেন এ বাঁহাতি পেসার। স্কোর ॥ শাইনপুকুর ইনিংসÑ ১৭৭/৯; ৪৮ ওভার (দেলোয়ার ৪০*, সাদমান ৪০, সোহরাওয়ার্দি ৩০; সঞ্জিত ৪/২৫, নাসুম ২/৩৩)। গাজী গ্রুপ ইনিংসÑ ১০৬/৪; ২১.৫ ওভার (শামসুর ৫৩*, ফল ॥ বৃষ্টি আইনে গাজী গ্রুপ ২১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সঞ্জিত সাহা (গাজী গ্রুপ)।
×