ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানী সাবমেরিন ‘মনগ্রো’র বাঙালী নাবিকদের বিদ্রোহ ॥ ৫ এপ্রিল, ১৯৭১

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ৫ এপ্রিল ২০১৯

পাকিস্তানী সাবমেরিন ‘মনগ্রো’র বাঙালী নাবিকদের বিদ্রোহ ॥ ৫ এপ্রিল, ১৯৭১

১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল দিনটি ছিল সোমবার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যম গৌরবময় অবদান রেখেছেন, গণমাধ্যম কর্মীরাও সর্বশক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধকে সংহত ও বিস্তৃত করার কাজে। একাত্তরের এদিনে ঢাকায় কারফিউর মেয়াদ ভোর পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়। এ সময় দলে দলে লোক ঢাকা ত্যাগ করে। ঢাকায় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, ‘প্রদেশের পরিস্থিতি সশস্ত্র বাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অবরুদ্ধ ঢাকায় নুরুল আমীনের নেতৃত্বে ১২ জন জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর প্রেস রিলিজ অনুসারে ওই দলে ছিলেন ফরিদ আহমদ, গোলাম আযম, খাজা খয়েরউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, নুরুজ্জামান প্রমুখ। পাকিস্তান বিরোধীদের বিরুদ্ধেও যথোচিত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ’করাচীতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এক বিবৃতিতে জানান যে, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান গঠন করতে চেয়েছিলেন। সেজন্যেই তিনি জাতীয় পরিষদের দুটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক কোম্পানি যশোর থেকে কুষ্টিয়ার পথে বিশাখালীতে মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশে ট্রেপ বা ফাঁদের গর্তে আটকে যায়। সামরিক বহরটিতে ৯টি ট্রাক ২টি জীপ ছিল। সৈন্যদের সবাই স্থানীয় কৃষকদের আক্রমণে প্রাণ হারায়। বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র মুক্তিবাহিনীর করায়ত্ত হয়। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত তাঁর দুই কোম্পানিসহ শেরপুর-শাদীপুর থেকে প্রধান সড়ক হয়ে এবং ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলের নিয়মিত সৈনিকরা শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া-করিমগঞ্জ এবং চরখানাই-এর পথ ধরে সিলেটের দিকে তৎপরতা শুরু করে। সকাল ১০টা নাগাদ ঠাকুরগাঁও শহর ছিল প্রায় ফাঁকা। রাতারাতি অধিকাংশ শহরবাসীই তাদের আত্মীয়-স্বজনদের গ্রামীণ এলাকায় সরিয়ে দিয়েছে বলে জানা যায়। ওদিকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বেশকিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে যা ভীতিপ্রদ। ডাকবাংলো থেকে নির্দেশ পেয়ে মাইকে ঘোষণা করা হয় যে, যাদের কাছে রাইফেল আছে তারা যেন তা ডাকবাংলোতে জমা দিয়ে এন্ট্রি করে নেন এবং যুদ্ধে যোগদান করেন। পাকবাহিনী যশোর সেনানিবাস থেকে বিশাখালীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর নির্ভীক যোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে পাকসেনাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শেরপুর-শাদীপুর এলাকায় পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। উভয় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে এবং পাকবাহিনীর কাছ থেকে এলাকা দুটি মুক্ত করে। এ যুদ্ধে তিন প্লাটুন পাকসৈন্যের অধিকাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। ইলাশপুর গ্রামের জনৈক দালাল ছাওলা মিয়ার ধানের গোলায় একজন পাকসেনা লুকিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাকে খুঁজে বের করে এবং হত্যা করে। এ যুদ্ধে শহীদ হন তিনজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আহত হন অসংখ্য। সিলেটের সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে এক খ- যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাকবাহিনী পরাজিত হয় এবং তারা পালিয়ে গিয়ে শালুটিকর বিমান ঘাঁটিতে একত্র হয়। সুরমা নদীর সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তর সিলেট শহর শত্রুমুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। রাত ৮টায় মুক্তিযোদ্ধারা যাত্রাবাড়ী রোডে পাকসেনা বোঝাই একটি গাড়ি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা এবং ডেমরা থেকে পাকসেনাদের বহর ঘটনাস্থলের দিকে অগ্রসর হয় এবং গোলাবর্ষণ শুরু করে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তাঁরা আক্রমণ চালিয়েই গ্রামের দিকে চলে যায়। দিনাজপুরের ৮ নং উইং সুবেদার আবদুল মজিদের নেতৃত্বে এক কোম্পানি ইআর, ৯নং উইং-এর আরেক প্লাটুন ইপিআরসহ সৈয়দপুর-নীলফামারী সদর রাস্তায় সৈয়দপুরের অদূরে দারোয়ানির কাছে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তোলে। পাকবাহিনী ১১টি গাড়ি নিয়ে ভূষিরবন্দর অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির সম্মুখীন হয়। এতে পাকসেনারা আর সামনে অগ্রসর না হয়ে সৈয়দপুরে পিছু হটে। দশ মাইল এলাকায় পাকিস্তানীদের সাঁজোয়া এবং গোলন্দাজ বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এত অনেক বাঙালী ইপিআর শাহাদাৎবরণ করেন এবং অনেকে আহত হন। তউলন (ফ্রান্স)-এ পাকিস্তানী সাবমেরিন ‘মনগ্রো’র বাঙালী নাবিকরা ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে। ‘মনগ্রো’-এর ৪৫ জন নাবিকের মধ্যে ১৩ জন বাঙালী নাবিক পাকিস্তান নৌবাহিনী ত্যাগ করে গোপনে সাবমেরিন থেকে সরে পড়ে। পরে তারা সুইজারল্যান্ডের দিকে যাত্রা করে। পাহাড়তলী রেলওয়ে এলাকাতে পাকসেনারা রেলের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল চৌধুরী, এ্যাকাউন্টস অফিসার আবদুল হামিদ, এল আর খান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ মোট ১১ জন বাঙালীকে জবাই করে হত্যা করে। ক্যাপ্টেন আফতাব ইপিআর বাহিনীর হাবিলদার কালামের প্লাটুন নিয়ে জোরারগঞ্জে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করেন। নেতৃত্ব দেন ধুমঘাটের রেলওয়ে ব্রিজ উড়িয়ে দেবার অপারেশনে। এদিন প্রচ- বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধুমঘাটের রেলওয়ে ব্রিজটি উড়িয়ে দেন। এদিন বিশ্বখ্যাত আয়ুর্বেদীয় প্রতিষ্ঠান ‘সাধনা ঔষধালয়ের’ প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ যোগেশ চন্দ্র ঘোষকে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। বৃটেনে হাউস অব কমন্স সভার আলোচনায় ডগলাস হিউম ও অন্য সদস্যরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক শক্তি প্রয়োগের তীব্র সমালোচনা করেন। হাউস অব কমন্স সভার সদস্যরা পাকিস্তান সরকারকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মীমাংসায় রাজনৈতিক সমঝোতাকে বেছে নিতে অনুরোধ করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও মানবেতর অবস্থার সংবাদ পেয়ে ব্রিটিশ কিছু এমপি নিজেদের উদ্যোগে পশ্চিম বাংলায় শরণার্থী শিবির ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতি সহমর্মী ও সমব্যথী ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন রাসেল জন স্টোনহাউস। তিনি বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দেন। হাউস অব কমন্স সভায় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করবেই। স্বাধীনতা লাভ করতে তাদের অনেক মাস লাগতে পারে অথবা কয়েক বছর লাগতে পারে, কিন্তু আমার কাছে এটা অসম্ভব মনে হয় যে এক হাজার মাইল দূরের ৭৫ মিলিয়ন মানুষের একটি দেশে পাকিস্তান শাসন ধরে রাখতে পারবে, বিশেষ করে সেখানকার মানুষ যখন তা চাইছে না।’ এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও স্টোনহাউস বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবিরে দুর্গত বাঙালীদের ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করেছিল। কুড়িগ্রাম চিলড্রেন পার্কের এক জনসভায় মুক্তিযোদ্ধারা জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়। ওইদিনই হেডকোয়ার্টার নাগেশ্বরীতে স্থানান্তর করা হয়। শহরের ভীতসন্ত্রস্ত জনগণ ৫ ও ৬ এপ্রিলের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বিভিন্ন দিকে চলে যায়। সে সময় শহর এক প্রকার জনশূন্য হয়ে পড়ে। সায়মন ড্রিংয়ের ‘ট্যাংকস ক্রাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার ফলে সারাবিশ্ব বিশদভাবে জানতে পারে বাংলাদেশে কী ঘটছে। এইদিন নিউজউইকে প্রকাশিত হয় দীর্ঘ এক প্রতিবেদন যার শিরোনাম ছিল ‘পাকিস্তান প্লাঞ্জেস ইনটু সিভিল ওয়ার’। মার্কিন সাপ্তাহিক পত্রিকা নিউজ উইকে প্রকাশিত একটি সংবাদে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। দুই পৃষ্ঠাব্যাপী রিপোর্টে বঙ্গবন্ধুর মার্চের ৭ তারিখে প্রদত্ত বক্তৃতার উদ্ধৃতি দেয়া হয়। এই রিপোর্টে দৃঢ়চেতা ও সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবন ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তাঁকে ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ বলে উল্লেখ করা হয়। ‘শেখ মুজিব ও তার দল পাকিস্তানের শত্রু, বিনা শাস্তিতে এদের রেহাই দেয়া হবে না’- প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। শেষ শত্রু সৈন্য নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যে কোন মূল্যে শত্রুদের মোকাবেলা কর এবং পশ্চিম পাকিস্তানীদের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনের কবল থেকে দেশকে বাঁচাও’- শেখ মুজিবুর রহমান। একাত্তরের এইদিনে টাইম ম্যাগাজিনের রিপোর্টে বলা হয়- গত সপ্তাহ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল পাকিস্তানের রাজনীতিতে সৃষ্ট অচলাবস্থা বোধহয় কেটে যাবে শান্তিপূর্ণভাবেই। কিন্তু তার পর এক নিমেষে পালটে গেল সবকিছুই। তিনটি ঘটনা পুরো দেশকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। চট্টগ্রামে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যখন জাহাজ থেকে রসদ ও অস্ত্র খালাশ করছিল, বাঙালী জনতা তাদের ঘিরে ফেলে। সৈন্যরা গুলি চালায়, এতে ৩৫ জন বাঙালী মারা যায়। এর প্রতিবাদে বাঙালীদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘট ডাকেন। এর অব্যবহিত পরেই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগকে ‘পাকিস্তানের শত্রু’ বলে ঘোষণা দেন। ইয়াহিয়া খান সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন তাদের ‘দায়িত্ব পালন’ করতে। ঢাকার সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনীর ট্যাংক আর ট্রাক ট্রাক সশস্ত্র সেনা বেয়নেট উদ্যত রাইফেল হাতে বেরিয়ে আসে। ‘আল্লাহু আকবর’ আর ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে এসব পাকিস্তানী সেনা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালীদের ওপর। টাইম পত্রিকার সাংবাদিক ড্যান কোগিন এ সময় ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ‘অল্প পরেই ঢাকার প্রায় ৬/৭টি জায়গায় হাউইটজার কামান, ট্যাংক, আর রকেটের গোলা নিক্ষেপ শুরু হয়। থেকে থেকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ আর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের শব্দ শোনা যেতে থাকে। শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়, ধোঁয়ার কুন্ডলী ছেয়ে ফেলে পুরো শহরকে। রাতের বেলায় অনেক জায়গাতেই বাঙালীদের স্বাধীনতার স্লোগান জয় বাংলা শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু পরক্ষণেই সেনাদের মেশিনগানের ব্রাশ ফায়ার স্তব্ধ করে দিচ্ছিল সেই স্লোগানকে।’ এর পর পাকিস্তান সরকার ড্যান কোগিনসহ অন্যান্য পশ্চিমা সাংবাদিককে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করে। সেনাবাহিনী ঢাকায় ২৪ ঘণ্টার কার্ফিউ ঘোষণা করে। দেখামাত্র সবাইকে গুলি করে হত্যা করার আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু (২৫ মার্চের) সেই রাতেই চালু হয়ে যায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। গোপন সেই বেতার কেন্দ্র থেকে মুজিবের বক্তৃতা প্রচারিত হয়, যাতে মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। কিন্তু মুজিবের এই কণ্ঠকে সেনাবাহিনীর আক্রমণ স্তব্ধ করে দেয়। রাত দেড়টার দিকে সেনাবাহিনী মুজিবকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পাকবাহিনী একবারে সব জেলায় আক্রমণ শুরু করতে পারেনি তাই ঢাকার বাইরের অনেক জেলা একাত্তরের মার্চের পরও কয়েক মাস মুক্ত ছিল? এসব মুক্ত জেলা এবং মুজিবনগর থেকে অনেক পত্র-পত্রিকা বেরিয়েছে। দেশের ভেতরে ও বাইরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে এ পত্রিকাগুলো অসামান্য অবদান রেখেছে। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×